বিজয় অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী ১০ লাখ বা এক মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এক ফেসবুক পোস্ট লিখেছেন, অভিনন্দন ১০ লাখের বেশি বিজয় অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীকে। এটি বিনা মূল্যে ডাউনলোড করা যায়। Bijoy Bangla বিজয় বাংলা নামের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ গুগল প্লেস্টোরে রয়েছে।
মন্ত্রীর পোস্টে একজন লিখেছেন, স্যার যুক্তক্ষরে কিছু সমস্যা হয় ্েি্িি্িি্িা ই লিখতে এই সমস্যা। রেফ সমস্যা আরও অনেকগুলি । কিছু আপডেট প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়। জবাবে মোস্তাফা জব্বার লিখেছেন- সহসাই পাবে।
মোস্তাফা জব্বারকে বিজয় কিবোর্ডের জনক বলা হয়।
বিজয় কিবোর্ড (Bijoy Keyboard) হচ্ছে বাংলার প্রথম কিবোর্ড।
এর মাধ্যমে সাধারণ ইংরেজি কিবোর্ড ব্যবহার করে বাংলা লেখা যায়, বাংলা বর্ণের কোন বিকৃতি না করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রীপ্রাপ্ত মোস্তাফা জব্বার বিজয় বাংলা কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এর প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করেন ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৮৮ সালে। সেটি প্রথমে মেকিন্টোস কম্পিউটারের জন্য প্রণয়ন করেন।
পরবর্তীতে ২৬শে মার্চ ১৯৯৩ সালে তিনি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্যও বিজয় বাংলা কিবোর্ড ও সফটওয়্যার প্রকাশ করেন।
উইকিপিডিয়ায় বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করা হয় বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। এরপর এই অ্যাপটি নিয়ে তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন মোস্তাফা জব্বার। সেই স্ট্যাটাসে এই জাতীয় অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে বিজয় বাংলা কি-বোর্ড লেআউট অবৈধভাবে ব্যবহারের অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে গুগলের পক্ষ থেকে রিদ্মিক এবং ইউনিবিজয় কীবোর্ডের ডেভেলপারের কাছে পৃথকভাবে ইমেইল নোটিশ পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, মোস্তাফা জব্বার অ্যাপ দুটির বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়েছেন গুগলের কাছে। আর এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই গুগল যুক্তরাষ্ট্রের ডিএমসিএ আইন অনুসারে অ্যাপ দুটি অপসারণ করেছে। পরে নতুন লে আউট করে প্লেস্টোরে আবারও রিদ্মিক কিবোর্ড প্রকাশ করা হয়।
বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার করে বাংলা লেখার পদ্ধতি:
কম্পিউটারে বিজয় সফটওয়ারটি সঠিক ভাবে ইন্সটল করার পর বাংলা লেখার জন্য কিবোর্ড পরিবর্তন করে বিজয় এ রুপান্তর করে নিতে হবে। তবে তার আগে একটি বাংলা ফন্ট নির্বাচন করতে হবে। যেমন SutonnyMJ ফন্টটি সিলেক্ট করার পর কিবোর্ড থেকে Ctrl+Alt+B প্রেস করে কিবোর্ড পরিবর্তন করতে হবে। এই ফন্ট সেটআপটি বাংলায় ঠিকমত কনভার্ট হয়েছে কিনা সেটি দেখতে Shift+F প্রেস করুন। যদি আপনার ফন্ট সেটআপটি ঠিক হয় তাহলে বাংলা বর্ণমালার প্রথম বর্ণ ‘অ‘ দেখাবে।
বাংলা থেকে পুনরায় ইংলিশ ফন্টে আসতে হলে আবার Ctrl+Alt+B প্রেস করতে হবে এবং ফন্টকেও পরিবর্তন করে যেকোন একটি ইংরেজি ফন্ট নির্বাচন করতে হবে। যেমন Calibri ফন্টটি সিলেক্ট করলে পুনরায় ইংলিশ টাইপ করা যাবে। এবার বিজয় কিবোর্ডের দ্বারা বাংলা বর্ণমালাসমূহ লেখার নিয়ম দেখি।
স্বরবর্ণ শব্দ লিখবেন যেভাবে:
→ অ = Shift+F
→ আ = G+F
→ ই = G+D
→ ঈ = G+(Shift+S)
→ উ = G+S
→ ঊ = G+(Shift+S)
→ ঋ = G+A
→ এ = G+C
→ ঐ = G+(Shift+C)
→ ও = X
→ ঔ = G+(Shift+X)
ব্যঞ্জনবর্ণ শব্দ লিখবেন যেভাবে:
→ ক = J
→ খ = Shift+J
→ গ = O
→ ঘ = Shift+O
→ ঙ = Q
→ চ = Y
→ ছ = Shift+Y
→ জ = U
→ ঝ = Shift+U
→ ঞ = Shift+I
→ ট = T
→ ঠ = Shift+T
→ ড = E
→ ঢ = Shift+E
→ ণ = Shift+B
→ ত = K
→ থ = Shift+K
→ দ = L
→ ধ = Shift+L
→ ন = B
→ প = R
→ ফ = Shift+R
→ ব = H
→ ভ = Shift+H
→ ম = M
→ য = W
→ র = V
→ ল = Shift+V
→ শ = Shift+M
→ ষ = Shift+N
→ স = N
→ হ = I
→ ঢ় = P
→ য় = Shift+W
→ ৎ = Shift+/
→ ং = Shift+Q
→ ঃ = /
→ ঁ = Shift+7
অন্যান্য শব্দ লিখবেন যেভাবে:
→ া = F
→ ি = D
→ ী = Shift+D
→ ু = S
→ ূ = Shift+S
→ ৃ = A
→ ে = C
→ ৈ = Shift+C
→ ঔ-কার = Shift+X
→ রেফ = Shift+A
→ হশন্ত = G
→ দাড়ি = Shift+G
→ র-ফলা = Z
→ য-ফলা = Shift+Z
যুক্তাক্ষর লিখবেন যেভাবে:
→ ক্ত (ক+ত) = J+G+k ; যেমনঃ তক্তা
→ ক্ষ (ক+ষ) = J+G+(Shift+N) ; যেমনঃ ক্ষমা
→ হ্ম (হ+ম) = I+G+M ; যেমনঃ ব্রহ্মা
→ ক্ষ্ম (ক+ষ+ম) = J+G+(Shift+N)+G+M ; যেমনঃ লক্ষ্মী
→ জ্ঞ (জ+ঞ) = U+G+(Shift+I) ; যেমনঃ অজ্ঞ
→ ঞ্জ (ঞ + জ) = (Shift+I)+G+U ; যেমনঃ গুঞ্জন
→ ঞ্চ (ঞ + চ) = (Shift+I)+G+Y ; যেমনঃ চঞ্চল
→ ব্ব (ব+ব) = H+G+H ; যেমনঃ আব্বা
→ ত্ত (ত+ত) = K+G+K ; যেমনঃ মত্ত
→ ত্র = k+Z ; যেমনঃ ত্রাণ
→ হৃ (হ+ ঋ) = I+ ; যেমনঃ হৃদয়
→ ঘু = (Shift+O)+S ; যেমনঃ ঘুঘু
→ হু = I+S ; যেমনঃ হুংকার
→ শু = (Shift+M)+S ; যেমনঃ শুটকি
→ ক্র = J+Z ; যেমনঃ ক্রন্দন
→ ন্ত্র = B+G+K+Z ; যেমনঃ মন্ত্র
→ দ্ধ = L+G+(Shift+L) ; যেমনঃ উদ্ধার
→ দ্ভ = L+G+(Shift+H) ; যেমনঃ উদ্ভাবক
→ ক্স = J+G+N ; যেমনঃ কক্সবাজার
→ ক্ম (ক+ম) = J+G+M ; যেমনঃ রুক্মিণী
→ ক্ল = J+G+(Shift+V) ; যেমনঃ ক্লাস
→ ঙ্গ (ঙ+গ) = Q+G+O ; যেমনঃ অঙ্গন
→ চ্ছ = Y+G+(Shift+Y) ; যেমনঃ যথেচ্ছা
→ ক্ক = J+G+J ; যেমনঃ চক্কর
→ গ্ধ = O+G+(Shift+L) ; যেমনঃ মুগ্ধ
→ গ্ম = O+G+M ; যেমনঃ বাগ্মী
→ গ্র = O+Z ; যেমনঃ গ্রাস
→ গ্ল = O+G+(Shift+V) ; যেমনঃ গ্লাস
→ গ্রু = O+Z+S ; যেমনঃ গ্রুপ
→ ঙ্ক (ঙ+ক) = Q+G+J ; যেমনঃ অঙ্কন
→ ঙ্খ = Q+G+(Shift+J) ; যেমনঃ শঙ্খ
→ জ্জ = U+G+U ; যেমনঃ লজ্জা
→ দ্ম = L+G+M ; যেমনঃ পদ্মা
→ জ্জ্ব = U+G+(Shift+I) ; যেমনঃ উজ্জ্বল
→ ট্ট = T+T ; যেমনঃ চট্টগ্রাম
→ ন্ঠ = (Shift+B)+G+(Shift+T) ; যেমনঃ লণ্ঠন
→ ত্থ (ত+থ) = K+G+(Shift+K) ; যেমনঃ অশ্বত্থ
→ ত্ম = K+G+M ; যেমনঃ আত্ম
→ ত্ত্ব (ত+ত+ব) = K+G+K+G+H ; যেমনঃ তত্ত্বাবধায়ক
→ ত্রু = K+Z+S ; যেমনঃ ত্রুটি
→ দ্রু = L+Z+S ; যেমনঃ দ্রুত
→ ধ্রু = (Shift+L)+Z+S
→ ন্থ = B+G+(Shift+K) ; যেমনঃ গ্রন্থ
→ ন্ব = B+G+H ; যেমনঃ অন্বেষণ
→ ন্ম = B+G+M ; যেমনঃ জন্ম
→ ন্ট্রা = B+G+T+Z+F ; যেমনঃ কন্ট্রাক্টর
→ ন্ড্রু = B+G+K+Z ; যেমনঃ এন্ড্রু
→ ন্দ্র = B+G+L+Z ; যেমনঃ চন্দ্রিমা
→ ন্ধ = B+(Shift+L) ; যেমনঃ অন্ধ
→ ব্ধ = H+G+(Shift+L) ; যেমনঃ উপলব্ধি
→ ভ্রু = (Shift+H)+Z ; যেমনঃ ভ্রমণ
→ ভ্রু = (Shift+H)+Z+(Shift+S) ; যেমনঃ ভ্রুকটি
→ ম্ন = M+G+B ; যেমনঃ নিম্ন
→ মপ্ল = M+G+R+G+V ; যেমনঃ কমপ্লেইন
→ ল্কা = V+G+J+F ; যেমনঃ হাল্কা
→ শ্ম = (Shift+M)+G+M ; যেমনঃ শ্মশান
→ ষ্ক = (Shift+N)+G+J ; যেমনঃ পরিষ্কার
→ ষ্ঠ = (Shift+N)+G+(Shift+T) ; যেমনঃ সুষ্ঠু
→ ষ্প = (Shift+N)+G+R ; যেমনঃ নিষ্পাপ
→ ষ্ফ = (Shift+N)+G+(Shift+R) ; যেমনঃ নিষ্ফল
→ ষ্ট্র = (Shift+N)+G+T+Z ; যেমনঃ রাষ্ট্র
→ ষ্ণ = (Shift+N)+G+(Shift+B) ; যেমনঃ উষ্ণ
→ ষ্ম = (Shift+N)+G+M ; যেমনঃ গ্রীষ্ম
→ স্থ = N+G+(Shift+K) ; যেমনঃ অবস্থান
→ স্ত্র = N+G+K+Z ; যেমনঃ অস্ত্র
→ স্ক্রু = N+G+J+Z+S ; যেমনঃ স্ক্রু
→ স্ক্র = N+G+J+Z ; যেমনঃ স্ক্রিন
→ স্প্ল = N+G+R+G+(Shift+V) ; যেমনঃ স্প্লিন্টার
→ হ্ন = I+G+B ; যেমনঃ বহ্নি
→ স্ফ = N+G+(Shift+R) ; যেমনঃ স্ফীত
→ চ্ছ্ব = Y+G+(Shift+Y)+G+H ; যেমনঃ উচ্ছ্বাস
→ হ্ব = I+G+H ; যেমনঃ বিহ্বল
তথ্যসূত্র: ফেসবুক, উইকিপিডিয়া, টেকজুম ব্লগ।