TechJano

কুমিল্লাতে অনুষ্ঠিত হল “এসো নিজ হাতে রোবট বানাই” বিষয়ক কর্মশালা

বর্তমান সভ্যতার উন্নতির পিছনে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার কম্পিউটারের অবদান কোন
অংশেই কম নয়। বরং বলা যায় সভ্যতার উন্নতিকে কম্পিউটার আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।
অ্যাবাকাস নামক একটি প্রাচীন গণনাযন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা
হয়।

পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার গুলো একই সময়ে বহুবিধ কাজ অতিদ্রুততার সাথে সম্পন্ন করতে
পারে।কিন্তু একই সময়ে বিভিন্ন বিষয় চিন্তা করতে পারে না।আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে কম্পিউটার বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে মানবজাতির বুদ্ধিমত্তার
মত কম্পিউটার আচরন করতে পারে।কম্পিটার কিভাবে মানুষের মত চিন্তা করবে ,কীভাবে অসম্পূর্ণ
তথ্য দিয়ে পুর্নাঙ্গ সিদ্ধান্তে পোঁছবে,কীভাবে সমস্যা সমাধান করবে,কীভাবে বিচক্ষনতার
পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে ইত্যাদি গুলো জানার জন্যই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর গবেষণা করা
হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হিসেবে রোবটিক্স,নিউরাল নেটওয়ার্ক,ভার্চ্যুয়াল
রিয়েলিটি,ফাজি লজিক ইত্যাদি পরিলক্ষিত।

১৯২১ সালে karel Capek নামের Czech দেশীয় একজন নাট্যকার তার লেখা একটি বিদ্মপাত্মক
নাটক RUR(Rossum’s Universal Robots) তে প্রথম রোবট শব্দটি ব্যবহার করেন।Robot
শব্দটি Czech দেশীয় শব্দ “Robota” থেকে এসেছে ,যার শাব্দিক অর্থ “Forced Laborer” বা
‘Slave Laborer”।

রোবট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর আরেকটি উদাহরণ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পূর্ণ রোবট
ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে মানুষের মধ্যে।

তারই প্রেক্ষিতে গত বৃহঃস্পতিবার কুমিল্লার দেবীদ্বার জালাল উদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশন স্কুল
এন্ড কলেজ এ ‘বাংলাদেশ অ্যাডভান্স রোবোটিক্স রিসার্চ সেন্টার’ এর উদ্যোগে “এসো নিজ হাতে
রোবট বানাই”শিরোনাম নিয়ে রোবটিক্সের উপর একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়। রোবটিক্স
সেক্টরে বর্তমান প্রজন্মকে দিকনির্দেশনা দেওয়া, আরও উৎসাহিত করাই ছিল প্রোগ্রামটির মূল
উদ্দেশ্য।এই প্রোগ্রাম এ অষ্টম,নবম ও দশম শ্রেনীর ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহন করে।
কর্মশালার শুরুতে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী আরিফ কর্মশালার উদ্বোধন করেন। এরপর
বাংলাদেশও বর্তমান পেক্ষাপট রোবটিক্স এর গুরুত্ব তুলে ধরেন উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাফর
স্যার।

উক্ত প্রোগ্রামে ট্রেইনার হিসেবে ছিলেন মোঃরাহাতুল ইসলাম যিনি বাংলাদেশ অ্যাডভান্স রোবটিক্স
রিসার্স সেন্টারের  পরিচালক , কো-ফাউন্ডার আইডিয়া শপ ইনোভিশন সেন্টার অব বাংলাদেশ
অ্যাডভান্স রোবটিক্স রিসার্স সেন্টার  ও ভিশন ২০২০ সাউথ এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর
।তিনি রোবটিক্স সম্পর্কে তার মুল্যবান বক্তব্য পেশ করেন ,রোবটিক্স সেক্টর এ কাজ করতে হলে
যে সকল বিষয়ে বেশি জ্ঞান লাগবে সে সকল বিষয় তুলে ধরেন । তিনি সকল অংশগ্রহন কারীদের কে
গ্রুপ করে হাতে হাতে রোবটিক্স প্রজেক্ট শুরু করেন।তাকে সহায়তা করেন জাহিদ হাসান জনি ,জাহিদ
হাসান জনি কো-অর্ডিনেটর অব বাংলাদেশ অ্যাডভান্স রোবটিক্স রিসার্স সেন্টার । মোঃরাহাতুল
ইসলাম ও জাহিদ হাসান জনি শিক্ষার্থীদের অবস্টেকল রোবট ,স্মার্ট ডাস্টবিন,টেম্পারেচার নির্নয়

,এলসিডিতে তাদের নাম ইত্যাদি তৈরী করে দেখান।শিক্ষার্থীরা অনেক মনোযোগ সহকারে দেখেন
এবং নিজের হাতে তৈরী করেন। শিক্ষার্থীরা তাদের বিদ্যালয়ে খুব শীঘ্রই স্মার্ট ডাস্টবিন তৈরী
করবে বলে জানান।

জাহিদ হাসান জনি সবাইকে বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সবচেয়ে
আশ্চর্যের বিষয় তারা এখন থেকেই বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড এ অংশগ্রহন করার পরিকল্পনা
করছে।

অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ন করতে সহায়তা করে ভিশন ২০২০ সাউথ এশিয়ান প্রজেক্ট এবং কানাডিয়ান
ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।মোঃরাহাতুল ইসলাম এবং জাহিদ হাসান জনি উভয়ই কানাডিয়ান
ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এ ইইই বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার একটাই প্রত্যাশা তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে রোবটিক্স সেক্টরে বাংলাদেশ
একদিন সব দেশকে ছাড়িয়ে অনেক এগিয়ে যাবে।মোঃরাহাতুল ইসলাম সবাইকে রোবট কারিগড় হয়ে
বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তিতে স্বনির্ভর বাংলাদেশ তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান
জানান । কর্মশালাটি কুইজ প্রতিযোগিতা ও আইডিয়া কন্টেস্ট এর মাধ্যমে শেষ হয়।

Exit mobile version