দেশে আলীবাবা বা আমাজন আসার সুখবর ই-কমার্স খাতে যেমন সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিল ৫ শতাংশ ভ্যাট বসার খবরে তেমনি চুপসে যেতে পারে এ খাতের অবস্থা। ই-কমার্স খাতকে উন্নয়নশীল দেখিয়ে, বেসিস ও ইক্যাবের পক্ষ থেকে ভ্যাট মওকুফ চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু ফল কি দাঁড়াবে?
টেকশহর ডটকম তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, অনলাইন কেনাকাটায় অর্থাৎ ই-কমার্স বা এফ-কমার্স সবখানেই ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বসতে পারে। আসছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে এই ভ্যাটের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে। এবার অনলাইন কেনাকাটা ও সেবাগুলোকে নিয়ে ভাচুর্য়াল বিজনেস নামে একটি সেবার সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আর এই ভার্চুয়াল বিজনেস সেবার ওপরই বসছে ৫ শতাংশ ভ্যাট।
এর আগে ২০১৫-১৬ বাজেট ঘোষণায় ই-কমার্সকে প্রথমবারের মতো সুনির্দিষ্ট করে ভ্যাটের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তখন ই-কমার্সে ভ্যাটের হার ৪ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছিলো। কিন্তু পরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর দাবিতে অর্থমন্ত্রী এই খাতকে শৈশব সময় ধরে ভ্যাট প্রত্যাহার করেন।এরপর দুই অর্থবছরে এই খাতে আর ভ্যাট আরোপ করা হয়নি।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আজকের ডিলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাসরুর বলেন, দেশীয় ই-কমার্সগুলো অনেক টাকা লোকসান দিচ্ছে। বিদেশিদের বিপুল বিনিয়োগ বা অসম প্রতিযোগিতার মুখে তারা কোনো মতে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন যদি এই ভ্যাট বসানো হয় তাহলে এই খাত আর এগুবে না।‘ এফ-কমার্সসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম এখনও নিবন্ধিত নয়। সেক্ষেত্রে অনলাইনে যারা নিবন্ধিত হয়ে ব্যবসা করছে তাদের ব্যবসা গোটাতে হবে।
বাগডুম ডটকমের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান বলেছেন, এমনিতেই বিদেশিদের আগ্রাসনে দেশীয় ই-কমার্সগুলো রুগ্ন অবস্থায়। এখন যদি এই ভ্যাট আরোপ করা হয় তাহলে এখানে ভবিষ্যত বলে কিছু থাকবে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন খাতগুলোর ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স ছাড় দেয়ার ৮-১০ বছরের জন্য। যেন খাতটি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। দেশে যখন সব প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে আসছে, যেখানে সরকারের দীর্ঘমেয়াদে রেভিনিউ আর্নিংয়ের টেকসই সিস্টেম তৈরি হচ্ছে- সেখানে এই সিদ্ধান্ত সব ভেস্তে দেবে।
প্রিয়শপের সিইও আশিকুল আলম খান বলেন, অ্যামাজন, স্ন্যাপডিল, ফ্লিপকার্টের মতো কোম্পানিগুলো ভ্যাট-ট্যাক্স ছাড় পেয়ে আজ বড় হয়েছে । ক্রেতা দেখতো অনলাইনে কেনাকাটা করলে ভ্যাট দিতে হতো না, তাই সে অনলাইনে শপিং করতে আগ্রহী হতো। কিন্তু এখন এখানে ভ্যাট বসালে এই আগ্রহ আর থাকবে না। অন্যদিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও সম্প্রতি এই খাতে দেশে এসেছে, তাদের কাছেও এটি ভাল বার্তা হবে না।