TechJano

বাংলাদেশ বিশ্বের দৃষ্টান্ত হয়েছে ডিজিটাল আর্থিক সেবায়: মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল আর্থিক সেবায় বাংলাদেশ বিশ্বের দৃষ্টান্ত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই সেবা আস্থা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সুফল হিসেবে আমাদেরকে ক্যাশবিহীন সমাজের দিকে যাওয়া অনিবার্য ।

তিনি বলেন, আমাদের জীবন যাপন অনেকাংশেই ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে যাওয়ায় এটি কেবল টাকার লেনদেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনিবার্য। কোভিড পরিস্থিতিতে ডিজিটাল আর্থিক সেবা আরো অপরিহার্য করে তুলেছে। তিনি গ্রাহকদের সাথে এসএমএসসহ অন্যান্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এতে গ্রাহক এবং আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফলপ্রসূ যোগাযোগ তৈরি হবে।

মন্ত্রী আজ ঢাকায় দি ডেইলি স্টার ও ভিসা কর্তৃক ব্যাংকার,এমএফএস এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অংশ গ্রহণে আয়োজিত ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০২১, পেমেন্ট সিস্টেম এন্ড ফিনটেক শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে দি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বিজিএমই সভাপতি ড. রুবিনা হক, ভিসা‘র কান্ট্রি ম্যানেজার রাম চন্দ্র, মাস্টার কার্ড এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি কামাল সাঈদ, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো: শিরিন, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, বিকাশ এর সিইও কামাল কাদির, নগদ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির মিশুক প্রমূখ বক্তৃতা করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, মিটিং, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম থেকে শুরু করে আমাদের শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য সরকার পরিচালনাসহ প্রাত্যহিক জীবনের বাহন এখন ইন্টারনেট। গত জানুয়ারির পর ইন্টারনেট যোগাযোগ দ্বিগুনের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।গত জানুয়ারিতে একহাজার জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ ব্যবহৃত হতো, তা বেড়ে এখন ২১শত জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে গত এগারো বছরে দেশে ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে উঠায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ডিজিটাল জীবনযাত্রার সুযোগ পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র ৮ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ ব্যবহৃত হতো আর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো মাত্র ৪০ লাখ যা ২০২০ সালে সাড়ে দশকোটিতে উন্নীত হয়েছে। ইন্টারনেট সুবিধা দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে পেঁৗছে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের তিন হাজার আটশত ইউনিয়নে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড সংযুক্তি ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে। দুর্গম চর, হাওর ও দ্বীপসহ অবশিষ্ট প্রায় ৭শত ৩৮টি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ডে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর মাধ্যমে কিছুকিছু দুর্গম এলাকায় আমরা নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছি।

২০২১ সালের মধ্যে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের কোন সংকট হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে আমরা ফোরজি চালু করেছিলাম কিন্তু নানা কারণে মোবাইল অপারেটরসমূহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো ফোর-জি চালু করতে পারেনি। দেশের প্রত্যন্তে ফোর জি সম্প্রসারণে সংশ্লিষ্টদের আমরা নির্দশনা দিয়েছি। ৫জির জন্যও আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে আমারা পা দিয়েছি বর্তমান অবস্থা আরো বদলাবে। এরই ধারাবাহিকতায় এআই, রোবটিকস, আইওটি কিংবা ব্লকচেইন প্রাত্যহিক আর্থিক সেবায় যুক্ত হলে চ্যালেঞ্জ আরো বাড়বে। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি জরুরী । এই লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। এই বিষয়ে মন্ত্রী সেবাদাতা ও গ্রহীতার সতর্কতার ওপরও গুরুত্ব দেন। বক্তারা ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে ক্যাশবিহীন সমাজ বিনির্মাণে সমস্যা ও সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। সেমিনারে এ ব্যাপারে তারা বেশ কিছু উপায় নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

Exit mobile version