ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে। সরকারের ডিজিটাল প্রযুক্তি বান্ধব নীতির ফলে দেশে ১৪টি মোবাইল উৎপাদন কোম্পানি মোবাইল সেট উৎপাদন করছে। মেড ইন বাংলাদেশ মোবাইল সেট দেশের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ক্রমান্বয়ে সেটি শতভাগে উন্নীত হবে। মন্ত্রী মোবাইল সেটের পাশাপাশি ল্যাপটপ, ট্যাব ও ডেস্কটপ উৎপাদনে কোম্পানি সমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী রোববার ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশে স্থাপিত কারখানা থেকে উৎপাদিত অপ্পো মোবাইল ফোনের নতুন ব্রান্ড এফ ২১-প্রো এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত ডিজিটাল যন্ত্রের গুণগতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়নের প্রতি মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে গুরুত্ব দিতে হবে।দেশের সব মানুষের হাতে স্মার্টফোন থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন কম্পিউটার বিপ্লবের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার। তিনি ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনকারী এবং রপ্তানিকারী হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গিকার তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠায় যে স্বপ্ন জাতিকে দেখিয়েছিলেন তা আজ পুরণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, সরকারের প্রযুক্তি বান্ধব নীতির ফলে দেশে বিশ্ব মানের ১৪টি মোবাইল কোম্পানি মোবাইল ফোন কারখানা স্থাপন করেছে এবং আরও চারটি কারখানা স্থাপন পাইপ লাইনে আছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা নেপাল ও নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের বহুদেশে মোবাইল, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার রপ্তানি করছি। আমেরিকায় ফাইভ-জি মোবাইল ফোন বাংলাদেশ রপ্তানি করছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।। সৌদি আরবে আমরা আইওটি যন্ত্র রপ্তানি করছি। মোবাইল ফোন উৎপাদক ও মোবাইল অপারেটরদের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সহজ কিস্তিতে যাতে ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোন পেতে পারে সে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, আমরা দেশের শতকরা ৯৮ভাগ এলাকায় ফোর-জি নেটওয়ার্ক পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছি কিন্তু সব মানুষের কাছে স্মার্ট ফোন পৌঁছাতে পারিন। জনগণের কাছে ফোরজি সেট পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে পারলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই সুযোগটা দরকার বলে শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরের এই অগ্রনায়ক তার অভিমত ব্যক্ত করেন।ইন্টারনেট পৃথিবীর বড় পাঠাগার, করোনাকালে একজন অতিদরীদ্র বাবাও তার সন্তানকে পড়ালেখার জন্য স্মার্টফোন হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তিনি মোবাইলের ডাটাকে মেয়াদহীন করার জন্য টেলিকম অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি টাকা দিয়ে ডাটা কিনবো যতোদিনে খুশি ডাটা ব্যবহার করবো। বাজার থেকে চাল কিনলে দোকানদার কি আমাকে শর্ত দেয় যে সাতদিনে চাল খেতে হবে। মন্ত্রী প্রশ্ন করেন অপারেটরের নেটওয়ার্ক ঠিক না থাকলে আমি কি মেয়াদের মাঝে আমার ডাটা ব্যবহার করতে পারবো। মন্ত্রী টেলিটককে এজন্য ধন্যবাদ দেন ও সবাইকে টেলিটকের মতো মেয়াদহীন ডাটার প্যাকেজ প্রদানের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী পরে বাজারজাত করার জন্য বাংলাদেশের অপ্পো কারখানা থেকে উৎপাদিত নতুন ব্রান্ড এফ ২১-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।