TechJano

উদ্বোধন হলো সিম্ফনির কারখানা, বছরে ৩০-৪০ লাখ মোবাইল তৈরির লক্ষ্য

‘নবযাত্রার পথে সিম্ফনি’ এই শ্লোগানকে ধারন করে আশুলিয়ার জিরাবোতে সিম্ফনির নবনির্মিত মুঠোফোন কারখানা “এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড” এর উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশীয় এ ব্র্যান্ডের নতুন কারখানার উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ সময় সিম্ফনির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কারখানাটি উদ্বোধনের পর জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশেই মোবাইল ফোন উত্পাদন হবে। সেই স্বপ্ন পূরণের সঙ্গী হলো সিম্ফনি। এজন্য সিম্ফনিকে ধন্যবাদ। রবিবার সিম্ফনির মোবাইলফোন উত্পাদন কারখানা পরির্দশন ও উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী বলেন, উচ্চ মানসম্পন্ন হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য সিম্ফনি বদ্ধপরিকর। মানসম্পন্ন হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন বা (বিটিআরসি) এর নির্দেশনামেনেই কারখানা স্থাপন করেছে সিম্ফনি।

সংশ্লিষ্টরা প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত। এ কারণেই সিম্ফনি দেশে মোবাইল ফোন তৈরির অনুমোদন পেয়েছে। এখন আমাদের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানটির অগ্রযাত্রাকে মসৃণ করা। বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর তুলনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা সক্ষমতায় এগিয়ে থাকবে দেশে তৈরি সিম্ফনি মোবাইলফোন।তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্মার্টফোন বাজার ব্যাপক সম্ভাবনাময়। কিন্তু মোবাইল হ্যান্ডসেটের জন্য আমাদেরকে বিদেশী কোম্পানির ওপর নির্ভর করতে হতো। এ খাতে দেশীয় শিল্পের বিকাশ মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল, সিম্ফনি মোবাইলফোন কারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে সে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটল। রবিবার সকালে সিম্ফনি কারখানা কমপ্লেক্সে পৌঁছলে মন্ত্রীকে স্বাগত জানান এডিসনগ্রুপ এর চেয়ারম্যান জনাব আমিনুর রশীদ, ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব জাকারিয়া শাহীদ এবং এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ এর ডিরেক্টর জনাবএসএম মোর্শেদুজ্জামান।

জনাব জাকারিয়া শাহীদ জানান যখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মোবাইলফোন কারখানা করার জন্য অনুমোদন দেয় তখন আমরা ‘এ’ ক্যাটাগরী কারখানার জন্য আবেদন করি এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেন। সিম্ফনির কারখানায় আন্তর্জানিক মানের হ্যান্ডসেট উৎপাদনে আমরা বদ্ধপরিকর এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আমাদের এই প্রয়াস সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

জনাব আমিনুর রশীদ জানান, দেশেই মোবাইলফোনের মতো হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ চালু বাংলাদেশের শিল্প খাতের জন্য হবে ঐতিহাসিক। এতে লাভবান হবে সরকার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং জনগণ। এর ফলে বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বাড়বে রপ্তানি আয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশেই তৈরি হবে এ খাতের দক্ষ জনবল। গড়ে উঠবে আনুষঙ্গিক ব্যাকওয়ার্ড শিল্প। সর্বোপরি ফোন ব্যবহারকারীরা আরো সাশ্রয়ী মূল্যে পাবেন উন্নত মানের মুঠোফোন।

এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ এর ডিরেক্টর জনাবএসএম মোর্শেদুজ্জামান জানান উন্নতমানের কথা চিন্তা করে আমরা ৮০ ভাগ জনবল কারিগরী প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়োগ দিয়েছি এবং তাঁদেরকে কয়েকমাস ধরে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও এখানে কারখানা পরিচালনার জন্য যাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের সবাইকেই দেশে বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষন দেয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। কারিগরী দিক থেকে স্বল্পতা থাকার পরেও এই কারখানায় সন্তোষজনক নারীকর্মী নিয়োজিত আছেন এবং আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মতে এর পরিমাণ ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পাবে।

জনাব মোস্তাফা জব্বার সফরসঙ্গীদের নিয়ে সিম্ফনি মোবাইলফোন কারখানার প্রডাকশন লাইন, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ, মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও টেস্টিং ল্যাব ঘুরে দেখেন।সিম্ফনি সূত্রমতে, আশুলিয়ার জিরাবোতে ৫৭ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এডিসনইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এখানে হ্যান্ডসেট সংযোজন, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ, মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও টেস্টিং ল্যাব রয়েছে। এছাড়া স্থাপন করা হয়েছে জাপান ও জার্মান প্রযুক্তির মেশিনারিজ। কারখানাটিতে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।স্মার্টফোন কারখানাটিতে প্রাথমিকভাবে বার্ষিক ৩০-৪০ লাখ ইউনিট হ্যান্ডসেট উত্পাদন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এরই মধ্যে আটটি প্রডাকশন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। আরো কয়েকটি প্রডাকশন লাইন করার পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

Exit mobile version