বাংলাদেশের আকাশ থেকে আজ বছরের দ্বিতীয় পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণটি দেখা যাবে। শুক্রবার রাতে এই চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। এটি হবে একুশ শতকের (২০০১-২১০০) সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ।এ চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে ১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ধরে। এই শতাব্দীতে এটিই দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ। দেখা যাবে ‘ব্লাড মুন’ বা রক্তাভ চাঁদও। এর মাধ্যমে বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ব।
ঢাকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী এই চন্দ্রগ্রহণের উপচ্ছায়া পর্যায় শুরু রাত ১১টা ১৪ মিনিটে, আংশিক চন্দ্রগ্রহণ শুরু রাত ১২টা ২৪ মিনিটে, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু রাত ১টা৩০ মিনিটে, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ সমাপ্ত রাত ৩টা ১৩ মিনিটে এবং আংশিক চন্দ্রগ্রহণ সমাপ্ত হবে রাত ৪টা ১৯ মিনিটে। এর স্থায়িত্ব হবে সর্বমোট ১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি যে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হয়েছিল তার স্থায়িত্বকাল ছিল ১ ঘন্টা ১৬ মিনিট। বাংলাদেশের পাশাপাশি এই চন্দ্রগ্রহণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড থেকেও দৃশ্যমান হবে।
চন্দ্রগ্রহণের সময় যখন সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে পৃথিবী একই সরলরেখায় চলে আসে, তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে। ফলে পৃথিবী থেকে মনে হয় চাঁদ ধীরে ধীরে ঢেকে যাচ্ছে। এবারের চন্দ্রগ্রহণের সময় কক্ষপথে পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব সব থেকে বেশি হবে (অপসূর অবস্থান)। ফলে পৃথিবীর ছায়াটিও দীর্ঘপথ জুড়ে থাকবে।
সেই দীর্ঘতম ছায়াপথটিকে অতিক্রম করতে চাঁদের বেশি সময় লাগবে। তাই ২৭ জুলাইয়ের চন্দ্রগ্রহণ বেশ সময় ধরে চলবে। গ্রহণ চলাকালীন চাঁদকে অনেকটা তামাটে বা লালচে চাকতির মতো মনে হবে। এর কারণ হল সূর্যের কিছু আলো পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের মধ্যে দিয়ে বিচ্ছুরিত হয়ে চাঁদের ওপর পড়ে। লাল রঙ তুলনামূলকভাবে কম বিচ্ছুরিত হয় বলে সেটা চাঁদের উপর পড়ে, এই কারণে গ্রহণের চাঁদকে লাল দেখায়।
সূর্যগ্রহণ খালিচোখে দেখা অত্যন্ত ক্ষতিকর হলেও চন্দ্রগ্রহণ খালিচোখে দেখা ক্ষতিকর নয়। চন্দ্রগ্রহণ দেখতে বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপ আবশ্যক নয়, তবে পরিষ্কার তথা ভালোভাবে দেখতে সেগুলোর ব্যবহার করা যেতে পারে। ছবি তোলার জন্য যেকোন জুমলেন্সসহ ক্যামেরাই যথেষ্ট।
বর্ষার জন্য আকাশ মেঘলা থাকলে দেখা যাবে না পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, এই আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তবে, গ্রহণ চলবে দীর্ঘক্ষণ। তাই কোনও না কোনও সময় আকাশ খুলবেই, এই আশাতেই হয়ত রাতভর আকাশপানে চাইবেন দেশবাসী।
চন্দ্রগ্রহণ ছাড়াও এ মাসেই সৌরজগতের আরও একটি ঘটনা ঘটবে। মঙ্গলের অবস্থান হবে সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে। অর্থাৎ পৃথিবীর খুব কাছেই আসবে লাল গ্রহ মঙ্গল। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে বিকেল থেকে ভোর পর্যন্ত খালি চোখেই দেখা যাবে মঙ্গল গ্রহ।
আরও পড়ুন: