চাকরি খুঁজছেন? চাকরি পেতে কি জানা লাগবে সে বিষয়ে আপনার ধারণা আছে তো? ভবিষ্যতে চাকরির এমন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে যাতে আপনার প্রচলিত দক্ষতার পাশাপাশি সফটস্কিলকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। আপনাকে দ্রুত চিন্তাভাবনা করে খুশি করতে হবে আপনার বসকে। আর সেই বস হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবট। এখনকার চাকরিদাতারা এমন কর্মীর খোঁজ করেন যিনি নমনীয় হবেন অর্থাৎ, তাকে যে খাঁজে রাখা হবে তিনি সে আকার ধারণ করবেন। তাঁকে ক্রমাগত শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা এবং দ্রুত সে প্রযুক্তিগুলো তাদের দক্ষতার সঙ্গে প্রয়োগ করতে সক্ষম হবেন এমন কর্মীই চান তাঁরা। এ ধরনের কর্মী বাছাই করার ক্ষেত্রে তাই অনেক প্রতিষ্ঠান এখন অটোমেটেড সফটওয়্যার বা বট ব্যবহার করছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মীর নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান বা নির্দিষ্ট সফটওয়্যারে দক্ষতা আর গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে না। এর চাইতে বরং কর্মীর সফটস্কিল বিশেষ বিবেচনায় ধরা হচ্ছে। এই সফট স্কিল হচ্ছে-যেকোনো সমস্যা সমাধানে দক্ষতা, কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতা আর নেতৃত্বগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন সেন্টার অন এডুকেশনের পরিচালক অ্যান্থনি কার্নাভেল বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে সব সময় একই জিনিস ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার করার চেয়ে মানুষের দায়িত্ব আরও বেশি থাকে। কাজে নতুন মূল্য যোগ করে এমন কাজ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ বিজ্ঞান, গণিত, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে আকর্ষণীয় চাকরি পাওয়া গেলেও চাকরিদাতাগুলো সব সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করে। বলে, সেখান থেকে শুধু প্রকৌশলী তৈরি হচ্ছে, চাকরিদাতাদের কাজে লাগে এমন দক্ষ কর্মী তৈরি হচ্ছে না। কলেজ বা ইনস্টিটিউট থেকে আমরা যে যোগ্যতা অর্জন করি সেগুলো আমাদের টেকনিকাল স্কিল। কিন্তু এই টেকনিকাল স্কিল ছাড়াও আমাদের অন্য দক্ষতারও প্রয়োজন আছে। সেটা চাকরির ক্ষেত্রেও, জীবনের ক্ষেত্রেও। ‘সফ্ট স্কিল্স’। এই দক্ষতা কোনও প্রতিষ্ঠানে কোর্স করে শেখা যায় না। এটা অনেকখানি ব্যক্তিত্ব-কেন্দ্রিক। তোমার স্বভাব, কমিউনিকেশন স্কিল, মনোভাব, যে কোনও পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা— অনেক কিছুই সফ্ট স্কিল্স-এর মধ্যে পড়ে। যে কোনও কাজের ক্ষেত্রেও নিয়োগকর্তারা এমন প্রার্থী খোঁজার চেষ্টা করেন যাদের টেকনিকাল স্কিল-এর পাশাপাশি সফ্ট স্কিল্স-ও ভাল। এই ধরনের কর্মী থাকলে প্রতিষ্ঠানের লাভ হয়। যদি মনে করো একটা সফল জীবন বাঁচবে, যাকে আমরা বাঁচার মতো বাঁচা বলি, তা হলে তোমার রোজকার জীবনে এই ধরনের সফ্ট স্কিল্স তৈরি করে নাও। এর জন্য আলাদা করে খাটতেও হবে না, দিনে কয়েক ঘণ্টা সময়ও দিতে হবে না। কেবল মনটাকে একটু গুছিয়ে নিতে হবে।
শুধু পড়ার বই নয় পড়ার বইয়ের মধ্যে আটকে থাকলেই হবে না। চারপাশ সম্পর্কে, নিজের পছন্দের বিষয়ে, এমনকী যেটা অনেক সময়ই পড়তে ভাল লাগে না, কিন্তু কেরিয়ারের প্রয়োজনে পড়ে রাখা দরকার, সেগুলোও জেনে রাখতে হবে। মোট কথা, পড়ার একটা অভ্যেস তৈরি করতে হবে।
রাইটিং স্কিল্স যা ভাবছ, তা স্পষ্ট করে ভাষায় প্রকাশ করাটাও একটা দক্ষতা। তাই, যে কোনও ক্ষেত্রে যা লিখতে হবে, সে প্রজেক্ট রিপোর্টই হোক বা ক্লাস নোট্স, সব কিছুতেই যেন একটা পরিচ্ছন্নতা থাকে। বিশেষত, চাকরিতে যদি তোমাকে সহকর্মীর জন্য কোনও মেমো বা বস-এর জন্যে কোনও রিপোর্ট তৈরি করতে হয়, তা হলে বুঝতে হবে, কী লিখতে হবে, কতটা লিখতে হবে। কম কথায় সোজাসাপটা ভাষায় কোনও কিছু গুছিয়ে লেখার অভ্যাস করো। একই সঙ্গে মাথায় রেখো— লেখায় গ্রামার, পাংচুয়েশন, বানান যেন ঠিক থাকে।
লিসনিং স্কিল্স এটাও এক দক্ষতা। যে কোনও কাজের জায়গাতেই যে অন্যের কথা মন দিয়ে শোনে, অর্থাৎ যে ‘গুড লিসনার’, তার বা তাদের গুরুত্ব অন্য রকম। তাদের কিন্তু সংস্থায় প্রোডাকটিভ ওয়ার্কার হিসেবে দেখা হয়। কারণ তুমি যদি চট করে কোনও কথা শুনে বুঝে যাও তোমার কাছ থেকে কী চাওয়া হচ্ছে, তা হলে তোমারই কাজের সুবিধে। এতে বস-এর নেকনজরে পড়বে, সহকর্মীদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি হবে। ব্যক্তিগত জীবনেও এই অভ্যেস তৈরি করতে পারলে, জীবনে নানান সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং অন্যান্য মানুষকে বোঝার অনেক সুবিধে হয়। তবে সবাই যে গুড লিসনার হয় তা নয়। আবার অনেক সময় যাঁদের মনে করা হয় গুড লিসনার, তাঁরাও এমন আচরণ করেন, দেখে মনে হবে তিনি কোনও মনোযোগই দিচ্ছেন না। যাঁরা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনেন তাঁরা দেখবে কয়েকটা জিনিস করেন। যেমন, চোখে চোখ রেখে কথা বলা। অন্য ব্যক্তি যখন কথা বলেন, তখন তাঁর কথার মধ্যে কথা না বলা। অযথা উসখুস না করা। কথার মাঝে মাথা নাড়া। বক্তার দিকে সামান্য ঝুঁকে বসা। বক্তার কথা শেষ হয়ে গেলে তবেই প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা।
ভার্বাল কমিউনিকেশন কাজের জায়গা হোক বা অন্য কোথাও, তুমি কী বলতে চাইছ সেটা স্পষ্ট করে বলা, কোন টোন-এ বলছ, কথা বলার সময় তোমার বডি ল্যাংগোয়েজ কেমন হচ্ছে, অনেক কিছুই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই যখন কোনও কিছু নিয়ে কথা বলছ, সে বিষয়ে তোমার কী বক্তব্য, তা নিজের কাছে যেন পরিষ্কার থাকে। অনেকে খুব তাড়াতাড়ি কথা বলেন। আবার কারও কারও কণ্ঠস্বর এমনই যে কথা বোঝাই যায় না। ভার্বাল কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে কিন্তু তোমাকে খুব স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে হবে, যাতে অন্যরা বুঝতে পারেন। একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, ভাষা যেন হয় সহজ-সরল। আলঙ্কারিক ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে অন্য ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করতে পারো তিনি তোমার কথা বুঝতে পারছেন কি না। এতে তোমাদের মধ্যে কমিউনিকেশনেই সুবিধে হবে।
অর্গানাইজেশনাল স্কিল্স কিছু মানুষ থাকেন, যাঁরা খুব গুছিয়ে কাজ করতে পারেন। এ ধরনের স্কিল যাঁদের থাকে, তাঁরা দেখবে কোনও হুড়োহুড়ি না করেই যে কোনও কাজ করে ফেলতে পারেন। একাধিক অ্যাসাইনমেন্ট খুব স্বচ্ছন্দে করে ফেলতে পারেন এবং তাদের কাজে ভুলও থাকে নামমাত্র।আমরা অনেকেই গুছিয়ে কাজ করতে পারি না। কিন্তু কয়েকটা জিনিস করলেই এই অভ্যাস তৈরি করে ফেলা যায়। প্রথম কাজই হল কাজের একটা তালিকা তৈরি করা। এ বার কোন কাজটা বেশি গুরুত্বের আর কোন কাজটা কম গুরুত্বের, সেটা ভাগ করে নাও। যেমন যেমন কাজ শেষ করছ, টিক মারতে থাকো। স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট বা হাতে লেখার নোটবুক— যেটাতে তোমার সুবিধে, এই তালিকা বানিয়ে রাখো। প্রত্যেকটা কাজের জন্য একটা ডেডলাইন করে রাখো ক্যালেন্ডারে। দরকারে রিমাইন্ডার দাও। একটা রুটিন ফলো করো।
প্রফেশনালিজম কাজের ক্ষেত্রে এই ওপরের শব্দটার গুরুত্ব যথেষ্ট। এর কারণে কাজের জায়গায় তোমার অনেক কিছু বদলে যেতে পারে। এর জন্য কয়েকটা জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। এই সূত্রে কয়েকটা উদাহরণ দেওয়াই যায়।কাজের জায়গায় কিংবা মিটিং-এ দেরিতে পৌঁছনো একেবারেই নয়। এতে ধারণা হয়, তুমি কাজকে গুরুত্ব দিচ্ছ না। একই নিয়ম খাটে লাঞ্চে যাওয়ার সময়েও। খেতে গিয়ে আড্ডায় অনেক ক্ষণ কাটিয়ে দিলে, এমনটা না করাই ভাল।বাড়িতে বা অন্য কোথাও ঝামেলার কারণে যদি মুড খারাপ হয়ে যায়, সেটা কাজের জায়গায় এনো না।জামাকাপড়ের দিকে নজর দাও। ফর্মাল পরো বা ক্যাজুয়াল, সেটা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। সাধারণত উইকডেজ-এ ফর্মাল পরো। আর, উইকেন্ডে ক্যাজুয়াল।অনেকের অভ্যাস থাকে সহকর্মীদের সঙ্গে পরচর্চা করার। অফিসে এ সব না করাই ভাল। কোনও ভুল করলে সেটা নিজের ঘাড়ে নাও। অজুহাত দিয়ে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কোরো না। ভুল থেকে শিক্ষা নাও। হতেই পারে কোনও একটা বিষয়ে তোমার এক রকম মত, তোমার সহকর্মী বা বস-এর আর এক রকম। যদি তিনি তোমার মতামত গ্রহণ না করে নিজের মতটাই খাটাতে চান, অযথা রেগে যেও না বা চিৎকার-চেঁচামেচি কোরো না। তাঁকে বোঝাবার চেষ্টা করে দেখতে পারো, তুমি কোন দিক থেকে বিষয়টা দেখেছ। তার পরেও তিনি যদি রাজি না হন, বিষয়টা নিয়ে আর না এগনোই ভাল।
পিপল স্কিলস কাজের ক্ষেত্রে বা ব্যক্তিগত জীবনে কেমন ভাবে লোকের সঙ্গে মিশছ, সেটাই অন্যের কাছে তোমার সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করে দেয়। তোমার ব্যবহার, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, এই সব কিছুই কিন্তু এক জন সফল মানুষ হতে খুব প্রয়োজন।অধিকাংশ মানুষেরই লক্ষ্য থাকে, যেখানে কাজ করছে, সেখানে এক সময় সে নেতৃত্ব দেওয়ার স্তরে পৌঁছবে। এই লিডারশিপ স্কিল তৈরি করতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। যেমন, দলের মধ্যে একটা মত প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে রাজি করানো একটা বড় ব্যাপার। তার জন্য নিজের চিন্তা এবং অনুভূতিকে ঠিকমত প্রকাশ করতে জানতে হয়। সবাইকে উৎসাহ দিয়ে বুঝিয়ে রাজি করানো এবং নিজের দক্ষতা ও সততার মাধ্যমে অন্যের আস্থা অর্জন করাটাও একটা জরুরি শিক্ষা। যখন কোনও টিম-এ কাজ করছ, তখন কেবল ভাবনা এবং পরিশ্রম দিয়ে টিমকে সমৃদ্ধ করলেই হবে না। নিজেকেও সহকর্মীদের অনুভূতির সঙ্গে গড়েপিটে নিতে হবে; ঠিক কাজটা বের করে আনার জন্য প্রয়োজনে কঠোরও হতে হবে। টিমওয়ার্ক মানে কিন্তু একটা টিমকে দিয়ে কতটা কাজ করানো গেল তা নয়, একটা টিম নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে কতটা কাজ করল, সেটাই আসল।
থিংকিং স্কিলস
অন্যে যা ভাবছে, সেটাকেই সহজে গ্রহণ করো না। নিজের ভাবনা-চিন্তা-কল্পনার ওপর জোর দাও। এখন চাকরির ক্ষেত্রে যা প্রতিযোগিতা, তাতে নিজের কাজে যে যত সৃষ্টিশীল হতে পারবে, সে তত এগিয়ে যাবে।সমস্যা হলে দেখবে অধিকাংশ মানুষ সেটা নিয়েই মেতে যায়। কিন্তু যে সমস্যা সমাধান করে, সে-ই লিডার হয়। ফলে ঠান্ডা মাথায়, যুক্তি দিয়ে পরিস্থিতির বিচার করে, সমাধানের পথ খোঁজাটা বুদ্ধিমানের কাজ। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা একটা বড় দক্ষতা। একটা পরিস্থিতি কী চাইছে, সেটা বুঝে নিয়ে এবং সেই পরিস্থিতির কী কী সমাধান হতে পারে, সেটা ভেবে তোমার যা ঠিক মনে হবে, সেই অনুযায়ী একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনেকেই নানা রকম পথ বাতলাতে পারে, কিন্তু কোনও একটা পথ চিহ্নিত করতে বললে, দ্বিধায় পড়ে যায়। সেটা কাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারাটা খুব বড় গুণ। এই সব স্কিল কিন্তু শুধু কাজের জায়গায় সাফল্য পাওয়ার জন্য নয়। জীবনের প্রতি মুহূর্তে এর প্রয়োজন। পেশাদার জীবন আর ব্যক্তিগত জীবন নিশ্চয়ই আলাদা, কিন্তু একটা জীবন বাঁচতে হলে তার সাধারণ কিছু সমীকরণ থাকে, যা দুইয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। দু’ক্ষেত্রে দু’রকম নীতি তৈরি করলে কিন্তু কোনও দিকেই সফল হতে পারবে না।
এখনকার ডেভেলপারদের জন্য কয়েকটি সফট স্কিল
একজন প্রফেশনাল সফটওয়্যার ডেভেলপার হতে হলে প্রোগ্রামিং করার পাশাপাশি আপনাকে সাতটি স্কিল আয়ত্ত্ব করতে হবে।
টাচ টাইপিং আমার অনেক বন্ধুকে দেখেছি যে তারা অনেক ভাল প্রোগ্রামিং করতে পারে বা অনেক ভাল লজিক খাটাতে পারে কিন্তু একটা কোড লিখতেই অনেক সময় লাগে তাদের তারা টাচ টাইপিং (না দেখে টাইপ) পারে না। গিট ধরুন আপনি একটি প্রজেক্ট শুরু করেছেন ও তা গত ৩ মাস ধরে তৈরীর কাজ চলছে। তো এখন আপনার হয়তো প্রথম মাসের ২২ তারিখে বেলা ১২ টা পর্যন্ত যতটুকু কাজ হয়েছিল সেই টুকুই শুধু দরকার বা সেইটুকু রেখে বাকি টুকু বাদ দিতে হবে। কিন্তু সমস্যা হল এরই মাঝেতো হাজার হাজার লাইন কোড লেখা হয়ে গেছে ও তা অনেকবার মডিফাই করা হয়েছে। এখন আপনি বুঝবেন কিভাবে যে কতদুর কাজ করা হয়েছিল? (যদি না আপনি ম্যানুয়ালি ব্যাকআপ রাখেন! আর ম্যানুয়ালি এত কিছু ব্যাকআপ রাখাও হয়তো অনন্ত জলীলের অসম্ভবকে সম্ভব করার মত কিছু একটা হতে পারে)। তাহলে এখন কি করবেন আপনি? আবার ধরুন ৭ বা আরো অধিকজন প্রোগ্রামার বিভিন্ন দেশে আছে। তো সবাই মিলে একটা প্রজেক্ট করতে হবে। তাহলে সবার কোড একসাথে ম্যানেজ করবেন কিভাবে? এই সব সমস্যা সমাধানের জন্য ভার্শন কন্ট্রোল সিস্টেম গিট শিখতে হবে।
কোড এডিটর ধরুন আপনি বিশাল একটা ওয়েব বা অ্যান্ড্রোয়েড প্রজেক্ট শুরু করবেন। ডিজাইনের জন্য বা ব্যাকেন্ডের জন্য আপনাকে অনেক অনেক লাইনের কোড লিখতে হবে। আপনি যদি এই প্রজেক্টের কোডিং পার্ট নোডপ্যাড প্লাস প্লাস বা এইরকম কোন এডিটরে লেখেন তাহলে আপনাকে অনেক লাইন ও একই জিনিস বারবার টাইপ করতে হবে ও অনেক অতিরিক্ত সময়ও লাগবে। কিন্তু যদি কোন স্মার্ট বা প্লাগিন সমৃদ্ধ এডিটর ব্যবহার করেন তবে সময়ও বাচবে, টাইপিংও কমবে। তাই পছন্দমত একটা স্মার্ট এডিটর ও এর শটকাট গুলো ব্যবহার করতে শিখুন। বর্তমানে ওয়েবস্ট্রম ভালো এডিটর।
কমান্ড বেজড অপারেটিং সিস্টেম যেকোন একটা কমান্ড বেজড অপারেটিং সিস্টেম (যেমনঃ লিনাক্স বেজড কোন অপারেটিং সিস্টেম বা ম্যাক) ব্যবহার করা শিখতে হবে। তাহলে আপনার কাজের গতি বাড়বে সেই সাথে আপনার কাজ সুরক্ষিত থাকবে ও ওপেন সোর্স কমিউনিটিতে আপনার আবদান বাড়বে এবং কমিউনিটির সাথে থাকতে থাকতে আপনার কাজ আরো ইফিশিয়েন্ট হবে।
ডিজাইন প্যাটার্ন সর্বপ্রথম নিজে চেষ্টা করতে হবে (কোন ডিজাইন প্যাটার্ন না দেখে) তারপর বিভিন্ন প্রকার ডিজাইন প্যাটার্ন সম্পর্কে জানতে হবে (যেমনঃ এমভিসি প্যাটার্ন) ও সে অনুসারে কাজ করতে হবে। কারণ, এগুলো আপনার কাজকে আরো গতিশীল করবে ও আপনার প্রজেক্টকে আরো ইফিশিয়েন্ট ও সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন করবে।
ডাটাবেজ সবার আগে জানতে হবে ডাটাবেজ কি ও কেন?সহজ কথায় ডাটাবেজ বলতে কোন একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আমাদের ডাটাগুলোকে পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে রাখা যাতে প্রয়োজন অনুসারে সেগুলো দিয়ে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারি ও কাজ শেষে ডাটাগুলোর ক্রমও যেন ঠিক থাকে। যতই দিন যাচ্ছে ততই আমাদের ডাটার পরিমাণ বাড়ছে। তাই ওয়েব, ডেস্কটপ এমনকি এখন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনেও ডাটাবেজের প্রয়োজন পড়ে।
ফ্রেমওয়ার্ক আপনি যেই প্লাটফর্মে কাজ করতে চান সেই প্লাটফর্মের জন্যে জনপ্রিয় বা আপনার প্রিয় একটা ল্যাংগুয়েজ চয়েজ করুন এবং সেই ল্যাংগুয়েজে ভাল দখল রাখুন। ভাল দখল রাখার পাশাপাশি সেই ল্যাংগুয়েজের কোন একটা সহজ ও ছোট ফ্রেমওয়ার্ক চয়েজ করে সেই ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে কিছু ছোট-খাটো প্রজেক্ট করুন। তারপর কোন একটা জনপ্রিয় ও মার্কেট ডিমান্ডেবল ফ্রেমওয়ার্ক চয়েজ করে সেটা দিয়ে কিছু প্রফেশনাল টাইপের প্রজেক্ট করুন আর ধীরে ধীরে আপনার সিভিকে ভারী করতে থাকুন।
২০১৮ সালের শীর্ষ ১০টি আইটি স্কিল
কম্পিউটার সায়েন্স ও ডেটা সায়েন্স বর্তমানে আমরা এমন একটি জগতে বাস করছি যেখানে প্রায় প্রতিটি মোবাইল ডিভাইস এক ধরনের পার্সোনাল ডেটা অ্যাসিস্ট্যান্ট (PDA) বা মিনি কম্পিউটার ডিভাইসে রূপান্তরিত হয়েছে, আপনি আপনার ফোনটিকেই কম্যুনিকেটর হিসেবে ব্যবহার করছেন। ডিভাইস থেকে ই-মেইল পাঠাচ্ছেন/ চেক করছেন, এমনকি গ্রাফিক্যাল ডিজাইন করছেন। এই যে নানা ধরনের অ্যাপস ও প্রোগ্রাম তা বানাতে অবশ্যই কার্যকর ভূমিকা রাখছে সিএসই গ্রাজুয়েটরা। এছাড়াও প্রয়োজনীয় তথ্য, উপাত্ত ও স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিপোর্ট পেতে প্রতিটি কর্পোরেট ও মিডিয়ার প্রয়োজন পড়ছে প্রতিমুহূর্তেই নিজস্ব ডেটা সায়েন্টিস্টদের সহায়তা । তাই কম্পিউটার বিজ্ঞানের এই মৌলিক ক্ষেত্র দুইটিতে সাধারণ ও বিশেষায়িত দক্ষতার বিকাশের গুরুত্ব মোটেও কল্পনাপ্রসূত নয়।
সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং ২০১১ সালে, সেলিব্রিটি প্রাতিষ্ঠানিক পুঁজিবাদী মার্ক এন্ড্রিসেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি উল্লেখযোগ্য নিবন্ধে তুলে ধরেন সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং এর ভূমিকা। নিবন্ধটির নাম ছিল, “Why Software Is Eating the World”। সফটওয়্যার কোড ক্লাউড-ভিত্তিক সিস্টেম, মোবাইল ডিভাইস, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং স্মার্ট যন্ত্রপাতিগুলির মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন মনোযোগ জাগিয়ে তোলার সাথে সাথে আন্দ্রেসেনের প্রেক্ষাপটে পরবর্তী বছরগুলোতে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এটি সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই: প্রতিভাবান কোডারের প্রয়োজন শুধুমাত্র বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
সাইবার সিকিউরিটি প্রায় প্রতিদিনই আমরা কোন না কোন ডেটা সার্ভার ব্রীচ বা তথ্য হ্যাকিং ঘটনা সম্পর্কে ছোটবড় খবর শুনতে পাই। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রসারে এই ঘটনা গুলো সম্পর্কে জানতে পারা বর্তমান সময়ে খুবই স্বাভাবিক। তবুও এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যার কোন খোঁজ চার দেয়ালের বাইরে আসে না। বিশেষ করে বড় বড় কর্পোরেট বা ব্যাংক প্রায় সময়ই সাইবার আক্রমণের শিকার হন। সেলিব্রিটিদের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার প্রচেষ্টা চলে। চলে সাইবার বুলিং ও ব্ল্যাকমেইলিং এর মত সাইবার ক্রাইম। এমনকি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়ও চলে রাষ্ট্রায়ত্ত সাইবার অ্যাটাক। যা এমন কি কোন দেশের অর্থনীতিকেও ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। তাই প্রত্যেক নিরাপত্তা সংস্থা খোঁজ রাখে ভালো সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট এর। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের চাহিদা সব সময়ই আকাশচুম্বী।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং সাম্প্রতিক সময়ে সিলিকন ভ্যালিতে একটি বিতর্ক সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে। এই বিতর্কের নাম হতে পারে,”Human Mind Versus Machines.” অনেক প্রোগ্রামার ধারণা করছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমান মেশিনগুলি মধ্য শতাব্দীর মধ্যে বুধিমত্তায় ও কর্ম দক্ষতায় মানুষ কে ছাড়িয়ে যাবে – নতুন ধরণের কাজ শিখতে, ভাষা শিখতে মেশিনগুলির ডেভেলপার বা প্রোগ্রামারদের উপর নির্ভর করতে হবে না! যার কারণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং দ্বারা পরিচালিত এই নতুন প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জগুলি পরিচালনা করার জন্য পর্যাপ্ত যোগ্য ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাচ্ছে না। মানুষের দ্বারা উদ্ভাবিত মেশিন যদি মানুষের চেয়ে স্মার্ট হয়ে হয়ে যায় তবে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়, তাই বিশ্ব মানবতা ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সাথে জড়িত তথ্যগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত বলেই বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) চলতি ২০১৮ সালের মধ্যে আমরা দেখতে পাবো নতুন আর এক প্রযুক্তির উত্থান, যার নাম IOT বা InterneT of Things. ইন্ডাস্ট্রি গুলোতে আইওটি সেন্সর এর গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টির হারও দেখতে পাব। আইওটি ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ম্যানুফ্যাকচারিং, অটোমোটিভ, অ্যারোস্পেস, ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে বেশবড় প্রভাব ফেলেছে। প্রযুক্তিবিদরা তো আইওটি’র যুগকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উত্থান বলেও ধারণা করছেন। ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স, সফটওয়্যার, সেন্সর, নেটওয়ার্ক সংযোগের সাথে সংযুক্ত ফিজিক্যাল ডিভাইস যা পরিবহন, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, অ্যাকচুয়েটর এবং অন্যান্য ডিজিটাল আইটেমের নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত এবং তথ্য বিনিময় করতে সক্ষম। অন্যান্য সেক্টরেও আইওটি’র বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে যার মধ্যে আছে শিপিং, রিটেইল, এগ্রিকালচার এবং হেলথকেয়ার। এই সম্প্রসারণে আরো অনেক আইওটি প্রফেশনাল নিয়োগের প্রয়োজন হবে, একই সাথে ইন্ডাস্ট্রিতে সৃষ্টি হবে আইওটি সংশ্লিষ্ট হাজারো পদ।
ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এতোটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে স্ক্রিন ও কীবোর্ড ইন্টারঅ্যাকশনগুলি হতে সবাই দূরে সরে যাচ্ছে। ডিজিটাল অ্যাসিস্টেন্স হিসেবে Alexa, Siri, Echo ব্যবহারকারীদের মাঝে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ২০১৮ সালে, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে কারণ এটি ব্যবহার করা অনেক বেশি সহজ এবং সুবিধাজনক। আপনি ভাবুন না শুধুমাত্র ভয়েস কমান্ডের সহায়তায় দরজা খুলছেন, আলো জ্বালাচ্ছেন জীবন যাপন হবে আরামদায়ক। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এর সাহায্যে হোম অটোমেশন সিস্টেম এবং আইওটি নেটওয়ার্কগুলির সাথে ভয়েস কমান্ড এর ব্যবহার সংযুক্ত হয়ে আসবে নতুন শিল্প বিপ্লব।
বায়োটেকনোলজি এবং হেলথ কেয়ার আইটি নানা ধরণের ঔষধ এবং থেরাপির জন্য বায়োটেকনোলজি প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে যা আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করে তুলছে। বায়োটেকনোলজি, জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্মিলিত সহায়তায়, এমন সব নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে এসেছে যা দীর্ঘজীবন ও সুস্থতাকে কেন্দ্র করে মানবকল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভ্যাক্সিন প্রোডাকশন থেকে জেনেটিক মডিফিকেশন বায়োটেকনোলজি রয়েছে সবখানে। তাই বায়োটেকনোলজি বিষয়ে সদ্য নতুন স্নাতকদের জন্য বায়োটেকে ক্যারিয়ার গড়া হতে পারে এক অসামান্য সুযোগ। এছাড়াও হেলথ কেয়ার আইটি খাতে বহুল সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। একটি সময় ছিল যখন যেমন হাসপাতাল এবং ডাক্তারের অফিস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ম্যনুয়ালি ফাইল-ফোল্ডার সংরক্ষনের ব্যবস্থা ছিল। দরকার হতো বিশাল স্টোরেজ রুমের।কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে রেকর্ড রাখার ব্যবস্থার পাশাপাশি ক্লাউড-ভিত্তিক ডেটা স্টোরেজ এর ব্যবস্থা রয়েছে। তাই এই ক্ষেত্রে হেলথ কেয়ার আইটি এক্সিকিউটিভ এর সংখ্যা বাড়ছে।
শিল্পকৌশল রোবোটিক্স এবং অটোমেশন শিল্প বিপ্লবের শুরু থেকেই মানব মনে ম্যাকানিকাল প্রযুক্তি বা রোবট এর প্রতি এক ধরণের ভীতি কাজ করে। মনব মনের ভয় তাঁদের শিল্পভিত্তিক বা জ্ঞানবৃত্তিক পেশা আজ বা কাল অটোমেশনের শিকার হবে। শ্রমজীবী বা মেধাজীবী সকলেই হারাবে নিজ নিজ চাকুরী। তাঁদের স্থলে নিয়োগ করা হবে রোবটকে। এই ভীতি যে পুরোপুরি ভিত্তিহীন তা কিন্তু নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ও আইওটি ডিভাইসের বহুল ব্যবহার অনেকটা এই ভয়গুলির স্বপক্ষেই কাজ করছে। কিন্তু একটু ভাবুন তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কি সুযোগ রয়েছে মানবীয় চিন্তা, চেতনা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করার। মানুষ মেশিন চালায়, মেশিন মানুষ কে নিয়ন্ত্রন করে না। তাই এটা নিয়ে কাজ যারা করছে সেখানেও লুকিয়ে রয়েছে অযুত সম্ভাবনা।
ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং বিজনেস ইন্টেলিজেন্স তথ্য যদি হয় ক্ষমতার উৎস তবে আগামীতে কি হতে যাচ্ছে সেই পূর্বাভাস পেতে প্রয়োজন অভিজ্ঞদের কৌশল ও অ্যানালিসিস। তার জন্য প্রয়োজন সেই পরিমাণ মেধাবী জনশক্তি যারা বিজনেস ও ব্র্যান্ডিং এ আনবে নতুন ধারণা, ৬মাস আগে ধরতে পারবে ক্লায়েন্ট মাইন্ড সেট ও আপকামিং বিজনেস ট্রেন্ড। যাদের হাতে আছে সেই পরিমাণ তথ্য খুঁজে বের করার দক্ষতা, যারা জানে বিগ ডেটা অ্যানালিসিস তাদের জন্য রয়েছে সম্ভাবনার নতুন জগত আর তাদের আয় কল্পনাতীত।
নমনীয় দক্ষতা বা সফট স্কিলস ও ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স বিজ্ঞানীরা এবং ইঞ্জিনিয়াররা সাধারণত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে লজিক্যাল যুক্তি অনুসরণ করেন। প্রায়শই, তারা সফট স্কিলস এর সহায়তায় কিভাবে দক্ষতাকে সঠিক পথে নির্দেশিত করে লক্ষ্য অর্জন করা যায় সে সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। ফলশ্রুতিতে টেকনিক্যাল টিম ও ম্যানেজারিয়াল টিমের কাজের ক্ষেত্রে গ্যাপ থেকে যায়। কোম্পানি ও তার লক্ষ্যমাত্রা সহজে নির্ধারণ করতে পারেন না। তাই বর্তমান সময়ে টেকনিক্যাল লিডার কে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স ম্যানেজমেন্ট এর পাশাপাশি কমিউনিকেশন ও সফট স্কিল এ দক্ষ হতে হয়। যারা ব্যালেন্সড ম্যানেজার তাদের চাহিদা তাই ইন্ডাস্ট্রিতে আকাশচুম্বী।
অনলাইনে দক্ষতা বাড়ানোর সাইট ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সেলস ম্যানেজমেন্ট, সমাজবিজ্ঞান অথবা ডিজিটাল ফটোগ্রাফিতে ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট ডিগ্রিধারী হতে চান এমন একটি ওয়েবসাইট হলো এলিসন। সাইটটিতে নির্দিষ্ট বিষয়ের সকল মডিউল শেষ ও কমপক্ষে ৮০ শতাংশ স্কোর পেলে এলিসন থেকে অফিসিয়াল ডিপ্লোমা অথবা সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
কলেজ লেভেল কোর্সের জন্য কোরসেরা বিগডেটা সম্পর্কে জানতে চান? ইন্টার্যাকটিভ ডিজাইন শিখতে চান? ব্যবসায়িক দক্ষতা বৃদ্ধি কিংবা এ ধরণের বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্বের সেরা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় যেমন স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, জন হোপকিনস ইউনিভার্সিটি, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি, ডিউক ইউনিভার্সির বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করতে চান?তাহলে কোরসেরা আপনার জন্য সেরা ওয়েবসাইট। এর লেকচার ও নন-গ্রেডেড উপকরণ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়, তবে আপনি যদি অফিসিয়াল গ্রেডেড অ্যাসাইনমেন্ট ও সার্টিফিকেট পেতে সেক্ষেত্রে ফি পরিশোধ করতে হবে।
অনলাইন কলেজ কোর্সের জন্য ওপেন এডুকেশন ডাটাবেজ শিক্ষা কিংবা প্রফেশনাল ক্যারিয়ারের জন্য ১০ হাজারেরও অধিক অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ রয়েছে ওপেন এডুকেশন ডাটাবেজ এ।এমআইটি থেকে ম্যাথ ও ইঞ্জিনিয়ারিং, মিশিগান ইউনিভার্সিটি থেকে হেলথ ও মেডিকেল বিষয়ে একাধিক ডিগ্রি লাভ ও ইন-ডিমান্ড স্কিল শেখার জন্য কাজের একটি ওয়েবসাইট এটি।
দক্ষতা ও ব্যক্তিগত উন্নয়নে ইউডেমি পদার্থ, গণিত, রসায়ন, আঁকাআঁকি, প্রোগ্রামিং, আর্কিটেকচার, মিউজিক, ব্যবস্যা, আর্ট, ইয়োগা, বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা, মোটর ড্রাইভিং, গেমস, গিটার, ড্রাম, বেহালা, মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, আইইএলটিএস, স্পোকেন ইংলিশসহ হাজারো কোর্স দিয়ে সাজানো ইউডেমি। ভিডিও কিংবা পাঠযোগ্য কম্পোনেন্ট ছাড়াও প্রশিক্ষককে মেসেজ করেও বিভিন্ন বিষয় শেখার সুযোগ রয়েছে। বিনামূল্যের পাশাপাশি এখানে অল্প ফি দিয়ে কিছু কিছু কোর্স সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে।
সফট স্কিল ট্রেনিংয়ের জন্য স্কিলশেয়ার কফি বানানো থেকে শুরু করে দক্ষ ইনস্টাগ্রামার, আর্টিস্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নানা সফট স্কিল কোর্স দিয়ে সাজানো স্কিলশেয়ার।ভিডিওর মাধ্যমে কোর্সগুলো চলে। প্রতিটি কোর্সের একটি প্রকল্প থাকে যেখানে শিক্ষার্থী কে কি শিখতে তা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারে।সাইটটিতে বিনামূল্যে ৩৫৩ ক্লাস, কমিউনিটি ও মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তবে মাসে ৮ ডলার পরিশোধ করে প্রায় ৩ হাজার ক্লাস ও অফলাইনে দক্ষ হওয়ার সুবিধা রয়েছে।
ভাষা শেখার জন্য ডুয়োলিংগো মজার মাধ্যমে নতুন ভাষা শিখতে চান তাহলে যথাযথ হলো ডুয়োলিংগো। সঠিক উত্তর ও একে লেভেল থেকে অন্য লেভেলে অতিক্রম করে পয়েন্ট পাওয়া যায় এখানে। বলা, শোনা, অনুবাদ অথবা মাল্টিপল চয়েজ চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে সহজে ও দ্রুত কোর্সগুলো শেখা যায়। উদাহরণস্বরুপ, আপনি যদি ফ্রেঞ্চ কিংবা ইটালিয়ান দ্রুত শিভতে চান তাহলে এই ওয়েবসাইট আপনাকে সাহায্য করবে, যা গতানুগতিক কোর্স ফরম্যাটের চেয়ে ভিন্ন।
রান্না শেখার জন্য দ্য কুলিনারি কুক ডিম ভাজি থেকে শুরু করে প্রফেশনাল রাধুনী হতে চান? সবই সম্ভব দ্য কুলিনারি কুক ওয়েবসাইটে। ধাপে ধাপে গাইডলাইন, ফিচার আর্টিকেল কিংবা টিপসের মাধ্যমে নানান রান্না শিখতে পারবেন বিনামূল্যে এই সাইট থেকে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার, টেকশহর, প্রিয়লেখা ও অনলাইন তথ্য।