উবার আজ তাদের ‘ফিরে দেখা ২০২০: পর্যালোচনায় এক বছর’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মান নিশ্চিত করা এবং লকডাউনের পর বাংলাদেশের মানুষকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যেতে উবার যেভাবে সাহায্য করেছে সেগুলো এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের কাজে যেতে সাহায্য করা, প্রিয়জনকে কোনো জিনিস পাঠানো এবং চালকদের উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন কমিউনিটির জন্য উবার সব সময় সময়োপযোগী সার্ভিস তৈরি করে। উবার অ্যাপ ব্যবহারের বিভিন্ন ইনসাইট এবং তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত এই প্রতিবেদনটি মূলত সে সব তথ্যই তুলে ধরেছে।
এক নজরে উবারের কার্যক্রম:
১০ মিলিয়ন: ‘#মুভহোয়াটম্যাটার্স’ –এর আওতায় সংকটকালীন মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, প্রবীণ ব্যক্তি ও অন্যান্যদের জন্য বিনামূল্যে ১০ মিলিয়ন রাইড ও খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। ঢাকায় দ্য আর্থ সোসাইটির সাথে যুক্ত হয়ে তাদের ‘ক্র্যাক প্লাটুন’ প্রকল্পের মাধ্যমে ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের বাসা থেকে হাসপাতালে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য গাড়ি সরবরাহ করেছে উবার। ৪০টি হাসপাতালের ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা তাদের বাসা থেকে হাসপাতাল এবং হাসপাতাল থেকে বাসাতে যাতায়াতের জন্য এই গাড়িগুলো ব্যবহার করেছেন।
৫০ মিলিয়ন ডলার: বিশ্বজুড়ে চালকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য গত বছর উবার ৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। বাংলাদেশে উবার চালকদের ৫ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
ট্রান্সপোর্ট সেফটি অ্যালায়েন্স: ব্যবহারকারীদের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা তৈরি করতে এবং চালকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে টিস্যু, স্যানিটাইজার এবং মাস্কসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সামগ্রী বিতরণ করতে ডেটল, ফ্রেশ, ডিবিএল ফার্মা এবং যান্ত্রিক-এর সাথে ট্রান্সপোর্ট সেফটি অ্যালায়েন্স (টিএসএ) গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছে উবার।
দুটি নতুন সার্ভিস প্রণয়ন: লকডাউন তুলে নেওয়ার পর মানুষ যখন আবার চলাফেরা শুরু করে তখন ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন অনুসারে নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে উবার কানেক্ট এবং উবার রেন্টালস নামে দুটি নতুন সার্ভিস চালু করা হয়। উবার কানেক্টের মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই নিরাপদে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। অন্যদিকে উবার রেন্টালস-এর মাধ্যমে যাত্রীরা এই নিউ নর্মালে একটি গাড়ি কয়েক ঘন্টার জন্য বুকিং দিয়ে একই সাথে কয়েকটি জায়গায় যেতে পারেন।
ডিজিটাল পেমেন্ট: আগস্টে বিকাশের সাথে পার্টনারশিপ করার মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট অপশন চালু করে উবার। এর মাধ্যমে প্রত্যেক উবার ব্যবহারকারী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কোনোরকম নগদ অর্থ বহন না করেই নিরাপদে উবার ট্রিপের ভাড়া পরিশোধ করতে পারেন।
সার্বক্ষণিক অন-ট্রিপ সেফটি হেল্পলাইন সার্ভিস: নভেম্বর মাসে উবার সার্বক্ষণিক সেফটি হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করে যা যাত্রীদের যাত্রাকালীন সময়ে বিভিন্ন জরুরী প্রয়োজনে যেমন- চালকের সাথে কথা কাটাকাটি, গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনায় উবারের সেফটি টিমের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেয়। উবার অ্যাপের সেফটি টুলকিটে থাকা এসওএস ৯৯৯ বাটনের পাশাপাশি এই সেফটি হেল্পলাইন সার্ভিসটি যুক্ত করা হয়েছে। ৯৯৯ বাটন যাত্রীকে জরুরি অবস্থায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশে চার বছর: ২০২০ সালে উবার বাংলাদেশে কার্যক্রমের চার বছর পূর্ণ করেছে। এই চার বছরে ৪ মিলিয়নেরও বেশি যাত্রীকে সেবা এবং ১,৭৫,০০০ এরও বেশি চালকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে উবার।
বাংলাদেশে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু হওয়ার সাথে সাথে একটি বাটনের চাপে যাত্রীদের সুবিধাজনক, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে শহরগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
উবার সম্পর্কিত তথ্য
সচলতার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করাই উবারের লক্ষ্য। আপনি কীভাবে বাটনের এক চাপে যাতায়াতের জন্য একটি গাড়ি পেতে পারেন? এ সমস্যার সমাধান খুঁজতে আমাদের শুরুটা হয় ২০১০ সালে। ১৫ বিলিয়নেরও বেশি ট্রিপ সম্পন্ন করার পর, এখন আমরা সেসব সার্ভিস তৈরির প্রচেষ্টায় নিয়োজিত যেগুলো একজন ব্যক্তিকে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। শহরের যাতায়াত ব্যবস্থা, খাদ্য এবং জিনিসপত্র আনা-নেওয়ার পদ্ধতি পরিবর্তনের মাধ্যমে উবার সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।