গতকাল থেকে দেশে চালু হয়েছে নম্বর পরিবর্তন না করে অন্য অপারেটরের সেবা নেওয়ার সুযোগ। এ সেবাটির নাম মোবাইল নাম্বার পোর্টেবেলিটি বা এমএনপি সেবার কার্যক্রম। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৭০টির মতো দেশে এমএনপি সেবা চালু রয়েছে।
এমএনপি (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি) সেবায় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা নিজের পছন্দ মতো অপারেটর পাল্টে ফেলতে পারবেন। গ্রাহকের কাছে যে অপারেটরের সেবা, নেটওয়ার্কের মান, ভয়েস কল ও ইন্টারনেট সেবার মান পছন্দ হবে তিনি চাইলে বিনা দ্বিধায় সেই সংযোগ নিতে পারবেন। এজন্য নিজের মোবাইল ফোন নম্বর বদলাতে হবে না।
একজন গ্রাহক যদি এমএনপি সেবা নিতে চান তাহলে তাকে প্রথমে যেতে হবে যে অপারেটরের সিম ব্যবহার করতে চান সেই অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে। ধরা যাক, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী গ্রামীণের সিম ব্যবহার করেন। তিনি অপারেটর বদলে যদি বাংলালিংক নিতে চান, তাহলে তাকে বাংলালিংকের কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে।
কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে নতুন সিম তুলতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে ৫ মিনিট। এরইমধ্যে কাস্টমার কেয়ার কর্মীরা গ্রাহককে জানাবেন তিনি নতুন সিম পাবেন কিনা। কারণ হিসেবে জানানো হয়, প্রথমেই গ্রাহকের বায়োমেট্রিক ডাটাবেজ (আঙুলের ছাপ) মিলিয়ে দেখা হবে। সেখানে কোনও গরমিল থাকলে গ্রাহককে জানানো হবে।
এছাড়া যদি কোনও পোস্টপেইড গ্রাহকের বিল বকেয়া থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট অপারেটর সবুজ সংকেত পাঠাবে না কাস্টমার কেয়ারে। ফলে কোনও বিল বকেয়া থাকলে তা আগে পরিশোধ করে যেতে হবে। পোস্টপেইডেই যদি আগের কোনও ডিপোজিট থাকে তাহলে গ্রাহক ওই ডিপোজিট ফেরত পাবেন।
তবে প্রি-পেইড গ্রাহকের সিমে যদি কোনও ব্যালেন্স (টাকা) থাকে বা ইন্টারনেট প্যাকেজ থাকে তাহলে সেই টাকা বা ইন্টারনেটের কী হবে সেই সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। ইনফোজিলিয়নের প্রধান নির্বাহী বললেন, এ কারণে গ্রাহক চাইলে পুরো ব্যালেন্স শেষ করে নতুন সিম নিতে পারেন।
তিনি আরও জানান, এই সেবা নিতে হলে গ্রাহককে ৩০ টাকা ফি দিয়ে (প্রতিবার) আবেদন করতে হবে। গ্রাহককে নতুন একটি সিম দেওয়া হবে। গ্রাহক সঙ্গে সঙ্গেই ওই সিম ব্যবহার করতে পারবেন না। সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নতুন সিম চালু হয়ে যাবে আর আগের সিমটি বন্ধ হয়ে যাবে।
গ্রাহক যখন দেখবেন তার মোবাইলে ‘নো সার্ভিস’ দেখাচ্ছে তখন তিনি মোবাইল সেট থেকে পুরনো সিম খুলে নতুন সিম সেট করবেন। নতুন সিম মোবাইলে সক্রিয় হলে নতুন যে সিম (ভিন্ন অপারেটরের) নেওয়া হয়েছে সেই অপারেটরের নাম প্রদর্শন করবে। এমএনপি সেবা চালু করলে তিন মাসের (৯০ দিন) আগে অন্য কোনও অপারেটরে বা আগের (পুরনো) অপারেটরে ফেরত যাওয়া যাবে না।
৯০ দিন পরে গ্রাহক অন্য অপারেটরে যেতে চাইলে সে অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নতুন সিম নিতে পারবেন। নতুন সিম নেওয়ার পর গ্রাহককে ব্যালেন্স রিচার্জ নতুন সিমেই করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মের মধ্যে এই সেবা চালুর কথা ছিল। কিছু কারিগরি সমস্যা থাকায় তা চালু করা যায়নি। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এমএনপি সেবা চালুর তাগিদ দিয়েছিলেন।