TechJano

অ্যামোলেড ডিসপ্লের প্রবৃদ্ধির বছর ২০২০ হবে

আসন্ন ২০২০ সালে অ্যামোলেড ডিসপ্লের বাজার ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে। এক গবেষণা বলছে, আগামী বছর এ প্রযুক্তির ডিসপ্লে প্যানেলবিশিষ্ট স্মার্টফোন বিক্রি হবে ৬০ কোটি ইউনিট। সে হিসেবে বছরভিত্তিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪৬ শতাংশ। মূলত অপো, শাওমির মতো চীনা ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যম সারির ডিভাইসগুলোতে অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার বৃদ্ধি এ প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চ।

কাউন্টার পয়েন্টের ‘ডিসপ্লে মার্কেট আউটলুক’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় ডিসপ্লে কোয়ালিটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চলতি বছর স্মার্টফোনের ডিসপ্লে প্রযুক্তির দিকে ক্রেতাদের বিশেষ নজর ছিল। নতুন ক্রেতা অথবা পুরনোটি বাদ দিয়ে নতুন স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে বর্তমানে ডিসপ্লে প্রযুক্তি বড় বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, হুয়াওয়ে, ভিভো, অপো, রিয়ালমি ও শাওমির মতো চীনা ব্র্যান্ডগুলো বাজার ধরতে পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে মরিয়া। এ লক্ষ্যেই এসব কোম্পানি তাদের মধ্যম সারির ডিভাইসগুলোতে আগামী বছর অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করবে। ফলে অ্যামোলেড প্যানেলের আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটবে।

কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের সহযোগী পরিচালক তরুণ পাঠক বলেন, উল্লেখযোগ্য কিছু কোম্পানি তাদের ডিভাইসের ডিসপ্লেতে নতুন উদ্ভাবন যুক্ত করার চেষ্টা করছে। স্ক্রিন টু বডি রেশিও কমানো, রিফ্রেশ রেট বাড়ানো, ডিসপ্লের আকৃতি পরিবর্তন যেমন, ভাঁজযোগ্য অথবা আরো উন্নত ও আনকোরা উদ্ভাবন যেমন, ছোট নচ, পাঞ্চহোল ক্যামেরা, পপ আপ ক্যামেরা, ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, ইমেজ সেন্সর—এসব যুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, এসব উদ্ভাবনের প্রতি আগ্রহের কারণে অ্যামোলেড ডিসপ্লের ব্যবহার বাড়বে। কারণ এসব কাঙ্ক্ষিত প্রযুক্তির জন্য অ্যামোলেড ডিসপ্লে সবচেয়ে উপযুক্ত। তাছাড়া এ ডিসপ্লের ইমেজ কোয়ালিটি, কম বিদ্যুৎ খরচ এবং নমনীয়তাসহ আরো বেশকিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান অন্যান্য ডিসপ্লে প্রযুক্তিতে নেই। এ কারণেই আমাদের বিশ্বাস, চীনা ব্র্যান্ডগুলোতে অ্যামোলেডভিত্তিক স্মার্টফোনের চাহিদা অত্যন্ত বেশি থাকবে। বিশেষ করে তাদের মধ্যম সারির ডিভাইসে এটি অনন্য ফিচার হিসেবে যুক্ত হতে পারে।

তবে স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর অ্যামোলেড ডিসপ্লের প্রতি আকর্ষণ থাকলেও বিদ্যমান এলসিডি ও ওএলইডি প্রযুক্তি থেকে অনেকের স্থানান্তর প্রক্রিয়াটি একটু সময়সাপেক্ষ হতে পারে।

ওএলইডি প্যানেলের বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশ স্যামসাংয়ের দখলে। কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের জ্যেষ্ঠ গবেষণা বিশ্লেষক জিন পার্ক বলেন, অ্যামোলেড প্যানেল উৎপাদন ও বিক্রির দিক থেকে স্যামসাং এখনো শীর্ষে। চলতি বছর অ্যামোলেডভিত্তিক স্মার্টফোনের ৪৫ শতাংশই বিক্রি করেছে স্যামসাং। এর পরই আছে অ্যাপল, ১৬ শতাংশ। এক্ষেত্রে অপোর অংশীদারিত্ব ১১ শতাংশ। তাছাড়া শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো চলতি বছর উন্মোচিত সব ফ্ল্যাগশিপেই অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করেছে।

তবে হুয়াওয়ে, অপো, ভিভো ও শাওমি তাদের মধ্যম সারির (৩০০-৫০০ ডলার মূল্যের) ডিভাইসগুলোতে ওএলইডি প্যানেল ব্যবহার করছে। এসব কোম্পানি পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে আগামী বছর অ্যামোলেড ডিসপ্লে বিশিষ্ট ডিভাইস আনবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২০ সালে তারা ২০০ ডলার দামের ডিভাইসেও এ প্রযুক্তির ডিসপ্লে দেবে। অ্যাপলও এখনো ওএলইডি ব্যবহার করে। ফলে আগামী বছর তারাও নতুন প্রযুক্তিতে যাবে।

তবে বিওই, তিয়ানমা, সিএসওটির মতো ব্র্যান্ডগুলো এখনো এলসিডির ওপর নির্ভরশীল এবং তাদের দ্রুত ব্যাপকভিত্তিক অ্যামোলেড প্রযুক্তি গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

অন্যান্য ডিভাইসের মধ্যে পরিধানযোগ্য ডিভাইসেও অ্যামোলেড প্যানেল ব্যবহার বাড়বে, তবে বিদ্যমান ওএলইডি ডিসপ্লে থেকে এখনই সরে যাওয়া কঠিন হবে টিভি কোম্পানিগুলোর।

২০০ ডলারের মধ্যে দাম এমন স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো এলসিডি প্যানেল ব্যবহার অব্যাহত রাখবে। ফলে ২০২০ সাল অ্যামোলেড ডিসপ্লের জন্য প্রবৃদ্ধির বছর হলেও প্যানেল মার্কেটে অন্যদের অবস্থানও উল্লেখযোগ্যভাবেই থাকবে।

Exit mobile version