বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাকাশ বিজ্ঞানী ও দুর্যোগ পূর্বাভাস বিশেষজ্ঞ ড. এ. এম চৌধুরী বার্ধক্যজনিত কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
২১ মে শনিবার বাদ আসর ধানমন্ডি ১২/এ রোডের তাকওয়া মসজিদে এ. এম চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় এবং বাদ মাগরিব মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাযা শেষে দাফন করা হয়।
বিশিষ্ট এই বিজ্ঞানী রোজ প্যাটেল থিওরির প্রবক্তা। ৭০-এর দশক থেকে তাঁর যুগান্তকারী মডেলগুলোর সাথে ঘূর্ণিঝড়ের ভবিষ্যদ্বাণীতে মূল অবদানের জন্য বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক এই চেয়ারম্যান ১৯৯৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘স্বাধীনতা পদক’ গ্রহণ করেন। এছাড়া বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় নাসা গ্রুপ অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার অর্জন করেন।
অসামান্য মেধাবী ড. এ. এম চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে সে সময়ের শ্রেষ্ঠ রাজা কালী নারায়ণ বৃত্তির অধিকারী ছিলেন। নবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক আব্দুস সালামের সাথে কাজ করেছেন এই গুণীজন। গাণিতিক পদ্ধতিতে দুর্যোগের পূর্বাভাস নিয়ে তিনি দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন।
এই মহাকাশ বিজ্ঞানী ১৯৪০ সালে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার দিনারপুর পরগনার অর্ন্তরভূক্ত কায়স্তর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত গণিত বিষয়ে এমএসসি এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে স্পেস সাইন্স বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ও ১৯৬৯ সালে স্পেস ফিজিক্স বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন।
মৃত্যকালে তিনি ২ ছেলে ১ মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বড় ছেলে আনীর চৌধুরী ডিজিটাল বাংলাদেশের বিনির্মাণে অন্যতম অবদান রাখা এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর হিসেবে কাজ করছেন, মেয়ে ক্যারিনা চৌধুরী স্বপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করছেন এবং ছোট ছেলে মৃদুল চৌধুরী এম’পাওয়ার সোশ্যাল-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।
ড. এ. এম. চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন আইসিটি ও এটুআই পরিবারসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী।
দেশের এই বরেণ্য সন্তানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে অংশ নেবার বিনীত অনুরোধ রইল।