ঢাকা মহানগরীর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। যা আগামী ১৯ ডিসেম্বর শেষ হবে। এছাড়া আগামী ২০ ডিসেম্বর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির লটারি সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। এছাড়া গত রোববার (২৫ নভেম্বর) ভর্তি নীতিমালাও প্রকাশ করেছে মাউশি।
পরীক্ষার তারিখ:
নির্বাচনের আগেই রাজধানীর সরকারি স্কুলের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করলো শিক্ষা অধিদপ্তর। ১৭, ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর তিনটি ভাগে ভাগ করে রাজধানীর ৪১টি স্কুলের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর প্রথম শ্রেণিতে লটারি অনুষ্ঠিত হবে ২০ ডিসেম্বর। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবদুল মান্নান এ তথ্য জানিয়েছেন। নির্বাচনের কারণে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিল। পরে নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এবার ঢাকার ৩৮টি সরকারি হাইস্কুলে ১২ হাজার ৩৬৬টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাইস্কুলে প্রথমশ্রেণিতে ১ হাজার ৯৬০টি আসন রয়েছে। এর বাইরে আরও ৩টি হাইস্কুলে এবার প্রথমবার শিক্ষা কর্যক্রম শুরু করা হবে।
২য় শ্রেণিতে ৮৪৯টি, ৩য় শ্রেণিতে ২ হাজার ১২৬টি, ৪র্থ শ্রেণিতে ৮২২টি, ৫ম শ্রেণিতে ৮৪৯টি, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ হাজার ৫৫৭টি, ৭ম শ্রেণিতে ৭৩৮টি, ৮ম শ্রেণিতে ৯৯৭টি এবং ৯ম শ্রেণিতে ৪৬৮টি আসন রয়েছে। এবার নবনির্মিত হাজী এমএ গফুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সবুজবাগ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং শহীদ মনু মিঞা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষ্যে হেল্প ডেস্ক খোলা হবে।
এ বছরও রাজধানীর সরকারি হাইস্কুলগুলো তিন গ্রুপে ভাগ করে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ৪১টি হাইস্কুলের মধ্যে ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপে ১৪টি করে এবং ‘গ’ গ্রুপে ১৩টি হাইস্কুল আছে। এবার রাজধানীর মোট ১৭টি হাইস্কুলে প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বাকি স্কুলগুলোর কোনোটি দ্বিতীয় আবার কোনোটি তৃতীয় বা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমন্ডি গভ. ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয়, ধানমন্ডি গভ. বয়েজ উচ্চ বিদ্যালয়, ধানমন্ডি গভ. বয়েজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ফিডার শাখা, তেজগাঁও বালক উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল বালক উচ্চবিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি হাইস্কুল, খিলগাঁও সরকারি হাইস্কুলের ফিডার শাখা, নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত উচ্চবিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও গণভবন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।
প্রসঙ্গত, এবার ঢাকার ৪১টি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এগুলোকে তিন গ্রুপে ভাগ করে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা হবে। ৪১টি হাইস্কুলের মধ্যে ‘এ’ এবং ‘বি’ গ্রুপে ১৪টি করে এবং ‘সি’ গ্রুপে ১৩টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৩৮টি বিদ্যালয়ে ১২ হাজার ৩৬৬টি আসন রয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৭ ডিসেম্বর ‘এ’ গ্রুপের বিদ্যালয়গুলোর এবং ‘বি’ গ্রুপের মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ফিডার শাখার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা, সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা এবং দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া আগামী ১৮ ডিসেম্বর ‘বি’ গ্রুপের বিদ্যালয়গুলোর এবং ‘সি’ গ্রুপের ধানমন্ডি গভ. বয়েজ স্কুলের ফিডার শাখার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা, সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা এবং দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সবশেষ আগামী ১৯ ডিসেম্বর ‘সি’ গ্রুপের বিদ্যালয়গুলোর এবং ‘এ’ গ্রুপের খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ফিডার শাখার ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা, সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা এবং দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে আগামী ২০ ডিসেম্বর সরকারি স্কুলগুলোতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এদিন প্রভাতী শাখার পরীক্ষা সকাল ১০টায় এবং দিবা শাখার পরীক্ষা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের শূন্য আসনে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
কোটা সংরক্ষণ:
ঢাকা মহানগরীতে সরকারি বিদ্যালয়ে ওই এলাকার ৪০ শতাংশ কোটা রেখে অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ১০ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা সন্তানদের ছেলে-মেয়ের জন্য ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের জন্য ২ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোর অবস্থান, শিক্ষার্থীদের সুবিধা/অসুবিধা বিবেচনা করে পরীক্ষা কমিটি বিদ্যালয়গুলোকে বিভিন্ন ক্লাস্টারে বিভক্ত করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা আবেদন ফরমে পছন্দক্রম উল্লেখ করে দেবে।
ভর্তি ফরম:
ভর্তির ফরম বিদ্যালয়ের অফিসে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, ডিসি অফিস, বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। এবার ভর্তির আবেদন ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা। সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ফি থেকে বেশি হবে না।
আবেদন কার্যক্রম পরিচালিত হবে টেলিটকের মাধ্যমে। www.dshe.gov.bd এবং www.teletalk.com সাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। ঢাকা মহানগর এবং ঢাকার বাইরের প্রায় সাড়ে ৩শ’ স্কুলের ভর্তি কার্যক্রম আলাদাভাবে সম্পন্ন হবে। প্রথম শ্রেণির ভর্তিতে শিক্ষার্থীর বয়স জানুয়ারিতে ছয় বছরের বেশি হতে হবে।
তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক,বিডি-জার্নাল