মিডিয়াগুলোতে খবর পাওয়া যাচ্ছে, মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সংক্রান্ত নীতিমালা উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। গণপরিবহনের দুর্ভোগ লাঘবে কিছুটা স্বস্তি দিতেই বৈধতা পাচ্ছে ‘অ্যাপভিত্তিক যান সেবা’। এ সংক্রান্ত নীতিমালার নাম ‘রাইডশেয়ারিং সার্ভিস-২০১৭’। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে অবসর সময়ে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেটভিত্তিক অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ব্যক্তিগত মোটরযানকে ভাড়ায় পরিচালনা করা যাবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো নীতিমালায় বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহন চাহিদা ব্যবস্থা অপ্রতুল। যাত্রীদের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে ট্যাক্সিক্যাব আর সিএনজি অটোরিকশা। এ অবস্থায় যাতায়াতের জন্য কার্যকর ও সহজলভ্য বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা হচ্ছে রাইডশেয়ারিং। এটি মুঠোফোনে অ্যাপের মাধ্যমে গাড়ি ভাড়া করার পদ্ধতি। ব্যক্তিগত ব্যবহারের কেনা গাড়ি অনলাইন সেবার মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন করবে। এ সেবাকে বৈধতা দিয়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার অংশ হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে রাইডশেয়ারিং গাইডলাইন-২০১৭। যাতে চলমান এ সংক্রান্ত সেবাও আওতাভুক্ত হবে। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়, সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় চলবে এই সেবা। গাড়ি কেনার পর এক বছর নিজে চালাতে হবে, তারপর সেবা দেয়া সম্ভব হবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকারি ফি হিসেবে, মোটরসাইকেলের জন্য বছরে ৫০০ টাকা এবং অন্যান্য মোটরযানের জন্য প্রয়োজন হবে ১০০০ টাকা। খসড়া রাইডশেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালায় ১০টি অনুচ্ছেদ ও ৪৫টি উপ-অনুচ্ছেদ আছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সার্ভিসে যুক্ত হওয়ার পর এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট একবারে সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদে দেয়া হবে। মেয়াদ শেষে আবার নবায়ন করতে হবে। ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস নীতিমালার আওতায় সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত কোনো ভাড়া দাবি করা যাবে না। এ নীতিমালা অনুযায়ী যাত্রী ও রাইডশেয়ারিং সার্ভিস পরিচালনার সাথে যুক্ত বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো বিরোধ হলে সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সমস্যার সমাধান করবে। রাইডশেয়ারিং সার্ভিস বিভিন্ন মহানগরী বা স্থানের জন্য ন্যূনতম একটি মটরসাইকেল থাকতে হবে। এ সার্ভিসে এসওএস এর সুবিধা থাকবে। কোনো জরুরি মুহূর্তে এসওএস বোতাম স্পর্শের সাথে সাথেই রাইডশেয়ারিং এপ্লিকেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে উক্ত ফোন নাম্বারে চালকের তথ্য ও যাত্রীর জিপিএস লোকেশন পাঠাবে। যাত্রী চাহিদা, সড়ক নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি, রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, সার্ভিসে নিয়োজিত মোটরযানের সংখ্যা ইত্যাদি বিষয়সমূহ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্তৃক নির্ধারণ করা হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যক যানবাহন এই সেবার আওতায় আসবে। বলা হয়, ঢাকা মহানগর সমন্বয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত এলাকায় ১০০টি, চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য ন্যূনতম ৫০টি এবং দেশের অন্যান্য মহানগর শহর এলাকার জন্য ২০টি। রাইডশেয়ারিং সেবার আওতায় আসবে মোটরসাইকেল, মোটরযান, জিপ, মাক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স। যেখান সেখান থেকে যাত্রী তোলা যাবে না। নির্দিষ্ট স্থান থেকেই যাত্রী নিতে হবে। নীতিমালায় যাত্রীদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহারের শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে রাজধানীতে অ্যাপভিত্তিক ‘পাঠাও’, ‘উবার’,ইজিঅার,সহ কয়েকটি ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা চালু আছে।