TechJano

অ্যাসোসিও’র সর্বোচ্চ সন্মাননা পুরস্কার পেলেন আব্দুল্লাহ কাফি

এশিয়া ওশেনিয়া অঞ্চলে আইসিটিতে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এর সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ এইচ কাফিকে অ্যাসোসিও তাদের সর্বোচ্চ সন্মাননা পুরস্কার ‘দ্য অ্যাসোসিও ওয়ানারারি অ্যাওয়ার্ড ’ প্রদান করেছে। গত ৮ নভেম্বর জাপানের টোকিওর এনা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট ২০১৮’ অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। অ্যাসোসিও প্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ ৩৫ বছরে এই সর্বোচ্চ সন্মাননা পুরস্কর পেয়েছেন মাত্র ৩ জন প্রযুক্তিবিদ আর তারা হলেন কোরিয়ার ড.ওয়াই টি লিন,তাইওয়ান এর রিচার্ড ওয়াইইন, মালয়েশিয়ার হেরিস টান। আব্দুল্লাহ কাফি হবেন এই সর্বোচ্চ সন্মাননা পুরস্কার বিজয়ী চতুর্থ ব্যক্তি।

২০১৪ সালে ভিয়েতনামের হ্যানয়তে অনুষ্ঠিত জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে ‘ওয়ানারারি অ্যাওয়ার্ড’ প্রবর্তন করা হয়। আব্দুল্লাহ এইচ কফি, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিসহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব। তিনি উইটসা, অ্যাসোসিওসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে ক্যাননের পরিবেশক জেএএন অ্যাসোসিয়েটস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

এশিয়া-ওশেনিয়া অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংগঠনগুলোর সংস্থা অ্যাসোসিও’র ‘অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট ২০১৮’ তে আরো ৪টি বিভাগে সম্মাননা পেল বাংলাদেশের চার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ‘অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড সিরেমনি’তে এই চারটি প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হয়। এই ক্যাটাগরিগুলো হলো- অ্যাসোসিও আইসিটি অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ তে আউটস্ট্যান্ডিং আইসিটি কোম্পানি অ্যাওয়ার্ড বিভাগে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন সেটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল) সম্মাননা অর্জন করে। আউটস্ট্যান্ডিং ইউজার অর্গানিজেশন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। ন্যাশনাল আইসিটি ইনফ্রা-নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট প্রজেক্ট (ইনফো সরকার) ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আইসিটি এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।

অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট ২০১৮ এর আয়োন করে অ্যাসোসিও’র সদস্য জাপান আইটি সার্ভিস অ্যাসেসিয়েশন (জাইসা)। জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে ডেভিট ওয়াং ১০টি অর্থনৈতিক পতিষ্ঠানের ২ শতাধিক ব্যক্তিকে স্বাগত জানান। এটিই ছিল ২০১৭-১৮ সালের সর্বশেষ বৈঠক। সেমিনারে চেয়্যারম্যান ডেভিট ওয়াং সমস্ত কাউন্সিল সদস্যদের প্রদ্ধা ও স্বীকৃতির সনদ প্রদান করেন। তিনি অ্যাসোসিও’র কার্যক্রমে সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণকে ধন্যবাদ জানায়।

পরবর্তীতে এখানে ২০১৯-২০ সালের অ্যাসোসিও পরিচানা কমিটির নির্বাচন হয়। এতে ডেভিট ওয়াং আবারো চ্যায়ারম্যান নির্বাচিত হয়। এছাড়াও ৬ জন ভাইস চেয়্যারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত ৬জন ভাইস চেয়ারম্যান হলেন – থাইল্যান্ডের আইসিটি ইন্ড্রাস্ট্রি থেকে পিচিৎ ভৈয়ত্র“জিরাপং, চায়নিজ ইনফরমেশন সার্ভিসেস, তাইওয়ান, আরওসি থেকে ইভন চু, ফেডারেশন অব কোরিয়ান ইনফরমেশন ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে জন

চয়, হংকং ইনফরমেশন অ্যান্ড সফটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন থেকে রেজি ওং, জাপান আইটি সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন কাজুনরি হামান, ভিয়েতনাম সফটওয়্যার অ্যান্ড আইটি সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে বিন টুরং গিয়া।

অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিও’র চেয়্যারম্যান ডেভিট ওয়াং উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রখেন। তিনি সকলকে অর্থনীতিতে ডিজিটাল রূপান্তরের আহ্বান জানান।

অ্যাসোসিও’র সর্বোচ্চ সন্মাননা প্রাপ্তির বিষয়ে সাবেক অ্যাসোসিও প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ এইচ কাফি বলেন,‘ অ্যাসোসিও’র দেয়া সর্বোচ্চ সন্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতি নি:সন্দেহে আনন্দের ও গৌরবের। ২৪টি দেশের মধ্যে আমি এই অ্যাওয়ার্ড অর্জনে সক্ষম হই।’ কোন বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব দিয়ে এই সন্মাননা প্রদান করা হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ অনেকগুলো বিষয়ের উপর জরিপ করার শেষেই এমন সন্মাননা প্রদান করা হয়। আমার আগে এই ক্যাটাগরিতে মাত্র ৩জন এমন সন্মাননা পেয়েছেন এবং আমি হলাম এই সারিতে চতুর্থ ব্যক্তি। এর আগে যারা এমন সš§াননা পেয়েছেন তাদের পাশাপাশি নিজেকে উপস্থাপন করতে পারাটাও আনন্দের। অ্যাসোসিও আমার ত্রিশ বছরের অবদান, কর্মদক্ষতা, দায়ীত্ব পালনের দক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠাকে গুরুত্ব দিয়ে আমাকে এই সন্মানে সন্মানিত করেছে।’

তিনি আরো বলেন,‘ আমি যখন অ্যাসোসিও’র প্রেসিডেন্ট ছিলাম তখন আমাকে দেয়া সকল কাজ যথাযথভাবে শেষ করেছি। তৎসময়ে আমি কয়েটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম যা অ্যাসোসিও আজও গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। আমি আরো একটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম যে, আইটি অ্যাক্সপার্টদের কোনো বর্ডার থাকবে না। তারা সকল দেশে তাদের দায়ীত্ব পালন করতে পারবে স্বাধীনভাবে। আমার এমন উদ্যোগকেও তারা গুরুত্ব দিয়েছে।’

অ্যাসোসিওর সর্বোচ্চ সন্মাননা ছাড়াও আরো ৪টি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এই প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ এইচ কাফি বলেন,‘ সর্বোচ্চ সন্মাননা ছাড়াও আরো ৪টি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে বাংলাদেশ। সদ্য সমাপ্ত সামিটে ৪টি ক্যাটাগরিতে ৯টি ইকোনোমিকে মোট ৩১টি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে।’

আব্দুলাহ এইচ কাফি যে সন্মাননা পেয়েছেন তাতে রাষ্ট্রের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সময় উপযোগী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা ও এ বিষয়ে উপযুক্তি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমেই দেশে এমন পুরস্কার আসে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Exit mobile version