ওয়ালটন কারখানায় মালিক-শ্রমিকের মধ্যে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক দেখলাম। বিশেষ করে, শ্রমিকদের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ওয়ালটন দেশী-বিদেশী কোম্পানির জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, বললেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।
গত বুধবার ১ আগস্ট, ২০১৮ গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করলেন। ওয়ালটন কারখানার ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখানকার শ্রমিকরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছে। কারখানায় মালিক-শ্রমিকের মধ্যে এরকম বন্ধুত্বসুলভ পরিবেশ তৈরি করায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান কাজী রিয়াজুল হক।
শ্রমিকদের মধ্যে প্রফিট শেয়ারিং (লভ্যাংশ বন্টন) এর বিষয় জানতে পেরে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, দেশে অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি বিশেষ করে ইউরোপের কিছু কোম্পানি রয়েছে যারা তাদের কারখানায় শ্রমিকদের মাঝে লভ্যাংশ বন্টন করেনা। কিন্তু, দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন তাদের অর্জিত লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ শ্রমিকদের মাঝে বন্টন করছে, এটা বিশাল ব্যাপার। ওয়ালটন কারখানায় কোনো ধরণের শিশু শ্রম না থাকায় ওয়ালটনের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
কাজী রিয়াজুল হক আরো বলেন, দেশে ওয়ালটন কারখানা গড়ে উঠায় আমদানি বিকল্প দেশীয় পণ্য উৎপাদন বেড়েছে, প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেক মানুষের জন্য ব্যবসার ক্ষেত্রও তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও আইসিটি পণ্য উৎপাদন খাতের ক্রমবিকাশ, কারখানায় শ্রমিকদের উপস্থিতি ও সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে বুধবার সকালে ওয়ালটন কারখানা কমপ্লেক্স পরিদর্শনে আসেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
এসময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব হিরন্ময় বাড়ৈ, আল-মাহমুদ ফায়জুল কবির, পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) (জেলা ও দায়রা জজ), কাজী আরফান আশিক, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ), উপ-পরিচালক মোহাম্মদ গাজী সালাউদ্দিন ও এম রবিউল ইসলাম, গনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ।
অতিথিরা ওয়ালটন কারখানায় পৌঁছলে তাদেরকে স্বাগত জানান ওয়ালটন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম শামসুল আলম।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এসএম জাহিদ হাসান, সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ওয়ালটন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম শামসুল আলম বলেন, বর্তমান সরকারের শিল্প-বান্ধব সহযোগিতায় সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়ে আরো অনেক উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কারখানায় নারী শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে বিশেষ করে তৃতীয় লিঙ্গের লোকেদের কর্মসংস্থানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন হবে।
অতিথিরা ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে ওয়ালটন গ্রæপের উপর নির্মিত ডক্যুমেন্টারি উপভোগ করেন। ঘুরে দেখেন ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার। এসময় কাজী রিয়াজুল হক ওয়ালটনের তৈরি ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির ফ্রিজের আকর্ষণীয় ডিজাইন ও নিঁখুত ফিনিশিং দেখে অভিভূত হন। তিনি ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ অপারেট করে দেখেন এবং এর উচ্চ গুণগমতমান, অত্যাধুনিক ফিচার ও স্টাইলিশ ডিজাইনের প্রসংশা করেন।
অতিথিরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন ওয়ালটনের পরিবেশ-বান্ধব আর৬০০এ গ্যাসযুক্ত গ্রীণ রেফ্রিজারেটর উৎপাদন ইউনিট, ফ্রিজ কম্প্রেসারসহ ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশন, ওয়ালটন ডিজি-টেকের বিশাল কর্মযচজ্ঞ। ঘুরে দেখেন ওয়ালটন মেডিক্যাল সেন্টার ও ডাইনিং। তারা ওয়ালটন কারখানায় শ্রমিকদের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।