বেসিসের উন্নতিতে ধারাবাহিকতা দরকার। সেজন্য সুযোগ চান সৈয়দ আলমাস কবীর। বেসিস মিলনায়তনে প্রার্থী পরিচিতি সভায় নিজের উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন তিনি। আলমাস কবীর বলেন,‘ আমাদের হাতে নেয়া পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বেসিস সদস্যদের জন্য অফিস স্পেস বরাদ্দ করা, অর্থায়ন নিশ্চিত করা, ম্যানেজমেন্টে দক্ষ করে টিম তৈরি করে দেয়া, আইনী সহায়তা প্রদানকরা, এনডিএ সম্পর্কে ধারনা দেয়া, ইন্টার অ্যাকচুয়াল প্রপার্টি (আইপি) সম্পর্কে অভিজ্ঞ করে তোলা, পণ্যে বিপণন ও সঠিক মার্কেটিং পলিসি সম্পর্কে ট্রেনিং প্রদান করাসহ আরো অনেকগুলো কাজ হাতে রয়েছে আমাদের।এগুলোর মধ্য থেকে কয়েকটিতে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এগুলো সম্পন্ন করতে পারলে বিশ্বমানের প্রযুক্তি বাংলাদেশেই পাওয়া যাবে ।’ দুয়ারে কড়া নাড়ছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর ২০১৮-২০ মেয়াদের নির্বাচন। এ উপলক্ষে চলছে প্রচার প্রচারণা।এবারের নির্বাচনে বেসিস সদস্যদের মধ্যেতিনটি প্যানেল প্রতিনিধিত্ব করছে। তিন প্যানেলের একটি ‘টিম হরাইজন’। বর্তমান বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবিরের নেতৃত্বে টিম হরাইজন নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছে। বেসিস নির্বাচন উপলক্ষে তার সাথে আলোচনা হয়। তিনি বেসিস এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন আর আগামী পরিকল্পনার কথাও জানান। সৈয়দ আলমাস কবির। দীর্ঘদিন ধরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সঙ্গে তিনি জড়িয়ে রেখেছেন নিজেকে। ১৯৮৪ সালে প্রোগ্রামিং এর মধ্যদিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রবেশ করেন তিনি।তখন তিনি মাত্র এইচএসসি পাস করেছেন।পরবর্তীতে তিনি ভারতের জাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে গ্রাজুয়েশন করেন। তত্কালীন সময়ে কোবল দিয়ে লাইব্রেরিয়ান ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার তৈরিও করেছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশেপ্রোগ্রামার হিসেবে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেন।এর তিনমাস পরে সিস্টেম জার্নালিস্ট হিসেবে একই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন তিনি।পরবর্তীতে খ্যাতনামা কনকর্ড গ্রুপের জন্য ইনভেনট্রি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও বাজেটমনিটরিং সিস্টেম তৈরি করেন।এর পর ১৯৯১ সালে আমেরিকা থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন এবং ট্যান্ডি রেডিও সেক-এ যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের আই ইউ বিতে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে শিক্ষাকতা শুরু করেন।১৯৯৬ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইউনিভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করার পাশাপাশি সম্পূর্ণ কম্পিউটার বিভাগেরদায়ীত্ব গ্রহণ করেন।২০০০ সালে দেশে প্রথম ফাইবার নেটওয়ার্কও তিনিই চালু করেছিলেন। চাকরিরত অবস্থাতে তিনি সমস্ত ঢাকাতে ফাইবার নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।ফাইবার নেটওয়ার্ক বিস্তারকেকেন্দ্র করেই তৈরি হয় ‘মেট্রোনেট’ কোম্পানিটি। মেট্রোনেটই প্রথম দেশে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের কাজ শুরু করে।বর্তমানে সারাদেশে মেট্রোনেট এর সেবা বিস্তৃত রয়েছে।পরবর্তীতে তিনি মেট্রোনেট এর পূর্ণ দায়ীত্বগ্রহণ করেন এবং ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের পাশাপাশি সিকিউরিটি সফটওয়্যার, কলসেন্টার সফটওয়্যার, সাইবার সিকিউরিটি বিভিন্ন ওয়েব সার্ভিস নিয়ে কাজ শুরু করেন।বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ওসরকারি বেসরকারি এজেন্সিতে এবং পেমেন্ট সলিউশন নিয়ে দুইটি ব্যাংকে কাজ করছে তার প্রতিষ্ঠান। বেসিস নির্বাচনে ‘টিম হরাইজন’ এর নেত্রীত্ব দিচ্ছেন সৈয়দ আলমাস কবির।তার সঙ্গে আলাপকালে বেসিস নিয়ে আগামী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘বেসিস এর সাবেক সভাপতি মোস্তাফা জব্বারআইসিটি মন্ত্রীর দায়ীত্ব গ্রহণের পরআমি বেসিসের সভাপতির দায়ীত্ব পেয়েছি। মাত্র দুই মাস সময় অতিক্রম করলাম। এই অল্প সময়ে আমি বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।অনেকগুলো কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছি এবংঅনেকগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। হাতে সময় পেলে খুব দ্রুত এগুলো শেষ করতে পারবো।’ বেসিস নির্বাচানের আর বেশি বাকি নেই, বেসিস নিয়ে আপনার কী কী পরিকল্পনা রয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে আলমাস কবিরবলেন,‘ নির্বাচন সময় মতো হবে এটাই স্বাভাবিক, আমি আমার মতো কাজ করে যাচ্ছি। বেসিস একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন এবং এটি সবার প্রতিষ্ঠান।প্রতিষ্ঠানটির জন্য কিছু করতে আমার সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদিআগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারি তাহলে আমার হাতে নেয়া কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারবো।’ এখন পর্যন্ত কী কী কাজ আপনি হাতে নিয়েছেন এবং আগামীতে কী কী কাজের পরিকল্পনা রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আলমাস কবির বলেন,‘বাংলাদেশে আইসিটি খাত নতুন একটি খাত। এখানে যারা তথ্যপ্রযুক্তিনিয়ে কাজ করেন তারা বেশির ভাগই নতুন।এই নতুনদেরকে দক্ষ ও ব্যবসা সফল করে গড়ে তুলতে আমাদের রয়েছে কয়েকটি পরিকল্পনা।এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের আইসিটি খাত হবে একটি মজবুতখাত।’
তিনি আরো বলেন,‘ আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি মাত্র ২মাস আগে।এই ২মাসে আমি বেসিস সদস্যদের জন্য ‘মাইডাস’ থেকে জমানত বিহীন অর্থায়ন নিয়ে কয়েক ধাপ আলোচনা করে তা একটি পর্যায়ে নিয়ে আসেতেপেরেছি, এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের এন্টারপ্রেনর ডেভেলপমেন্ট ফার্ম (ইডিএফ) এর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে।