এ বছরের জুনে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় শিশু-কিশোরদের নিরাপদতর ইন্টারনেট সম্পর্কিত সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী ‘সেফ ইন্টারনেট আউটরিচ প্রোগ্রাম’ – এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছে গ্রামীণফোন, টেলিনর গ্রুপ ও ইউনিসেফ।
‘বি স্মার্ট, ইউজ হার্ট’, শীর্ষক এই উদ্যোগের আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেইগবেডার, গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ইয়াসির আজমান, গ্রামীণফোনের সিসিএও মাহমুদ হোসেন এবং টেলিনর গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড চাইল্ড অনলাইন সেফটি স্পেশালিস্ট ওলা য়ো তান্দ্রে।
১১ থেকে ১৬ বছরের ৪০০,০০০ শিশু কিশোরের ক্ষমতায়ন এবং ৫০,০০০ অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ কিভাবে তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে অবহিত করতে এই উদ্যোগটি হাতে নেয়া হয়েছে। স্কুলগুলোতে প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ডিজিটাল শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। এছাড়াও, চাইল্ড হেল্পলাইন হটলাইন (১০৯৮) এ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ‘চাইল্ড অনলাইন সেফটি ইস্যুস’ যেখানে কল করে কিশোর-তরুণরা এ সম্পর্কিত উপদেশ ও পরামর্শসহ অন্যান্য সহায়তা পাবে।
এই উদ্যোগটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১০- বৈষম্য দূরীকরণের প্রতি গ্রামীণফোন এবং টেলিনর গ্রুপের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা পূরণে সহায়ক হবে।
এই উপলক্ষে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের তরুণ গ্রাহকদের জন্য সুরক্ষিত ডিজিটাল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা আমাদের একান্ত দায়িত্ব। ইন্টারনেট হলো জ্ঞান অর্জন, যোগাযোগ এবং বিনোদনের মূল উৎস এবং সবারই এক্ষেত্রে সুরক্ষিত থাকার অধিকার আছে। আমরা এই চাইল্ড অনলাইন সেফটি উদ্যোগটি নিয়ে আরো সূদুরপ্রসারী পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেন আমাদের সন্তানেরা ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল সেবার সর্বোচ্চ সুবিধা পায়।’
‘ডিজিটাল সেবার সুবিধা লাভ এবং অনলাইনে সুরক্ষিত থাকার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক শিশুর। টেলিনর গ্রুপ বিশ্বাস করে একটি সহায়ক পরিবেশ ডিজিটাল ঝুঁকি হ্রাস এবং শিশুদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। আর এজন্যই গ্রামীণফোনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা বিনিয়োগ করছি,’ বলেন টেলিনর গ্রুপের হেড অব সাসটেইনাবিলিটি মাই ওল্ডগার্ড।
‘আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ইন্টারনেটে সুরক্ষা নিশ্চিত করা। জাতি হিসেবে আমাদের তরুণদের কাছে প্রযুক্তির সঠিক উপাদান তুলে দেওয়াটা আমাদের দায়িত্ব যেন তরুণরা বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করতে পারে,’ বলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি আরো বলেন, ‘চাইল্ড অনলাইন সেফটির মতো উদ্যোগ শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধিতেই সাহায্য করে না, বরং আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কেও অবহিত করে। এই বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এবং গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্য করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মর জন্য আরো নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ তৈরি করে রেখে যেতে আগ্রহী।’
গ্রামীণফোন ২০১৪ সাল থেকে শিশুদের মাঝে নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী ১৩০,০০০ শিক্ষার্থীর মাঝে এই বার্তা পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৫ সালে গ্রামীণফোন এবং ইউনিসেফ অভিভাবকদের জন্য দায়িত্বশীল ইন্টারনেট ব্যবহার এবং সচেতনতা সম্পর্কিত একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে।
‘ইন্টারনেট একে অন্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন ও শিক্ষা লাভের এক অনন্য মাধ্যম। এর মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ এবং তথ্য সংগ্রহের সুযোগ অপরিসীম। আমরা আশাবাদী যে, গ্রামীণফোনের সাথে আমাদের এই সহযোগিতা ডিজিটাল পরিসীমায় সকলের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সকল বয়স ভেদে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়া উচিৎ’, বলেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদার।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোন, ইউনিসেফ এবং টেলিনর এর অন্যান্য কর্মকর্তারা।