ইনফিনিক্স নোট ১২ প্রো কি সত্যিই ‘স্পিড মাস্টার’? চলুন খুঁজে দেখি উত্তর। আমাদের নিত্যদিনের কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে নানাভাবে সাহায্য করে যাচ্ছে আমাদের প্রিয় স্মার্টফোনগুলো। কেনই বা করবে না, নইলে যে সেগুলোকে আর স্মার্ট বলা যায় না।
তবে সব স্মার্টফোন কি সত্যিকার অর্থেই স্মার্ট? উত্তর আমাদের সবারই জানা। অন্তত বাজেটের মধ্যে সত্যিকার স্মার্টফোন পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। তাই নতুন বছরের শুরুতেই স্মার্টফোন মানুষদের জন্য ইনফিনিক্স দিয়েছে এক সুখবর! বাজারে পাওয়া যাচ্ছে তাদের নতুন নোট ১২ প্রো।
মাত্র ২৭ হাজার টাকার মধ্যে এই ব্র্যান্ডটি যা যা দিচ্ছে, তা সত্যিই অভাবনীয়। বলা হচ্ছে, এই বাজেটে এটি অনন্য একটি ‘স্মার্টফোন’। তাছাড়া নোট ১২ প্রো এর ডিজাইন, ক্যামেরা ও অন্যান্য ফিচারগুলোও তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। তাহলে চলুন দেখে নিই, কী আছে এর মধ্যে!
স্পিড মাস্টার খ্যাত নোট ১২ প্রো বাজারে এসেছে গত ১২ জানুয়ারি। ইনফিনিক্সের নতুন এই মোবাইল হ্যান্ডসেটটি বেশ সাড়া ফেলেছে ইতোমধ্যে। টেক রিভিউয়ার আর ইউটিউবাররাও ফোনটি নিয়ে সার্বিকভাবে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
ইতিবাচক অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ব্যবহারকারীরাও। বেশ হালকা এই ফোনটিতে আছে শক্তিশালী প্রসেসর, বড় ও সুন্দর ডিসপ্লে এবং দারুণ ক্যামেরা। সামনের ও পেছনের ক্যামেরায় অনিন্দ্য সব ছবি তুলতে পারবেন ফোনটির ব্যবহারকারীরা। আর গেমারদের জন্যও আছে চমক! প্রিমিয়াম এই ফোনটি মিলবে মাত্র ২৬,৪৯৯ টাকায়।
টেক রিভিউয়ার চ্যানেল ‘টিটিপি’ জানিয়েছে, পারফরম্যান্সে সেরা এই ফোন। হেভি-ইউজার বা গেমারদের সব চাহিদা খুব সহজেই পূরণ করবে নোট ১২ প্রো। তাদের মতে এই ফোনটি ‘পাওয়ার মনস্টার’।
অন্যদিকে, ফোনটির ক্যামেরা নিয়ে কথা বলেছে টেক রিভিউয়ার চ্যানেল ‘প্রযুক্তি’। তারা বলেছে, ফোনটির ক্যামেরায় অসাধারণ সব ছবি তোলা যাচ্ছে। ছবির কালার ব্যালেন্স এবং ডিটেইলেরও প্রশংসা করেছে চ্যানেলটি।
এখন আসল প্রশ্ন, এই টাকায় নোট ১২ প্রো-তে কী কী দিচ্ছে ইনফিনিক্স?
ছোট্ট করে বললে, এই ফোনে আছে ২৫৬ জিবি রম ও ৮ জিবি র্যাম। ফোনে র্যাম বাড়ানো যায় ১৩ জিবি পর্যন্ত। প্রসেসর হিসেবে আছে তাইওয়ানের টিএসএমসির ৬ ন্যানোমিটারের হেলিও জি-৯৯ মনস্টার ইঞ্জিন। আর ১০৮ মেগাপিক্সেলের ব্যাক ক্যামেরাসহ ১৬ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। আর ডিসপ্লে? হ্যাঁ, ডিসপ্লে অ্যামোলেড।
স্মার্টফোনের কথা ওঠলে সাধারণত হেভি ইউজার ও গেমারদের প্রথম প্রশ্ন হয়ে থাকে প্রসেসরের গতি আর জিপিইউ নিয়ে।
নোট ১২ প্রো হেভি ইউজার আর গেমারদের ভালোভাবেই সন্তষ্ট করতে পারবে। ফোনটির হেলিও জি-৯৯ প্রসেসরের গতি ২.২ গিগা হার্টজ আর জিপিইউ আর্ম মেইল জি৫৭ ক্লাসের। তাই গেমিং বা ভিডিও এডিটিংয়ে গ্রাফিক্স নিয়ে কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না।
তাছাড়া, ১২ ন্যানোমিটারের জি-৯৬ প্রসেসর থেকে ৬ ন্যানোমিটারের জি-৯৯ প্রসেসর প্রায় ১০ শতাংশ কম ব্যাটারি খরচ করে।
নোট ১২ প্রো- এর শক্তিশালী ১০৮ মেগা পিক্সেল ব্যাক ক্যামেরা এবং ১৬ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরায় উজ্জ্বল, পরিষ্কার আর সুন্দর ছবি তো উঠবেই, সাথে থাকছে ১০ গুণ জুম করার সুবিধা।
ফোনটিতে প্রফেশনাল নাইট সিন ফটোগ্রাফি মোড থাকায় রাতের বেলাতেও ছবি ওঠানো যাবে কোনো অসুবিধা ছাড়াই।
মাল্টি টাস্কিংয়ে স্বস্তি আনতে নোট ১২ প্রো-তে আছে অনন্য ব্যবস্থা। ২৫৬ জিবি রম বাড়ানো যায় ২ টিবি পর্যন্ত। আর মেমরি ফিউশনের মাধ্যমে ৮ জিবি র্যাম বাড়ানো যাবে ১৩ জিবি পর্যন্ত।
ফলে ফোন চলবে স্বচ্ছন্দে আর ব্যাটারিও খরচ হবে কম। তাছাড়া, মেমোরি ফিউশন প্রযুক্তি থাকার কারণে, কোনো অ্যাপ ওপেন হওয়ার সময় নেমে আসে ৮০২ মাইক্রো সেকেন্ড থেকে ৩০৭ মাইক্রো সেকেন্ডে। পাশাপাশি, ব্যাকগ্রাউন্ডে একসাথে ২০টি অ্যাপ চলবে কোনো সমস্যা ছাড়াই।
ফোনটির ৬.৭ ইঞ্চি অ্যামোলেড ফুল এইচডি+ ডিসপ্লেতে রিফ্রেশ রেট আছে ৬০ হার্টজ পর্যন্ত। ৩৯৩ পিপিআই ডেনসিটির এই ডিসপ্লের স্ক্রিন টু বডি রেশিও ৯২%।
৭.৮ মিলি মিটারের আল্ট্রা স্লিম এই ফোনটিতে আছে বিশাল ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি। সাথে আছে সুপার ফাস্ট ৩৩ ওয়াটের সুপারচার্জ সক্ষমতা। ফোনটিতে টাইপ-সি চার্জার দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তার জন্য এই ফোনে আছে সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট। হাই কোয়ালিটির সাউন্ড দিতে ব্যবহার করা হয়েছে দুটো ডিটিএস স্পিকার। তাই ফোনটি ব্যবহার করা হবে যেমন নির্ঝঞ্ঝাট তেমনি আনন্দদায়ক।
আর তরুণ প্রজন্মের গেমারদের জন্য ফোনটি হবে নতুন ও অনন্য অভিজ্ঞতা। নোট ১২ প্রো পাওয়া যাচ্ছে ভলকানিক গ্রে, টাস্ক্যানি ব্লু এবং আলপাইন হোয়াইট এই তিনটি ভিন্ন ভিন্ন রঙে।
ইনফিনিক্সের নোট ১২ সিরিজের আরেকটি ফোনের দুটি ভার্সন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ক্যামেরা আর স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ছাড়া নোট ১২ ২০২৩ এর বাকি সবকিছু নোট ১২ প্রো-এর মতোই। দামও আরেকটু কম। এই ফোনের ১২৮ জিবি ভার্সনের দাম ১৯,৯৯৯ টাকা; আর ২৫৬ জিবি ভার্সনের দাম পড়বে ২২,৯৯৯ টাকা।
এখন, নোট ১২ প্রো কেনার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ক্রেতার ওপর বর্তায়। আমাদের চাহিদা মেটানোর মতো যোগ্যতা কোনো ফোনের থাকলে সেটিই আমরা কিনব।
তুলনামূলক পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রেগুলার ইউজার, হেভি ইউজার ও গেমারদের সব চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা এই ফোনের আছে। আর এই দামের মধ্যে যা যা দেওয়া যায়, তার সবই দিচ্ছে ইনফিনিক্স। পাশাপাশি, যেখানে নোট ১২ প্রো যথেষ্ট শক্তিশালী, সুন্দর আর টেকসই, তখন এই ফোনটি অবশ্যই আমাদের অন্যতম পছন্দ হতে পারে।
ইনফিনিক্স:
ইনফিনিক্স মোবিলিটি একটি উদীয়মান প্রযুক্তি ব্র্যান্ড। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইনফিনিক্স ব্র্যান্ডের আওতায় বিশ্বজুড়ে অনেক ধরনের ডিভাইস ডিজাইন, প্রস্তুত ও বাজারজাত করে থাকে কোম্পানিটি। আজকের তরুণদের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মোবাইল ডিভাইস প্রস্তুত করা তাদের মূল লক্ষ্য। এই ফোনগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য চমৎকার স্টাইল, পাওয়ার ও পারফরম্যান্স। ইনফিনিক্সের ট্রেন্ডি ডিভাইসগুলো ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়।