TechJano

যশোরে পোস্ট বিপিও সামিটে কি হল?

বিপিও সামিট শেষ হয়েছে মাসখানেক আগে, এবার তার ফলোআপ। কি কি লাভ হচ্ছে এতে? যশোরে পোস্ট বিপিও সামিট দিয়ে গত হয়ে যাওয়া বিপিও সামিটের রেশ টানা হল। বিপিও সামিটের বিজ্ঞপ্তিতে ওই পোস্ট সামিটের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
চলতি বছরের ১৫-১৬ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সফলভাবে অনুষ্ঠিত বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৮। তারই ধারাবাহিকতায় ৩০ মে বুধবার যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক অডিটরিয়ামে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় ‘পোস্ট বিপিও সামিট ২০১৮’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল। এ সময় তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বের সুফল হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে। অনুন্নত দেশের তালিকা থেকে আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছি। সম্প্রতি জাতিসংঘ এর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষপে গ্রহন। তরুণদের কে প্রযুক্তিতে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, বিপিএম, পিপিএম (বার), পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম চাকলাদার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সিস্টেম ম্যানেজার (যুগ্ম সচিব) মো. মহসিনুল আলম (যুগ্ম-সচিব), পরিচালক রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোসিংয়ের (বাক্য) সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিপিও খাতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। এবং প্রায় ৪০ হাজার তরুণ-তরুণী এখন এই সেক্টরে কাজ করছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে ২০২১ সাল নাগাদ এই খাতে এক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো। সরকার ইন্টারনেটের দাম কমিয়েছে, অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ করেছে। ২০০৮ সালে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ, বর্তমানে সেই সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। কেবল গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ানোই নয়, ব্যবহারকারীদের জন্যে ইন্টারনেট যেন নিরাপদ হয় সেজন্যেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৫ সালে যে ব্যান্ডউয়িথের দাম ছিলো ৭৫ হাজার টাকা, সরকার এখন তা এক হাজার টাকার নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। মোবাইল ফোন ইন্টারনেটে আমরা ফোরজি সেবা চালু করেছি; অচিরেই একে ফাইভজিতে উন্নিত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আমাদের দেশের প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে বলে জানান বক্তারা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও এতে আয়োজনে ছিলো, সম্ভাবনাময় কর্মক্ষেত্রের নতুন দিগন্ত : বিপিও; শীর্ষক সেমিনার। এতে বক্তব্য রাখেন বাক্যের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল হক, এসইআইপি-বাক্যর প্রধান সমন্বয়ক মাহতাব হক, সংগীত শিল্পী ও ইউটিউবার ইমরান হোসেন। সেমিনার মডারেট করবেন আমরা টেকনোলজিসের কৌশলগত কর্মকর্তা সোলায়মান সুখন প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠিত স্থানীয় পর্যায়ে বিপিও সেক্টর সম্প্রসারণে কৌশল নির্ধারণ ও করণীয় বিষয়ক গোলটেবিলে স্থানীয় শিক্ষাবিদ, আইসিটি পেশাজীবী ও ব্যসায়ী নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতের অবস্থানকে তুলে ধরার লক্ষে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে তৃতীয় বারের মতো আয়োজন করা হয়ে ছিলো দুই দিনের এ সামিট। সামিটের উদ্বোধন করেছেন আইসিটি উপদেস্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দিনের সামিটে মোট ১০টি সেমিনার ও একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ৬০ জন স্থানীয় স্পীকার, ২০ জন আন্তর্জাতিক স্পীকার অংশগ্রহন করে। দুই দিনের মূল্য আয়োজনের আগে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টিবেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার সামিটে প্রায় ৩০ হাজার দর্শনার্থী ও অংশগ্রহণকারী ছিল। দেশের সম্ভাবনাময় এই সেক্টরটিকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে যশোরে এই পোস্ট সামিট অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ কল সেন্টার ও আউটসোর্সিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ। তিনি আরও জানান আগমী ১০ জুন চট্টগ্রামের স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমন্যাসিয়ামে চট্টগ্রাম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর (উড়ওঈঞ) এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর আয়োজনে এই সামিট অনুষ্ঠিত হয়।

Exit mobile version