TechJano

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে ডেটা এই মুহূর্তে : পলক

অনলাইনে “বিগডাটা” বিষয়ক দিনব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ আয়োজন করল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আওতায় “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (আইডিয়া)”।

বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে আইডিয়া প্রকল্পের “এডুকেশন ফর ন্যাশন” এর আওতায় এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব। অনলাইন অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক।

প্রধান অতিথি হিসেবে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম জনবহুল এবং বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ যেখানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত ডেটা জেনারেট করছে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে ডেটা বা তথ্যকে ধরা হচ্ছে। যে দেশ বা জাতির কাছে যত বেশি তথ্য থাকবে ও সেটা উপযুক্তভাবে প্রসেস এবং অ্যানালাইসিস করতে পারবে সে দেশ বা জাতি তত বেশি সম্পদশালী হিসেবে বলা হচ্ছে। দেশে এখন প্রায় ১০ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারি আছে এবং ১৬ কোটিরও বেশি সিম কার্ড ব্যবহার হচ্ছে যেখানে প্রায় ৪ কোটির কাছাকাছি স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারিসহ লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার ব্যবহারকারি রয়েছে। বিশেষ করে এই করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গত মার্চ ২০২০ থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ গত ৩ মাসে ঘরে বসে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা এবং ১৭ কোটি মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার।

তিনি আরো জানান, ডেটা অ্যানালাইসিস এর মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে কোন এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বা কম অথবা উপসর্গের সংখ্যা বেশি এবং পরবর্তীতে কোন এলাকায় এই সংখ্যা বাড়তে পারে সেই বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তথ্য অনুমান করা সম্ভব। অর্থাৎ তথ্য বিশ্লেষণের একটি শক্তিশালী একটা ক্ষমতা আছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন প্রচলিত পদসমূহ যেমন সিইও, সিএফও বা সিটিও এর পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারী সকল অফিসে চীফ ডেটা অফিসারের প্রয়োজনীয়তা হবে। এর কারণ হল সরকারি-বেসরকারী অফিসগুলো এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ডেটা অ্যানালাইসিসকে গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশের গবেষক, উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তাগণ যেন দেশের ডেটা ব্যবহার করে তারা যেন নতুন নতুন সেবা দিতে পারে সেটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। এছাড়া তিনি ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাও তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ বলেন যে, ডেটা নির্ভর পলিসি টেকসই ও কার্যকর বেশি হয়। তাই আমরা যখনই এভিডেন্স বেইজড পলিসি তৈরির কথা বলব তখনই ডাটা রিসোর্স বা তথ্য বাড়াতে হবে। ডাটা ব্যবস্থাপনায় আমরা যত বেশি উন্নত হব আমাদের পলিসিগুলোও তত বেশি উন্নত হবে। এর চর্চা আমরা শুরু করেছি যা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। তবে এই বিষয়ে বাংলাদেশে আরো কাজ বৃদ্ধি করতে পারলে ডাটা সম্পদে আমরা অধিক সমৃদ্ধশালী হতে পারব। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব জানান, বর্তমান যুগে অন্যতম সম্পদ হল তথ্য বা ডাটা। পৃথিবীব্যাপী এখন এই তথ্য বা ডাটা এর গুরুত্ব অনেক। সবমিলিয়ে বিশ্বের অর্থনীতিতেও এর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।

আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক তাঁর স্বাগত বক্তব্যে জানান, সামনের যুগ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির যুগ। তাই ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি সম্পর্কে তরুণদের উৎসাহিত করতে এ ধরনের আয়োজন করছে আইডিয়া প্রকল্প। আগামীতেও বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।

Making sense of Bigdata, Bigdata & Smart Analytics, এবং how can we harness opportunities in Bigdata এই ৩টি বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দিয়ে এই প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করা হয়। প্রশিক্ষণটিতে রিসোর্স পারসন হিসেবে সংযুক্ত হন অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডে ডেটা সাইন্স বিষয়ের ছাত্র ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ডেপুটি কমিশনার (ট্যাক্স) মো. আব্দুল বারী তুষার, গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আইসিটি এর বিগ ডাটা অ্যানালিটিস বিষয়ক লেকচারার ড. সাইফুল ইসলাম এবং টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ্ এন করিম। চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় ৬০ জনের অধিক প্রশিক্ষণার্থী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন যাদের পরবর্তীতে সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়া পুরো আয়োজনটি “স্টার্টআপ বাংলাদেশ” এর অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে লাইভ সম্প্রচার করা হয় ফলে আগ্রহী অনেকেই “বিগডাটা” সম্পর্কে বিশেষ ধারণা পায়।

আইডিয়া প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) কাজী হোসনে আরা, প্রকল্পের সিনিয়র পরামর্শক আর এইচ এম আলাওল কবির, প্রকল্পের পরামর্শক দেওয়ান আদনান, সোহাগ চন্দ্র দাস সহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম-সহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ শিক্ষকগণ, বিসিসি ও আইসিটি বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ এসময় অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version