এই ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত দুইটি আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক সহ বিভিন্ন পদকবিজয়ীদের সংবর্ধনা দেওয়া হলো নগরীর সোবাহানবাগে ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে। সংবর্ধনায় ৩ থেকে ১১ ডিসেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত ১৬তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের চারটি রৌপ্য ও দুইটি ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ী এবং ১৬-২০ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডের চিয়াংমাইয়ে অনুষ্ঠিত ২১তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডের ১টি স্বর্ণ,২টি রৌপ্য,৬টি ব্রোঞ্জ ও ১টি কারিগরি পদক বিজয়ীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পদকজয়ীদের ফুল ও উপহার তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ডেপুটি সেক্রেটারি ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান, দুই অলিম্পিয়াডের দেশীয় আয়োজক বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়ককরণ সমিতির সহ-সভাপতি জনাব মুনীর হাসান, ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সিইও মোঃ নুরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স ও মেকাট্রনিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান, বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি ড. লাফিফা জামাল, বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী প্রমূখ।
এ সময় পদকজয়ী শিক্ষার্থী,তাদের মেন্টর ও কোচদের অভিনন্দন জানিয়ে অতিথিরা বক্তব্য দেন। এবং পদকজয়ীদের লিখিত শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “বিকেএসপি থেকে যেমন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান উঠে এসেছে, সামনের দিনে সায়েন্স টেকনোলজিরও আমরা তেমন ইনস্টিটিউশন তৈরী করব ইনশাআল্লাহ। যেখান থেকে বিজ্ঞানী উঠে আসবে”।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়ককরণ সমিতির সহ-সভাপতি জনাব মুনির হাসান বলেন, “মাকসুদুল আলম বিজ্ঞানাগার থাকায় আমরা দলকে এক্সপেরিমেন্ট সেকশনে ভালো প্রশিক্ষণ দিতে পারছি। যার প্রতিফলন দেখা গেছে এবারের আইজেএসওর এক্সপেরিমেন্ট টেস্টে। একইভাবে রোবট অলিম্পিয়াডেও ভালো ফল আসছে।“
ড. লাফিফা জামাল রোবট অলিম্পিয়াডের আয়োজন সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। এবং আশা জানান, এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা বাংলাদেশ বজায় রাখবে।
অধ্যাপক ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী বলেন, “আমরা উন্নতি করছি, সামনের দিনে আশা করি একটা স্বর্ণপদক আসবে। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাব।“
আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের পক্ষে রৌপ্যপদক জয় করেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের অভিষেক মজুমদার সন্তু, বরিশাল ক্যাডেট কলেজের মুহতাসিন আল ক্বাফি, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের কাজী তাসফিয়া জাহিন, ব্লু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজের জাকিয়া তাজনূর চৌধুরী দিয়া। এছাড়া ব্রোঞ্জপদক অর্জন করে ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের জুহায়ের মাহদিউল আলম আশফি এবং গ্রীন ফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের আহমেদ আল-জুবায়ের আনাম।
উল্লেখ্য,আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি এই অলিম্পিয়াড আয়োজন করে। এ আয়োজনের সহযোগী প্রথম আলো। ম্যাগাজিন পার্টনার কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা। টেলিভিশন পার্টনার নাগরিক টিভি এবং নলেজ পার্টনার মাকসুদুল আলম বিজ্ঞানাগার, ইন্টারনেট পার্টনার অ্যাম্বার আইটি এবং রেডিও পার্টনার হিসেবে ছিল ঢাকা এফ এম। বিশেষ সহযোগী হিসেবে ছিল ভলান্টিয়ার্স এ্যাসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের পক্ষে ক্রিয়েটিভ ক্যাটাগরির জুনিয়র গ্রুপে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করে নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের মীর উমাইমা হক এবং চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের আবরার শহীদের টিম “মোনামী”। রোবট ইন মুভির চ্যালেঞ্জ গ্রুপে রৌপ্য পদক জয় করে চিটাগাং গ্রামার স্কুল,ঢাকার কাজী মোস্তাহিদ লাবিব এবং সানবীমস স্কুলের নাশীতাত যাইনাহ রহমানের দল “রোবো টাইগার্স”। এ গ্রুপে ব্রোঞ্জ পদক জয় করে নটরডেম কলেজের মো.জারিফ মাহবুব তালুকদার এবং শিহাব সারার আহমেদের দল “প্লান্টিবট”। “টিম রোবোস্ট” এর পক্ষে চিটাগাং গ্রামার স্কুল, ঢাকার তাফসীর তাহরীমও একই গ্রুপে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে। এছাড়া লাইন ফলোয়িং এডভেঞ্চার চ্যালেঞ্জ গ্রুপে আরও একটি রৌপ্য পদক জয় করে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেটের রাফিহাত সালেহ চৌধুরী। বাংলাদেশের পক্ষে ক্রিয়েটিভ ক্যাটাগরির জুনিয়র গ্রুপে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে আগা খান স্কুলের যারিয়া মুসাররাত পারিজাত এবং যাহরা মাহযারীন পূর্বালীর দল “ রোবো রেঞ্জার্স ”। এছাড়া ক্রিয়েটিভ ক্যাটাগরির চ্যালেঞ্জ গ্রুপে বাংলাদেশ দল তিনটি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে। এরা হল- ঢাকা কলেজের সানি জুবায়ের,চিটাগাং গ্রামার স্কুল,ঢাকার কাজী মোস্তাহিদ লাবিব এবং সানবীমস স্কুলের নাশীতাত যাইনাহ রহমানের দল “রোবো টাইগার্স”। জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেটের রাফিহাত সালেহ চৌধুরী এবং চিটাগাং গ্রামার স্কুল, ঢাকার তাফসীর তাহরীমের দল “রোবো বাংলা” এবং জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ,সিলেটের ছালওয়া মেহরীন এবং তাশরিক আহমদের দল “রোবোলিউশন’’। এছাড়া রোবট ইন মুভির জুনিয়র গ্রুপে অংশ নিয়ে টেকনিক্যাল পদক জয় করে নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের মীর উমাইমা হক এবং চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের আবরার শহীদের দল “মোনামী”।
বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডের আয়োজক বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে আইসিটি বিভাগ, বিকাশ ও রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। সহযোগী হিসেবে ছিল সিরেনা টেকনোলজিস, ইএমকে সেন্টার, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, অ্যাম্বার আইটি, নাগরিক টিভি, ঢাকা এফএম, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা।