TechJano

ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্রহী? যা যা করতে হবে আপনাকে

জীবনে কি কর্মক্ষেত্রে হতাশ? ফ্রিল্যান্সিং করা খুব কঠিন? অনেক প্রশ্ন আপনার মনে? ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আপনার সব প্রশ্নের জবাব আছে। ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে সফল হতে গেলে সবার আগে দরকার ধৈর্য আর দক্ষতা বাড়ানো। ফ্রিল্যান্সিং ও এন্টারপ্রেরণার হয়ে ওঠার সব প্রশ্নগুলোর উত্তর পড়ুন।

১: ফ্রিল্যান্সিং কি ?
নিজের যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে কাজ করাই হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। বর্তমানে এটি একটি খুবই জনপ্রিয় কর্মক্ষেত্র। খুব সহজে কোন ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা যায় । বর্তমানে এটি একটি সারা জাগানো পেশা। বিশেষ করে তরুণদের কাছে এর জনপ্রিয়তা খুবই বেশী এবং দিন দিন ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে।

২: ফ্রিল্যান্সিং কেন জনপ্রিয় ?
ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তার প্রধান কারন হচ্ছে ঘরে বসেই আয় করা যায় । এর জন্য কোন অফিস অথবা নির্ধারিত জায়গার প্রয়োজন হয়না।পৃথিবীর যে কোন জায়গা থেকেই কাজ করা যায় ইন্টারনেট আর কমপিউটার সংযোগ থাকলেই। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেক বেশি আয় করা যায়।

৩: ফ্রিল্যান্সিং এর মার্কেটপ্লেস কি কি ?
আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার,ফাইভার, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়।বর্তমানে ওডেস্ক এবং ইল্যান্স একত্র হয়ে আপওয়ার্ক হওয়াতে এটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। একটু ব্যতিক্রম মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে রয়েছে নাইনটি নাইন ডিজাইন,পিউপল পার আওয়ার, ডিজাইন ক্রিয়েটিভ । এই সকল মার্কেটপ্লেসগুলোতে বিনামুল্ল্যে রেজিস্ট্রেশান করে কাজ করা যায়।

আর্টিকেল লিখে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা আয়

৪: ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি?
ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় নতুন মার্কেটপ্লেসগুলোর সংখাও দিন দিন বেড়ে চলছে। যার ফলে কাজের কোন অভাব নেই। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেক বেশি আয় করা যায়। বর্তমানে দেশের রেমিটেনসের অনেকটাই আসে ফ্রিল্যান্সিং থেকে। আমাদের দেশে আছে অনেক মেধাবী ও প্রতিভাবান মানুষ। সেই মেধা সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে আমরা এই সেক্টরে গার্মেন্টস কেও ছাড়িয়ে যেতে পাড়বো । ভবিষ্যতে দেশের সর্বাধিক রেমিটেনস আসবে এই ফ্রিল্যান্সিং থেকেই। খুব শীঘ্রই এটি একটি সম্মানজনক পেশা হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। মানুষ নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করবে। বাবা-মা তাদের সন্তানদেরকে ফ্রিল্যান্সিং করতে উৎসাহিত করবে।একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে সবাই উঠে পড়ে লাগবে।

৫: ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে কি কাজ জানতে হবে ?
আপনি কি কাজ করবেন সেটা নির্ভর করে আপনার যোগ্যতা ও পছন্দের ওপর। অনেক রকমের কাজ আছে, যেমন- ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, রাইটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইযেসন, ডাটা এন্ট্রি সহ আরও অনেক।একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায়, কম্পিউটার সাইন্স/ আইটি লাইনের স্টুডেন্টরা ডাটা এন্ট্রি কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে। আমার মতে তারা শুধু মূল্যবান সময় নষ্টই করছে না, সেই সাথে ধ্বংস করছে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।সময় একটু বেশি লাগলেও তাদের উচিত ওয়েব/এপ্লিকেসন ডেভেলপমেনট অথবা সমতুল্য বিষয়ে কাজ করা।এমন একটি লাইনে কাজ করেন যেটি আপনার ভবিষ্যৎ এ কাজে আসবে।যে কাজটি করবেন সে বিষয়ে যথেষ্ট পরিমান স্কিল তৈরি করতে হবে।

৬: ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে ভালো কাজ জানা ছাড়া আর কি লাগবে ?
যে কাজটি করবেন সে বিষয়ে যথেষ্ট পরিমান স্কিল থাকাই যথেষ্ট না। সততা, চেষ্টা, ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস, নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা বা আগ্রহ থাকলেই ফ্রিল্যান্সিংএ সফল হওয়া যায়।আপনাকে এখানে অনেক টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সারদের সাথে প্রতিযোগিতা করে কাজ করতে হবে। আপনার ভালো কমিউনিকেশন স্কিল থাকতে হবে। আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতাকে তুলে ধরতে হবে।ফ্রিল্যান্সিং এখন শুধু কাজ নয়, এটি একটি চ্যালেঞ্জ ।

৭: কি কারনে ফ্রিল্যান্সিং হুমকির মুখে?
আমাদের দেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী /প্রতিসটান ফ্রিল্যান্স জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্যবসা সফল করতে আগ্রহী ফ্রিল্যান্সারদের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিচ্ছে। অনেকেই আবার মনে করে – ফ্রিল্যান্সিং মানেই ক্লিক অথবা ডাটা এন্ট্রির কাজ।কেউ কেউ ২/৩ টা সেমিনার অংশগ্রহন করে অথবা ইউটিউব থেকে ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখা শেষ করেই ঝাঁপিয়ে পরে ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে। এর পরিণতি এবং ফলাফলদাড়ায় ভয়াবহ। যারা মনে করে ফ্রিল্যান্সিং মানেই খুব সহজে হাজার হাজার ডলার, তাদের উদ্দেশে বলছি – ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য নয় ,দয়া করে এখনি কেটে পড়ুন।কারন,ফ্রিল্যান্সিং এর কোন সর্টকার্ট রাস্তা নেই। আপনি হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে চান ,অথচ এর জন্য প্রয়োজনীয় শ্রম দিবেন না, ধৈর্য ধরতে পারবেন না, মেধার সঠিক কাজে লাগাবেন না, তাহলে আপনি এই সেক্টরে প্রতিষ্ঠিতও হতে পারবেন না। সঠিক নির্দেশনার জন্য সফল ফ্রিল্যান্সারদের সহযোগিতা নিন।

৮: আমি ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্রহী, আমি কি পারবো ?
আপনি পারবেন, যদি ফ্রিল্যান্সিং এ সময় দেওয়ার আগে নিজেকে সময় দিন। আপনাকে বুঝতে হবে অনেক আন্তরজাতিক মানের ফ্রিল্যান্সারদের সাথে টক্কর দিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে।আপনি যে বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী সেটা নিয়ে কয়েক মাস লেগে থাকেন।আগে নিজেকে তৈরি করুন, তারপর এই সেক্টরে প্রবেশ করুন। চেষ্টা চালিয়ে যান, সফলতা আসবেই। আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য, স্কিল ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব না। গান শুনে,সেলফি তুলে, ফেসবুক ব্রাউস করে সারাদিন সময়ন নষ্ট না করে, সময়টাকে কাজে লাগান। কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা তৈরি করুন। তাহলেই সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন।
বাংলাদেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ এর পেশা ফ্রিল্যান্সিং।এটাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি দেশ কে খুব দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।নিজের লক্ষ্য স্থির করুন।ফ্রিল্যান্সিংকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে,সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে নিজের যাত্রা শুরু করুন। এভাবেই একদিন হয়ে আজকের ফ্রিল্যান্সাররা হয়ে উঠবে আগামী দিনের এন্টারপ্রেনার ।

মোঃ শাহিন সিদ্দিক
ফ্রিল্যান্সার, অনলাইন মার্কেটপ্লেস

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের টাকা আনবেন? পেওনিয়ার কার্ড যেভাবে করবেন

৩০টি নির্ভরযোগ্য ফ্রিল্যান্সিং জব সাইট, এখানে ইনকাম সহজ

গ্রাফিকস ডিজাইন কোথায় শিখবেন? কোথায় কাজ পাবেন

ফ্রিল্যান্সাররা যেভাবে সরকারের নগদ সহায়তা পাবেন

Exit mobile version