TechJano

মাছচাষীদের জন্য পরামর্শ সেবা প্রদান করবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘রূপালি’

দেশের ক্ষুদ্র মাছচাষী ও স্থানীয় সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহকে ডিজিটাল পরামর্শসেবা প্রদানের লক্ষ্যে কৃষি উপকরণ খাতে অগ্রণী প্রতিষ্ঠান এসিআই এগ্রিবিজনেস এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশ -এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এসিআই সেন্টারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মোঃ রাশেদুল হক-এর উপস্থিতিতে এসিআই এগ্রিবিজনেস এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. ফা হ আনসারী এবং ওয়ার্ল্ডফিশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ও ফিড দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশন অ্যাক্টিভিটির চিফ অব পার্টি ড. ম্যালকম ডিকসন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এসিআই এবং ওয়ার্ল্ডফিশ যৌথভাবে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘রূপালি’ বাস্তবায়ন করবে, যার ফলে দেশের ক্ষুদ্র মাছচাষী ও স্থানীয়ভাবে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন- মাছের খাদ্য বিক্রেতা, অ্যাকোয়া রাসায়নিক বিক্রেতা, হ্যাচারি মালিক, পুকুরের যান্ত্রিকীকরণ উপকরণ বিক্রেতা, মাছের পাইকারি বিক্রেতা, সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সম্প্রসারণ সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা এবং গবেষকরা মৎস্যচাষ ও অ্যাকোয়াকালচার সংক্রান্ত সামগ্রিক তথ্য সহায়তা পাবেন। ২০১৯ সালের দ্বিতীয়ভাগ থেকে মোবাইল অ্যাপ, ওয়েবসাইট, খুদেবার্তা, আউটবাউন্ড ও ইনবাউন্ড কল সেন্টারের সহায়তায় ‘রূপালি’ প্ল্যাটফর্মটি একজন মাছচাষীর জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে; মাছ চাষের পরিকল্পনা থেকে বাজারে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সকল পরামর্শ প্রদান করা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন রূপালি প্রকল্পের দলনেতা ও এসিআই এগ্রিবিজনেস-এর জেনারেল ম্যানেজার শামীম মুরাদ।

এ প্রসঙ্গে সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মোঃ রাশেদুল হক বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশে এর মাধ্যমে মৎস্যচাষেও ডিজিটালাইজেশনের ছাপ লেগেছে, যা দেশের মৎস্যখাতকে আরও অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি আশা করি, ‘রূপালি’র মাধ্যমে মাছচাষীরা আরও অনেক সহজে উন্নত তথ্য সেবা পেয়ে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবেন”।

ওয়ার্ল্ডফিশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ম্যালকম ডিকসন বলেন, “দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মাছ চাষীদের সহায়তায় এসিআই নির্মিতব্য ‘রূপালি’ প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হতে পেরে ফিড দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশন এ্যাক্টিভিটি খুবই আনন্দিত। সঠিক তথ্যের প্রাপ্যতা মৎস্যচাষী ও এই ভ্যালুচেইনে যুক্ত সকল অ্যাক্টরদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসিআই’র পরামর্শদানকারী প্ল্যাটফর্ম রূপালি, বাংলাদেশের মৎস্য সেক্টরের সাথে জড়িতদের জন্য প্রয়োজনীয় ও কার্যকর তথ্য প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। আর এর মাধ্যমে এই সেক্টরের সাথে জড়িত ছোট-বড় সকলের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সহজ হবে”।

এসিআই এগ্রিবিজনেস এর এমডি এবং সিইও ড. ফা হ আনসারী বলেন, “কৃষকের জন্য সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসাই এসিআই এগ্রিবিজনেস এর ব্যবসায়িক মূলমন্ত্র। এ লক্ষ্যপূরণে এসিআই ক্ষুদ্র মাছচাষী ও তাদেরকে স্থানীয়ভাবে সেবাদাতাদের জন্য ডিজিটাল পরামর্শ সেবা নিয়ে আসতে যাচ্ছে। আমরা আশাবাদী যে ‘রূপালি’র সাথে থেকে চাষীরা উৎপাদনশীলতা ও মুনাফা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবেন। আমরা সব অংশীজনকে এই প্ল্যাটফর্মে যোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছি।”

পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে এসিআই; প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও পরিবীক্ষণ, অ্যাকোয়াকালচারের বৈশ্বিক উত্তমচর্চা সংক্রান্ত জ্ঞান ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করবে ওয়ার্ল্ড ফিশ। আমেরিকান দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি ফিড দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশন অ্যাক্টিভিটি এবং এসিআই এর যৌথ অর্থায়নে এই কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। এ বছরের শুরুতে এসিআই ক্ষুদ্রায়তন ধানচাষীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় ‘ফসলি’ নামের আরেকটি প্ল্যাটফর্ম। চলতি মৌসুমে ৪,২০০টি কৃষক সংঘের ১ লক্ষের বেশী কৃষক সদস্য মোবাইল ফোনে ফসলি’র পরামর্শ অনুসরণ করে আমন ধান চাষ করেছেন এবং ইতোমধ্যে ফসল ঘরে তুলতে আরম্ভ করেছেন।

Exit mobile version