ইউরোপীয় নাগরিকত্ব এবং স্থায়ী আবাসের জন্য বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো খুব সহজে ইউরোপের যে কোন দেশে যাতায়াত করতে পারা। সেটা হতে পারে ভ্রমণ, কাজ কিংবা বসবাসের জন্য। ইউরোপের যেকোন একটি দেশের নাগরিকত্ব, ওই মহাদেশের সব দেশে প্রবেশের দরজা খুলে দিবে। এ ছাড়া ইউরোপের সীমানার বাইরে যেসব দেশে যেতে ভিসা লাগেনা; যেমন কানাডা, হংকং, সিঙ্গাপুর, এবং নিউজিল্যান্ডেও খুব সহজে প্রবেশ করা যাবে। শেনজেনভুক্ত দেশগুলো থাইল্যান্ডবাসীদের জন্য বেশি সুবিধাজনক।
যেমন, পর্তুগালে আবাসন সুবিধা পাওয়ার জন্য যে ‘গোল্ডেন ভিসা’ স্কিমটি চালু আছে; সেটার মাধ্যমে দ্রুত ও সাশ্রয়ী বিনিয়োগ করে সম্পূর্ণ ইউরোপীয় আবাসন সুবিধা পাওয়ার সুযোগ আছে এবং স্থায়ী আবাসন সুবিধা পাওয়ার পথ তৈরি করে, কখনও কখনও দ্রুততর সময়ে নাগরিকত্বও পাওয়া যায়।
নাগরিকত্ব অর্জনের পাশাপাশি দ্বিতীয় পাসপোর্ট অর্জনের জন্য বিনিয়োগের-মাধ্যমে-নাগরিকত্ব পদ্ধতিটাই সবচেয়ে দ্রুতগতির এবং সহজ, যা বিনিয়োগকারীর ভ্রমণের সুযোগ-সুবিধাও বাড়িয়ে দিবে। ইউরোপের যেকোন একটি দেশের নাগরিকত্ব পেলে ওই মহাদেশের সব দেশে উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ পাওয়া যায়; যার মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং নিরাপদ পরিবেশ অন্তর্ভুক্ত। প্রতিযোগিতামূলক নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে ইউরোপ প্রধান গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
হার্ভে ল’ গ্রুপ-এর ম্যানেজিং পার্টনার ব্যাসটিয়েন ট্রেলক্যাট বলেন, “যখন ইউরোপের বেশ কিছু দেশ ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছে; ইমিগ্রেশনে আগ্রহীদের বাধা দিচ্ছে, ঠিক একই সময়ে আরও বেশ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগ প্রকল্পের মাধ্যমে আবাসন সুবিধা ও নাগরিকত্ব সুবিধা প্রদান করছে”।
কোথায়, কীভাবে বিনিয়োগ করলে ইউরোপে স্থায়ী আবাসন ও নাগরিকত্ব অর্জন করা যাবে
বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়াতে আবাসন সুবিধা পাওয়ার জন্য যে প্রকল্প চালু আছে, তার অধীনে প্রায় ৫১২,০০০ ইউরোর বিনিময়ে স্থায়ী আবাসন অনুমতি প্রদান করা হয়- যা সরকারিভাবে নিশ্চয়তা প্রদান করে এবং পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে আর কোন অর্থ ব্যয় করতে হয় না। মেয়াদ শেষ হলে সুদ ছাড়া পুরো অর্থটাই ফেরত দেওয়া হবে। ৫ বছর স্থায়ীভাবে বসবাসের পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে।
পর্তুগাল গোল্ডেন রেসিডেন্স পারমিট প্রোগ্রাম
প্রপার্টি বিনিয়োগের মাধ্যমে পর্তুগালের গোল্ডেন রেসিডেন্স পারমিট প্রোগ্রাম অফার করছে হার্ভে ল’ গ্রুপ। পর্তুগালে ৫ বছরের রেসিডেন্স পারমিট পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভিসা-ফ্রি শেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণের সুযোগ দেয়। এই প্রোগ্রামে আবেদনকারীর ৫০০,০০০ ইউরোর সমমূল্যের প্রপার্টি থাকতে হবে অথবা ৩৫০,০০০ ইউরোর সমমূল্যের প্রপার্টি থাকতে হবে, যা ৩০ বছরের বেশি পুরনো হতে হবে কিংবা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থান হবে। প্রয়োজনীয় শর্তাবলী যথাযথভাবে পূরণ সাপেক্ষে ৫ বছরের আবাসন অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারবে।
সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব
সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব অর্জনের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। সাইপ্রিয়ট পাসপোর্টধারীরা পরিবারের সদস্যসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের যেকোন দেশে বসবাস, ভ্রমণ, কাজ, পড়াশোনা, করতে পারবে এবং জমিও কিনতে পারবে এবং পরবর্তী প্রজন্ম সরাসরি নাগরিকত্ব পাবে। আবেদনকারীর ব্যক্তিগত বা যৌথভাবে কমপক্ষে ২মিলিয়ন ইউরো জমা থাকতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ৩ মাস এবং পাসপোর্ট হতে ৬ মাসের মতো সময় লাগবে।
মাল্টা নগরিকত্ব
মাল্টা নাগরিকত্ব সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব অর্জনের মতোই। মাল্টা নাগরিকত্ব পেতে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে ৩টি উপায় পছন্দ করতে পারেন। ক) জাতীয় উন্নয়ন ও সামাজিক ফান্ড হিসেবে ৬৫০,০০০ ইউরোর নন-রিফান্ডেবল অবদান; খ) রিয়েল এস্টেটে ৩৫০,০০০ ইউরো বিনিয়োগ অথবা যেকোন একটি প্রোপার্টি কমপক্ষে ১৬,০০০ ইউরোতে ইজারা দিতে হবে-যা ৫ বছরের জন্য ইজারাভুক্ত থাকবে। গ) সরকার অনুমোদিত কোন অর্থপণ্যে কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য সর্বনিম্ন ১৫০,০০০ ইউরো বিনিয়োগ করতে হবে। সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ৪ মাস এবং পাসপোর্ট হতে ১২ মাসের মতো সময় লাগবে।