‘ইন্টারন্যাশনাল গার্লস ইন আইসিটি ডে’-কে কেন্দ্র করে আজ জিপি হাউজে এক প্যানেল আলোচনার আয়োজন করেছে গ্রামীণফোন। আলোচনায় নারীদের অবদান তুলে ধরার পাশাপাশি আইসিটি খাতে লৈঙ্গিকসমতা প্রতিষ্ঠায় তাদের অন্তর্ভূক্তির লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধকরণের বিষয়গুলো তোলা হয়।
আলোচনার শুরুতেই মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিত্ব এবং বিশেষজ্ঞ দ্বারা তথ্যবহুল এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মেয়েদের বর্তমান অবস্থা, প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা এবং ভবিষ্যতে কিভাবে সুযোগ তৈরি করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে সভায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে আলোচনা ও বিতর্ক হয়।
প্যানেল আলোচনা নিয়ে মাইকেল ফোলি বলেন, ‘শিল্প, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, আইন, প্রাথমিক শিক্ষা কিংবা গ্রাফিক ডিজাইনের মতোই প্রযুক্তি খাত আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল হয়ে গেছে। আগামী ১০ বছরে প্রযুক্তি খাতে দুই লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হবে কিন্তু দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক জনশক্তির অভাবে তা পূরণ করা যাবে না। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিশীল একটি দেশ, যেখানে নারীরা প্রতিষ্ঠা লাভ
করার পাশাপাশি ডিজিটাল বিনির্মাণের লক্ষ্যে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
ইয়াসির আজমান ডেপুটি সিইও ও সিএমও বলেন, “ডিজিটাল ক্যারিয়ার গড়তে নারীর বহুমুখী বাধার মুখে পরে এবং এই চ্যালেঞ্জএর কোনো দেশ কাল পাত্র নাই, আমরা একসাথে কাজ করলে এই বাধা অতিক্রম করতে পারবো এবং সামগ্রিক উন্নতি নিশ্চিত করতে পারবো” প্যানেল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন গ্রামীনফোনের হেড অফ এই ও টি রেদোয়ান হাসান খান,
বাংলাদেশ সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী খালেদা আহসান; কোয়ান্টাম কনজ্যুমার সল্যুশনস লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার-রিসার্চ বুশরা মাহরিন এবং গ্রামীণফোনের হেড অব ডিজিটাল অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স অপারেশনস সোওয়াবা সারওয়াত সিনথিয়া।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে লৈঙ্গিকসমতা ও নারী নেতৃত্ব সঙ্কটাপূর্ণ। ডিজিটাল ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে নারীরা সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আইনি বাঁধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। এবং এ বাধা কোনো নির্দিষ্ট দেশ কিংবা প্রেক্ষিতেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা ডিজিটাল বিশ্বেও নারীদের সুযোগের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর ফলে, নারী নেতৃত্বের অভাব উন্নত দেশগুলোতে লৈঙ্গিক পার্থক্য গড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। যখন কোনো নারী দেখে যে প্রযুক্তি খাতে অন্য নারীরা যুক্ত হচ্ছে না, তখন তারাও এই খাতে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে কিংবা ভিন্তা করে সেখানে তাদের জন্য তেমন কোনো সুযোগ নেই। তরুণ প্রজন্মের মাঝে এই ডিজিটাল শূন্যতা ভবিষ্যতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত বোধগম্যতা তৈরিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তরুণ প্রজন্মের মেয়ে ও তরুণ নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ক্যারিয়ার গড়তে এবং এই খাতে যুক্ত হতে অনুপ্রেরণা যোগানোর লক্ষ্যেই এ ‘ইন্টারন্যাশনাল গার্লস ইন আইসিটি ডে’ উদযাপন।