TechJano

খুব সহজে পডকাস্ট কিভাবে তৈরি করা যায়?

পডকাস্ট এখনকার সময়ে খুব প্রয়োজনীয় আর শক্তিশালী মাধ্যম।  আপনার ভয়েসকে ব্যবহার করে খুব সহজেই পডকাস্ট বার্তা দিতে পারেন।  সারা বিশ্বের পডকাস্টকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।  পডকাস্টকে অডিও শো বলা হয়। সহজ কিছু অ্যাপস বা সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্নি বিষয়ের ওপর অডিও শো পডকাস্ট  করতে পারেন।  সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে অর্থ আয় বা আপনার সাইটকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।

সহজে পডকাস্ট তৈরির কতগুলো পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন:

মোবাইল দিয়ে দারুণ পডকাস্ট বানানো যায়।  যাঁরা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন আছে তিনি সহজেই পডকাস্ট বানাতে পারবেন।  এজন্য দরকার হবে কিছু অ্যাপস ডাউনলোড।  মোবাইলে নেট কানকেশন থাকতে হবে। এরপর গুগল প্লস্টোরে গিয়ে অ্যাপ নামাতে হবে।  প্লেস্টোরে স্লাইডশো ভিডিও মেকার লিখে সার্চ দেন।  অনেক অ্যাপ পাবেন।

পডকাস্ট কি? কিভাবে পডকাস্ট করবেন? এর লাভ কি?

সেখান থেকে ভালো রেটিং পাওয়া একটি অ্যাপ নামাতে পারেন।  অ্যাপের ফিচারগুলো পড়ে নেবেন।  যে অ্যাপে ফিচার যত বেশি সেটি বেশি কাজে লাগবে।  এর মধ্যে ভিভা ভিডিও, ভিডিও মেকার, ফটো স্লাইডশো, স্লাইডশো ভিডিও মেকার দিয়ে অধিকাংশ পডকাস্ট তৈরি করা যায়।  কম্পিউটার থেকে মুভি মেকার, উইন্ডোজ মুভি মেকার দিয়ে পডকাস্ট তৈরি করা যায়।

স্লাইডশো ভিডিও মেকার দিয়ে পডকাস্ট তৈরি করতে আগে অ্যাপটি ডাউনলোড করুন।  এরপর অ্যাপটি চালু করলে কয়েকটি অপশন পাবেন।  সেখানে স্লাইডশোতে ক্লিক করুন।  যে বিষয়ে পডকাস্ট তৈরি করবেন আগে সে বিষয়ের ওপর ছবি ডাউনলোড করে তা তুলে মোবাইলে রাখবেন।  এ পর্যায়ে স্লাইডশো হিসেবে ব্যবহারের জন্য ছবি নির্বাচন করে দিতে হবে।  এরপর নেক্সটে গেলে ছবির মাপ ঠিক করে দেওয়ার অপশন পাবেন।  তা থেকে প্রয়োজন মতো ঠিক করে দিন।  এরপর নেক্সট ধাপে স্লাইডশোগুলোকে সুন্দর করার আরও অপশন পাবেন।  এরপর যদি ভয়েস যুক্ত করতে চান তবে তা নির্বাচন করে দিতে পারবেন।  সেখান থেকে কাস্টম অপশনে গিয়ে মাই সং বা নিজের আগে থেকে রেকর্ড করে রাখা ভয়েস নির্বাচন করে দিতে হবে। অর্থাৎ, যে বিষয়ের ওপর পডকাস্ট তৈরি করবেন তা নিয়ে আগে মোবাইলে একটি ভয়েস রেকর্ড করে রাখতে হবে।  ভয়েস যুক্ত করা হয়ে গেছে স্লাইডশোকে বিভিন্ন ডিজাইন করতে পারবেন।  এ ছাড়া স্লাইডগুলো কত দ্রুত পরিবর্তন হবে তার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।  এরপর ওপরের দিকে এটি ওকে করে দিলে একটি সবুজ ঠিক চিহ্ন দিলে সেটি প্রসেস শুরু শুরু হবে। ১০০% প্রসেস হলে পডকাস্ট তৈরি শেষ।  আপনার মেমোরি কার্ডে এটি সংরক্ষণ হবে।  আপনার তৈরি পডকাস্টটি ফেসবুক বা আপনার সোশ্যাল মিডিয়া বা সাইটে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত।

একনজরে পডকাস্ট তৈরি:

১. মোবাইলে নির্দিষ্ট বিষয়ে ছবি তুলুন বা জোগড়ে করুন

২. ভয়েস রেকর্ডার অ্যাপ ডাউনলোড করুন বা মোবাইলের বিল্ট ইন টা ব্যবহার করে  সুন্দর পরিবেশে মোবাইলে ভয়েস রেকর্ড করুন এবং তা সেইভ করুন

৩. স্লাইড শো মেকার অ্যাপ ডাউনলোড করুন

৪. অ্যাপ চালু করে ছবি নির্বাচন করে স্লাইডশো বানান আর তাতে ভয়েসটা জুড়ে দিন

৫.সেইভ করুন ও শেয়ার করুন

৬. কোনো বিষয়ের ওপর ধারাবাহিক পডকাস্ট তৈরি করতে পারেন।

ভিডিও পডকাস্ট কি?

সাধারণ বা সহজ কথায় পডকাস্ট বলতে আমরা বুঝি এক ধরনের অডিও ফাইল বা অডিও সিরিজ যা আমরা মোবাইল বা কম্পিউটার বা কোন ডিভাইসে ডাউনলোড করে শুনতে পারি । আরো সহজ ভাবে কেউ কেউ আমরা এটাকে অডিও সম্প্রচারও বলে থাকি ।

কিন্তু আমরা কয়জন জানি যে শুধু অডিও পডকাস্টই হয় না ভিডিও পডকাস্টও হয় । ভিডিও পডকাস্টকে আবার ভডকাস্ট বলা হয় ।

ভিডিও ক্লিপস হল ভডকাস্টের অন্তর্ভুক্ত ।  ভডকাস্ট হিসেবে শর্ট ভিডিও ক্লিপস বর্তমানে খুব বেশি জনপ্রিয় । ওয়েব টেলিভিশন সিরিজকেও (যেমনঃ ইউটিউব, আমাজন ভিডিও, নেটফ্লিক্স ইত্যাদি )অনেক সময় ভডকাস্টের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভডকাস্টের অন্তর্ভুক্ত ভিডিও ক্লিপসগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত বেশির ভাগই ইন্ডিভিজুয়ালি তৈরি করা হয়েছে যা আসলে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার সাথে সাথে প্রচুর জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ।

এই ভিডিও পডকাস্টগুলো সাধারণত ২-৯ মিনিটের যেকোন ভিডিও বা পর্ব ভিত্তিক ভিডিও হয় ।  বর্তমানে এডভারটাইজিং এর ক্ষেত্রে এই ভিডিও পডকাস্ট খুবই জনপ্রিয় কারন এখানে অনেক সহজ ভাবে ও স্বল্প সময়ে অনেক সৃজনশীল ভাবে যেকোনো ধারণা তুলে ধরা যায় । তাছাড়া ভিডিও ব্লগ তৈরি বা নতুনদের জন্য ফিল্ম তৈরি করা বা জার্নালিজমের ক্ষেত্রে এই ভিডিও পডকাস্ট অনেক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে । এটা ট্রেডিশনাল মিডিয়ার মত বা এর সাথে একমুখিভাবেও চলতে পারছে যা আমরা সাধারণ মানুষ খুব উপভোগ করছি ।

আমরা আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রে অডিও পডকাস্ট এবং ভিডিও পডকাস্টের অনেক ব্যবহার দেখতে পারব খুব কম সময়ের মধ্যেই । আর এমনটি হলে আমরা সহজ উপায়ে ও অল্প টাকায় শিক্ষা, বিনোদন, চিকিৎসা বা অন্যান্য যেকোন বিষয়ে অনেক উপকার পাব ।

পডকাস্ট বা ভডকাস্ট কিভাবে তৈরি করবেন?

আপনার যা যা লাগবে:

উইন্ডোজ মুভি মেকার সফটওয়ারের সাহায্যে পডকাস্ট তৈরি

উইন্ডোজ মুভি মেকার  সফটওয়ার দিয়ে আপনি পডকাস্ট কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন।  শুরুতেই আপনার কণ্ঠস্বর রেকর্ড করুন।  এ জন্য আপনি Audacity সফটওয়ারটি ব্যবহার করতে পারেন।  এ ছাড়া আপনার কম্পিউটারের নিজস্ব ভয়েস রেকর্ডার ব্যবহার করতে পারেন কিংবা ভয়েস রেকর্ডের জন্য আরো অনেক সফটওয়ার রয়েছে যার যেটা মন চায় সেটা দিয়ে করে নিতে পারেন।  ইউটিউব থেকে যদি কোন মিউজিক ডাউনলোড করে নিতে চান তাহলে তা অবশ্যই Mp3 Format ডাউনলোড করে নেবেন।  ইউটিউব লাইব্রেরিতে ফ্রি সাউন্ড পাওয়া যায়।

উইন্ডোজ মুভি মেকার ডাউনলোড করে নিন ল্যাপটপ বা পিসিতে।  এটি চালু করলে অনেকগুলো অপশন পাবেন।  সেগুলো নেড়েচেড়ে আগে দেখে বুঝে নিন।  হোম পেজে

Add videos and photos নামক অপশন পাবেন।  এখানে ক্লিক করে আপনি প্রথমে যে ইমেজ বা ফটো এড করতে চান সেগুলি এড করে নিতে পারেন। এক বা একাধিক অথবা আপনি যত ইচ্ছে তত ফটোই এড করে নিতে পারেন।  এরপর Add Music নামক একটি অপশন আছে সেখানে ক্লিক করুন।

Add Music এ ক্লিকের পর আরো কিছু অপশন বের হবে। সেখান থেকে Add music from pc লিখার নিচে Add music নামে আরেকটি অপশন আছে সেখানে ক্লিক করুন এবং অডিও রেকর্ডটি এড করে নিন।

দেখবেন অডিও রেকর্ড বা মিউজিক এড হয়ে গেছে এবং বাই ডিফল্ট আকারে এটির Duration ৭ সেকেন্ড দেখাচ্ছে।  আপনার অডিও রেকর্ডের যথাযথ ডিউরেশন ঠিক করার জন্য আপনাকে উপরে সবুজ রঙের বক্সে চিহ্নিত Project নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে।

Fit to Music নামক অপশন দেখা দেখতে পেলে দেরি না করে তাতে ক্লিক করুন।

অডিও রেকর্ডের Exact Duration টা চলে পাবেন।  সেখানে আপনার কনটেন্টের সময় দেখা যাবে।

এখন আপনার কাজ হচ্ছে আপনার কনটেন্টটিকে আপনি কত সুন্দরভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে অডিয়েন্সের নিকট উপস্থাপন করতে পারেন।  সেই জন্য আপনাকে এই সফটওয়ারের বিভিন্ন অপশনগুলিকে নিয়ে ধৈর্য সহকারে ঘাঁটাঘাঁটি করতে হবে ।

Home অপশনে ক্লিক করে মেইন মেনুতে চলে যান। সেখানে দেখুন আপনি যদি আপনার কনটেন্টে কোন কিছু লিখে টাইটেল দিতে চান তাহলে Title বাটনে ক্লিক করুন দেখবেন যে লিখার জন্য একটি বক্স চলে এসেছে। তদ্রূপ শিরোনাম দিতে চাইলে Caption এ ক্লিক করুন এবং ক্রেডিট দিতে চাইলে Credits ক্লিক করুন। এভাবে আরো অনেক অপশন পাবেন কনটেন্টটিকে আকর্ষণীয় ভাবে করে তুলার জন্য।

চাইলে আপনার অডিও রেকর্ডের সাথে ফটোর Animations বা Transitions ঠিক করার জন্য Animations ক্লিক করে আপনার পছন্দের Transition টি বেছে নিতে পারেন।

পডকাস্ট কনটেন্টের Visual Effects নির্ধারণ করে দিতে পারেন।

সব কিছু শেষ হলে আপনাকে তা Save করতে হবে। এ জন্য আপনাকে Home বাটনে ক্লিক করতে হবে তাহলে উপরে ডান পাশে Save Movie নামক একটি অপশন দেখতে পাবেন। এখানে ক্লিকের পর নিচের আরো কিছু অপশন ভেসে আসবে যার মধ্য থেকে আপনি Recommended for this Project বাটনে ক্লিক করবেন এবং পরের স্টেপে চলে যাবেন।

কোথায় পডকাস্টটি save করতে চান তা দেখতে পারেন।  File name দিয়ে Save বাটনে ক্লিক করুন এবং অপেক্ষা করুন।  ফাইল সাইজের উপর নির্ভর করে save হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।

তথ্যসূত্র: ডিজিটাল স্কিলস ব্লগের লেথক কামরুল হাসান, আরিফ হাসান এবং অনলাইনের বিভিন্ন সূত্র।

Exit mobile version