এই সেই মার্ক যার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় মার্ক কম পাচ্ছে। জ্বি ভাই ও বোনেরা, আমি ঠিকই বলছি। এই মার্ক এমনই এক বুক আবিষ্কার করেছেন, যার জন্য ছাত্রছাত্রীরা পাঠ্যবুক ফেলে সেই বুকের দিকে ঝুকে পরেছে যার জন্য পরীক্ষায় মার্ক কম পাচ্ছে। আর তার নাম হচ্ছে ফেসবুক।
কি আবিষ্কার তার,
এক আবিষ্কারেই দুনিয়া তোলপাড়।
বুঝতে পারছেন কার কথা বলছি? হ্যা ঠিক ধরেছেন, আর সে হচ্ছে মার্ক জাকারবার্গ বা মার্ক জুকারবার্গ।
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ।
এমন কেউ আছে যে, ফেসবুক ব্যবহার করি না? ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়ষ্ক মানুষ সবাই ফেসবুকে আক্রান্ত। ঘুম থেকে উঠে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত ফেসবুকে কয়েকবার চোখ না বুলালেই নয়। বিনোদন, শিক্ষা, যোগাযোগ, ব্যবসা সবকিছুই রয়েছে এই ফেসবুকে।
মার্ক জাকারবার্গ, মার্ক জুকারবার্গ বা মার্ক যুকারবার্গ-এর পুরো নাম হচ্ছে মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ বা জাকারবার্গ (Mark Elliot Zuckerberg), তিনি একজন আমেরিকান সফটওয়ার ডেভেলপার এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামার। তার আসল পরিচয় হল তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমানে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রেসিডেন্ট।
প্রারম্ভিক জীবন
মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ বা জাকারবার্গ (Mark Elliot Zuckerberg) ১৯৮৪ সালে নিউইয়র্কের হোয়াইট প্লেইন এলাকাতে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবার নাম এডওয়ার্ড জাকারবার্গ এবং মায়ের নাম ক্যারেন। তার বাবা একজন দন্ত চিকিৎসক এবং মা একজন মনোচিকিৎসক। মার্ক জুকারবার্গ বা জাকারবার্গ (Mark Elliot Zuckerberg) এর তিন বোন রয়েছে রান্ডি,ডোনা এবং এরিএল। জাকারবার্গ একজন ইহুদি হিসেবেই বেরে উঠেছেন কিন্তু বর্তমানে তিনি একজন নাস্তিক হিসেবেই নিজেকে বর্ননা করেন।
শিক্ষাজীবন
মার্ক জুকারবার্গ বা জাকারবার্গ(Mark Zuckerberg)আর্ডসেলি হাই স্কুলে গ্রিক এবং ল্যাটিন ভাষায় শিক্ষাজীবন শুরু করেন এবং এতে পারদর্শী হয়ে উঠেন।১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ পর্যন্ত আর্ডসেলি হাই স্কুলে অধ্যায়ন করেন এখান থেকে তিনি ফিলিপস এক্সটার একাডেমীতে ২০০০ সালে স্থানান্তরিত হন। এখানে তিনি বিজ্ঞান এবং ক্লাসিক্যাল শিক্ষায় পুরষ্কৃত হন। ২০০২ সালে পিল্লিপ্স এক্সেটার একাডেমী থেকে পাস করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন।
ফেসবুক প্রতিষ্ঠা
তিনি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ফেসবুক ডট কম। তখন তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েরছাত্র । ফেসবুক যখন প্রথম শুরু হয় তখন এটি শুধু মাত্র হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কেন্দ্রিক সীমাবদ্ধ ছিল। হার্ভার্ডের ছাত্রপ-ছাত্রীরাই শুধুমাত্র এটি ব্যাবহার করতে পারত। তখন এর নাম ছিল “দ্য ফটো এড্রেস বুক”। এটি অনেকটা ‘স্টুডেন্ট ডিরেক্টরি’ র মত ছিল। এর মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের নাম, বন্ধুদের নাম, ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে রাখতে পারত।
বিবাহ জীবন
মার্ক জুকারবার্গ ২০১২ সালের ১৯ মে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার অনেক দিনের পুরোনো বন্ধু “প্রিসিলা চ্যান” এর সাথে এই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে তারা তাদের বিয়ের খবর কাউকে জানান নি, সবাইকে বলেছিলেন প্রিসিলার গ্রাজুয়েশন সেলিব্রেট করার জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু সবাই অনুষ্ঠানে আসার পর বুঝতে পারে আসলে কি হতে চলেছে। এই পরিকল্পনার মুল উদ্দ্যেশ্য ছিল সবাইকে সারপ্রাইজ দেয়া।
বর্তমানে তাদের দুটি মেয়ে আছে, সেই মেয়ের নাম “মাক্সিমা চ্যান জুকারবার্গ” আরেকটির নাম আগস্ট চ্যান জুকারবার্গ।
মার্ক জুকারবার্গের কিছু উক্তি
মার্ক জুকারবার্গের কিছু উক্তি উল্লেখ করা হল, যা থেকে আমরা অনুপ্রানিত হতে পারি—
১। দ্রুত পরিবর্তন শীল বিশ্বে ব্যর্থ হওয়ার একটিমাত্র উপায় আছে আর তা হল ঝুঁকি না নেওয়া ”
২। আমি প্রতিদিনই আমাকে যে প্রশ্নটি করি তাহল, “আমি কি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করছি যা আমি করতে পারতাম?” আমি যদি মনে না করি যে, আমি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করছি, তাহলে সময় কাটানোটা আমার কাছে মূল্যহীন মনে হয়।”
৩। “কেউ কেউ খুব স্মার্ট কিংবা দক্ষ হতে পারে, কিন্তু তারা যদি তাতে বিশ্বাস না রাখে, তাহলে তারা কঠোর পরিশ্রমে আগ্রহী হয়না -জুকারবার্গ “
সম্মাননা
২০১০ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা করে নেয় মার্ক জুকারবার্গ। ওই বছরই টাইম ম্যাগজিন তাকে ‘পারসন অফ দ্যা ইয়ার’ হিসেবে মনোনীত করেছিল।
জুকারবার্গের-অজানা কিছু কথা
# মাত্র ২৩ বছর বয়সে মার্ক জুকারবার্গ বিলিয়নিয়ার হয়েছিলেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
# জুকারবার্গ মৃত্যুর আগে অধিকাংশ সম্পদ দান করে যাবেন।
# ২০১০ সালে তিনি ‘মান্দারিন’ ভাষা শিখেন কারন তিনি যেন তার স্ত্রী ও তার পরিবারের সাথে তাদের ভাষায় কথা বলতে পারেন।
# তারা ফেসবুকের শেয়ারের ৯৯% দান করে যাবেন ।
# হলিউডে মার্ক জুকারবার্গ (Mark Zuckerberg) ও ফেসবুক কে নিয়ে “The Social Network” নামে একটি মুভি তৈরী হয়েছে।
# মার্ক জুকারবার্গ (Mark Zuckerberg) পড়ালেখা শেষ করার আগেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন কারন ফেসবুকে আরো বেশি সময় দেয়ার জন্য।
#জুকারবার্গের কোম্পানি ইন্টারনেট স্যাটেলাইট তৈরি করছে।
লেখক: মো. আবীর হোসেন
ইমেইল:shamim.dhaka.bd@gmail.com