নিজের অভিজ্ঞতা দিয়েই শুরু করি। খুব জরুরি কিছু কাজ করছিলাম। এদিকে ফেসবুকে লগডইন ও ছিলাম। হুট করে ছোটবেলার এক বন্ধু ম্যাসেঞ্জারে নক দিল। এক টিভি চ্যানেলের রান্নার অনুষ্ঠানে সে যোগ দিয়েছে। তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য লিঙ্ক শেয়ার করেছে। আমি তো অবাক। অনেকদিন খোঁজ খবর নেওয়া হয় না। ও এতো কিছু করে ফেলছে। বেশ ভালো লাগলো। কাজের এক ফাঁকে লিংকে ঢুকলাম ভোট দেওয়ার জন্য। কিন্তু লিংক ওপেন হয় না। কয়েকবারের চেষ্টায় ওপেন হল, কিন্তু কোন ভিডিও পেলাম না। আমার ইন্টারনেট লাইনে কোন সমস্যা হবে করেছিলাম। তখন প্রায় ভোর হয়ে গেছে। যার কারনে আবার পরদিন দেখবো ভেবে কাজ শেষে ঘুমাতে গিয়েছি। বেশ সকাল তখন। বাবা ঘুম থেকে ডেকে তুললেন আমাকে। বললেন , আমার চাচাতো ভাই ফোনে জানিয়েছে সম্ভবত আমার ফেসবুক হ্যাক হয়েছে। কারন আমার ফেসবুক থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমি তো তাড়াহুড়া করে ফেসবুকে ঢুকতে যাব সেই অপশনও পেলাম না। হ্যাকার আমার পাসওয়ার্ড বদলে ফেলেছে তার মধ্যেই। এমন কি ইমেইল আইডি আর ফোননম্বরও। ফেসবুকে রিপোর্ট করে লাভ যা হল তা হচ্ছে ফেসবুক আমার প্রোফাইলটা ডিএকটিভেট করে দিল। আর উপযুক্ত প্রমান সহ মেইল করে পাঠাতে বলল যে ওই প্রোফাইলের অধিকারী আমিই। এই ভোগান্তি শেষ হল আমার তিনটা মাস পরে। হ্যাকার এতোই ঝামেলা করে ফেলেছিল যে আমি আমার পরিচয়ের কাগজ দেখিয়েও বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। এমন আমরা প্রায়ই দেখি অনেকের ফেসবুক হ্যাক হয়েছে, অথবা আজেবাজে ভিডিও পোস্ট হয়ে গেছে প্রোফাইল থেকে। কখনও বা অদ্ভুত ম্যাসেজ যেতে থাকে সেই প্রোফাইল থেকে। কখনও কোন লিংক এ ক্লিক করার আগে আমাদের অবশ্যই উচিৎ তা যাচাই বাছাই করে দেখা যে তা কতটা সিকিউর্ড আর ভ্যালিড। এমনকি ফেসবুকে অনেকধরনের মজার গেমস থাকে যেখানে ফেসবুক দিয়ে লগইন করে খেলতে বলে। আমরা সবাইই প্রায় বিশ্বাস করে ফেসবুক দিয়ে লগইন করে গেমসগুলো খেলে থাকি। অথবা এমনও দেখতে পাই কোন একটা লিংকে ক্লিক করতে বলা হচ্ছে এবং লেখা হয়তো কোন অফারের কথা্, অথবা এক্সক্লুসিভ কোন ভিডিও দেখতে পাওয়ার আশ্বাস। সেসবে ক্লিক করলে ফল তো ভালো হয়ই না, বরং সেই সাইট থেকে আমাদের ব্যবহৃত ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ পিসিতে ব্যাকগ্রাউন্ডে কোন ভাইরাস ইন্সটল হয়ে যায়। যা থেকে পরবর্তীতে আমাদের জরুরি সমস্ত তথ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেহেতু ফেসবুক এখন আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনে পরিনত হয়েছে এবং এতে আমাদের অনেক ব্যাক্তিগত তথ্য দেওয়া হয়েছে, সুতরাং আমরা তা ব্যবহারে সতর্ক থাকার চেষ্টা করবো।
লেখক: জাহরা জাহান পার্লিয়া, ডেভেলপার ও ফ্রিল্যান্সার।