শাওমি ভক্তদের চমক দেবে আগেই জানা কথা। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান শাওমি আজ (১৭ জুলাই, ২০১৮) থেকে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। একই সাথে রেডমি এস ২ নামের নতুন একটি স্মার্টফোনও অবমুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। রেডমি এস সিরিজের এই স্মার্টফোনটির রয়েছে ব্যতিক্রমী সব সেলফি সুবিধা এতোদিন সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশ লিমিটেড–এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসা করেছে শাওমি। এবার গ্রাহক সেবার মান আরও বাড়াতে এবং বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এসইবিএলের সাথে সমন্বিতভাবে সরাসরি ব্যবসা করবে তারা।
আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর সাথে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় শাওমির এমআই কমিউনিটিও বাংলাদেশে চালু হয়েছে। এমআই কমিউনিটি মূলত এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে এমআই ফ্যানরা যুক্ত হতে পারবেন এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারবেন। এ ছাড়া এমআই ফ্যানরা শাওমির নিজস্ব সাইটে (Mi.com/bd) প্রবেশ করে বাংলাদেশে শাওমির সর্বশেষ পণ্য ও অফার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
বাংলাদেশে শাওমির আনুষ্ঠানিক যাত্রা সম্পর্কে শাওমির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাওমি ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মানু জেইন বলেন, বাংলাদেশের লাখ লাখ এমআই ফ্যানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে শাওমি নিয়ে আসতে পারায় দারুণ লাগছে। আমরা দেখেছি, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের স্মার্টফোন বাজারের পরিধি বিস্ময়কভাবে বেড়েছে, এই প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল । আমরা বাংলাদেশের বাজারে শেয়ারের পরিমাণ বাড়াতে চাই। লাখ লাখ মি ফ্যানের ভালোবাসাকে সঙ্গী করে বাংলাদেশের বাজারে শাওমিকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে প্রবেশের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দামে শাওমির সর্বশেষ সব পণ্য বাংলাদেশে নিয়ে আসতে পারবো। আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং সেজন্য এখানে শক্তিশালী একটি দল গঠন করা হবে।
মানু জেইন জানান, শাওমি বাংলাদেশেও স্মার্টফোন নির্মাণের জন্য কারখানা খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে এজন্য খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে প্রতিবেশি দেশ ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে শাওমির ফোন।
মানু জেইন বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের জন্য শাওমি ভিন্ন ভিন্ন ফিচার সম্বলিত কাস্টমাইজড ফোন তৈরি করে। এরই ধারাবাহিকতায় চীন ছাড়াও ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরে নিজস্ব কারখানা রয়েছে। বাংলাদেশের মত গ্রোয়িং মার্কেট ধরতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য অদূর ভবিষ্যতে এখানে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।’
মানু জেইন আরো বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের স্মার্টফোনের বাজারে বেড়েছে। এই বাজারের শাওমি ৪ শতাংশ জায়গা দখল করে আছে। যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।’
মানু জেইন জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রার পর প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য বাংলাদেশের বাজারে কম দামে শাওমি ফোন পৌঁছে দেয়া।
সেলফির জন্য সবচেয়ে ভালো রেডমি ফোন
ব্যতিক্রমী সেলফি সুবিধাসম্পন্ন রেডমি এস-২ এর ফ্রন্ট ক্যামেরা ১৬ মেগাপিক্সেলের। দিনের আলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে রেডমি এস-২ এর ক্যামেরা খুব ভালো মানের ছবি ধারণ করতে সক্ষম। অল্প আলোয় ভালো মানের ছবির জন্য সেন্সরটি পিক্সেল বিনিং টেকনোলজি ব্যবহার করে। যে কারণে ছবির ওপর আলোক স্বল্পতা কোনও প্রভাব ফেলতে পারে না। এর সেলফি লাইট অনেকটা দিনের আলোর মতোই। ফলে এটা দিয়ে দারুণ সব পোট্রেইট ছবি তোলা সম্ভব।
দিনে-রাতে যেকোনও সময় ভালো ছবির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) ডুয়াল ক্যামেরা
রেডমি এস ২ এর পেছন দিকে রয়েছে ১২ ও ৫ মেগাপিক্সেলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন দুটি ক্যামেরা। ১২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাটিতে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যাতে অল্প আলোতেও অধিক উজ্জ্বল ছবি তোলা যায়। অন্যদিকে ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাটি দেওয়া হয়েছে অন্যান্য কাজ যেমন ইফেক্ট সমন্বয়ের জন্য।
পোট্রেইট মুডে ফ্রন্ট এবং ব্যাক দুটি ক্যামেরাই এআই বিউটিফাই সাপোর্ট করে। এই বিউটিফাই চেহারায় মেকাপ চিহ্নিত করতে সক্ষম এবং এটা সেই মেকাপ অক্ষত রাখে। এ ছাড়া জনপ্রিয় সেলফি এক্সপ্রেশনগুলোকে আরও সুন্দর দেখানোর জন্যও এতে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
ডিসপ্লে ও অন্যান্য
রেডমি এস ২ এর ৫ দশমিক ৯৯ ইঞ্চির ফুল স্ক্রিন ডিসপ্লে রয়েছে। এতে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে।
দাম এবং যেখানে পাবেন
গোল্ড, রোজ গোল্ড ও ডার্ক গ্রে- এই তিনটি কালারে রেডমি এস-২ কিনতে পারবেন গ্রাহকরা। এই স্মার্টফোনের দুটি ভার্সন রয়েছে। ৩ গিগা+৩২ গিগা ভার্সনটি ১৪,৯৯৯ টাকায় এবং ৪ গিগা+৬৪ গিগা ভার্সনটি ১৭,৯৯৯ টাকায় কেনা যাবে। ২৬ জুলাই দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী দুই সপ্তাহ শুধু দারাজ ডট কম এবং এরপর দেশের সব খুচরা বিক্রয় কেন্দ্র থেকে থেকে এটা কিনতে পারবেন গ্রাহকরা।
এক নজরে শাওমি কর্পোরেশন
২০১০ সালে লে জনের নেতৃত্বে দক্ষ একদল ইঞ্জিনিয়ার ও ডিজাইনারের সমন্বয়ে শাওমি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য, সারা বিশ্বের সব মানুষের জীবনকে আরও উন্নত ও সহজ করতে সাধ্যের মধ্যে ভালো মানের পণ্য তৈরিতে নিরসলভাবে কাজ করা। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৭০টিরও বেশি দেশে শাওমির উপস্থিতি রয়েছে।