রাজধানীর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার (আইএসডি) মিলনায়তনে একসাথে আন্তর্জাতিক ‘নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস’ পালন করলো গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফ। ইতিবাচক ডিজিটাল শিক্ষা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বিষয়ক নানা পদক্ষেপ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়েরই জানাশোনা, সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে গ্রেড ৫ থেকে গ্রেড ১০- এর আড়াইশ’ শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহণমূলক গেমের মাধ্যমে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে বোঝানো যাতে তারা নিরাপদ ও অনলাইনে বিচরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে পারে। ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল পরিবেশে শিশুদের জন্য নিরাপদ অনলাইন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে গ্রামীণফোনের ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ ‘চাইল্ড অনলাইন সেফটি প্রোগ্রাম’। ২০১৪ সাল থেকে গ্রামীণফোন নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ক নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে এবং এ কর্মসূচির বিস্তৃতির মাধ্যমে ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৪ লাখ শিক্ষার্থী এবং ৭০ হাজার বাবা-মা ও অভিভাবকদের শিক্ষিত ও এ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে ইউনিসেফের সাথে অংশীদারিত্ব করে। নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসের অংশ হতে পারা নিয়ে গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ও সিএমও ইয়াসির আজমান বলেন, ‘নিরাপদ ইন্টারনেটের বিষয়ে আমাদের অবস্থান সুদৃঢ় এবং আমরা ডিজিটাল বিশ্বে তরুণদের নিরাপদ বিচরণে সহায়তা করে আসছি। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে আমাদের শিশুরা খুবই অল্পবয়স থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে এবং শিক্ষাবিষয়ক কন্টেন্টে তরুণদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অত্যন্ত গ্রুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই, চাইলেই আমরা আমাদের সন্তানদের ইন্টারবনেট থেকে দূরে রাখতে পারি না। কেননা, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও শিক্ষা ও জ্ঞান পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট একমাত্র শক্তিশালী মাধ্যম। এজন্য, অভিভাবক ও শিক্ষকসহ এ ইকোসিস্টেম সংশ্লিষ্ট সবার জন্য প্রধান ও প্রথম ভাবনার বিষয় হওয়া উচিৎ নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করা।’ এ নিয়ে ইউনিসেফের চিফ অব চাইল্ড প্রটেকশন জিন জেবি বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান হারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়ার সাথে সাথে সাইবার বুলিং সহ বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে অনলাইনে সহিংসতাও বাড়ছে। শিশুরা তাদের বাড়িতে, স্কুলে এবং নিজেদের কমিউনিটিতে যে সহিংসতার শিকার হয় তা ডিজিটাল বিশ্বেও চলে আসছে। কিন্তু সুসংবাদ হচ্ছে, আইন তৈরি করে ও হেল্পলাইন তৈরির মাধ্যমে বুলিং ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করতে এবং বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এবং সাইবার বুলিং সহ অনলাইনে সহিংসতা (#এন্ডভায়োলেন্স) বন্ধ করতে পারি। আর এ নিয়ে গ্রামীণফোনের সাথে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আইএসডি দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সম্পূর্ণ আঙ্গিকে ইন্টারন্যাশনাল বাকালোরিয়েট (আইবি) কারিকুলামের একমাত্র ডে স্কুল। আইএসডির অ্যাডভান্সড স্কুলিং সিস্টেম অনুযায়ী গ্রেড ১ থেকে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাকতে হবে। যা তাদের অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে, নতুন বিষয় শিখতে এবং ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিষয়ের সাথে যুক্ত হতে সহায়তা করে। অল্প বয়স থেকেই শিক্ষার্থীরা যেনো ইন্টারনেটে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে পারে তাই আইএসডি, গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফের সাথে অংশীদারিত্বে এ বছর নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস পালন করেছে এবং এ নিয়ে কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এ নিয়ে আইএসডি সেকেন্ডারি স্কুল প্রিন্সিপাল ইলদিকো মুরে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় একইসাথে প্রযুক্তি ও সৃষ্টিশীলতার সমন্বয় নিয়ে নীতিমালা রয়েছে যাতে করে শিক্ষার্থীদের অল্পবয়স থেকেই জ্ঞান ও তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগ থাকে। শেখার জন্য ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এবং আইএসডি’তে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার জন্যই শিক্ষাদান করে আসছি। গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফের বি স্মার্ট ইউজ হার্ট ক্যাম্পেইন একটি মহৎ উদ্যোগ যা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নয় অভিভাবকদেরও শিক্ষিত করে তুলছে তারা কীভাবে অনলাইনে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও নিরাপদ থাকতে পারে। শেখার ব্যাপারে এবং দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্য আমরা সবসময়ই আমাদের শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে আসছি এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভেতরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরিতে এ উদ্যোগ কাজ করবে।