শিশুদের জন্য বাছাইকৃত ভিডিও দেখানোর জন্য নতুন একটি সংস্করণ আনতে যাচ্ছে ভিডিও দেখার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইউটিউব। নতুন এ সংস্করণে শিশুরা ইউটিউবে কী দেখতে পাবে, তা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন অভিভাবকেরা। আগামী সপ্তাহেই চালু হওয়ার কথা রয়েছে ইউটিউব কিডস নামের সংস্করণটির। তবে এর মাধ্যমে অপ্রাপ্ত বয়সী দর্শকদের তথ্য অবৈধভাবে সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। গত সোমবার শিশু, ভোক্তা এবং গোপনীয়তা প্রতিরক্ষাবিষয়ক ২০টি দল একত্রে এ অভিযোগ করেছে। তাদের অভিযোগ, শিশু অনলাইন গোপনীয়তা সুরক্ষা আইনের লঙ্ঘন করেছে ইউটিউব। এ আইনের আওতায় ১৩ বছরের কম বয়সী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করার কিছু নীতিমালা রয়েছে। কোনো অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এ ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করতে চাইলে তা অবশ্যই শিশুর অভিভাবককে জানিয়ে করতে হবে। আর এ নিয়ম না মেনেই কম বয়সী ইউটিউব ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করার অভিযোগ করা উঠেছে গুগল মালিকানাধীন ইউটিউবের ওপর।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ‘গুগল ইউটিউবে শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ এবং ব্যবহার থেকে যথেষ্ট লাভ করেছে। তারা অনেক বছর ধরেই লাখ লাখ মার্কিন শিশুর তথ্য সংগ্রহ করে চলছে, যা বেআইনি।’ অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রায় ২৩ কোটি শিশু ব্যবহারকারীর তথ্য ইউটিউব অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে বলে জানায় অভিযোগকারীরা। আর তার জন্য তদন্ত শেষে ১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করার জন্যও বলা হয়েছে। শিশুদের তথ্য নিয়ে বিজ্ঞাপনদাতাদের দেওয়া হয়। তবে সেটা অপ্রাপ্তবয়স্কদের কথা উল্লেখ না করেই। ইউটিউবের নীতিমালায় বলা আছে, সেটি ১৩ বছর বয়স নয় এমন কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ইউটিউব ব্যবহারে অবশ্যই গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হবে এবং তাকে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে যে সে ১৩ বছরের বেশি বয়সী। তবে এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইউটিউবে বয়স সীমাবদ্ধতা নেই এমন ভিডিও গুগল অ্যাকাউন্ট ছাড়াও দেখা যায়। শিশুরা হয় তাদের অভিভাবকের গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে নয়, বয়স নিয়ে মিথ্যা বলে অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলে। আর প্রায় ৪৫ শতাংশ ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের নিজেদের গুগল অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
এদিকে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গুগলের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকেই শিশুদের জন্য আলাদা ইউটিউব অ্যাপ রয়েছে, যা সব নীতিমালা অনুসরণ করে। শিশু ও পরিবারের সুরক্ষা সব সময় আমাদের জন্য একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার হয়েছে।’ তবু অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন গুগলের মুখপাত্র। যদি সত্যিই কোনো ভুল থাকে, তবে তা সংশোধনের জন্য গুরুত্ব দেবে গুগল।