আপনার স্বপ্ন কতোটা বড়? আকাশ সমান? এমআইটিতে ভর্তি হতে চান? হ্যাঁ চাইলে আপনিও পারবেন। সে জন্য আপনার অধ্যাবসায় অনেক জরুরি। শুনে নিন,এখানকার কিছু তথ্য।
১৯০১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ৮৯২ জন, তাঁদের মধ্যে ৯১ জন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সাবেক শিক্ষার্থী। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে এসেছেন দুনিয়া কাঁপানো অসংখ্য গবেষক, প্রকৌশলী, উদ্যোক্তা। সা রা পৃথিবীর কিশোর, তরুণদের কাছে এমআইটি তাই স্বপ্নের শিক্ষাঙ্গন। বাংলাদেশের কয়েকজন শিক্ষার্থীও এমআইটিতে পড়েছেন, পড়ছেন। পাস করে কেউ কেউ দেশে-বিদেশে গবেষণা, শিক্ষকতা কিংবা অন্যান্য পেশায় যুক্ত আছেন।
যাঁরা এমআইটিতে স্নাতক করতে চান, তাঁদের জন্য…
এমআইটিতে ভর্তির জন্য দুটো জিনিস লাগে। ভালো একাডেমিক রেজাল্ট আর কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস (সহ-শিক্ষা কার্যক্রম)। কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস বলতে এমন নয় যে আপনাকে কোনো না কোনো অলিম্পিয়াডে পদক পেতে হবে। আপনি হয়তো বিতর্ক করেন, ভালো ছবি আঁকেন, গান গাইতে পারেন। ওরা যেটা দেখে সেটা হলো আপনার ‘প্যাশন’ আছে কি না। আপনি আপনার ক্ষেত্রের সবচেয়ে বড় মঞ্চটাতে পৌঁছাতে পেরেছেন কি না। একাডেমিক রেজাল্টের ক্ষেত্রে সর্বশেষ ফলটা দেখালেই হবে না। ওরা বেশ দীর্ঘ সময়ের ফল দেখতে চাইবে। বাংলা মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের জন্য কলেজের প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ, টেস্ট, প্রি-টেস্ট, এসবের রেজাল্টও গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি আপনাকে একজন শিক্ষকের সুপারিশপত্র (রিকমেন্ডেশন লেটার) জমা দিতে হবে। আর লাগবে স্যাট পরীক্ষায় একটা ভালো স্কোর। স্যাটে গণিত ও ইংরেজির দক্ষতা যাচাই করা হয়। গণিতে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের সমস্যা হয় না। দুর্বলতা মূলত ইংরেজিতে। এমআইটিতে ভর্তির জন্য কয়েকটা রচনা লিখতে হয়। স্কুল, কলেজে আমরা যেমন রচনা লিখি, তেমন লিখলে কিন্তু হবে না। গল্পের মতো করে সহজ ভাষায় লিখতে হবে। আবেদনপ্রক্রিয়ার সময় অন্য কাউকে দিয়ে রচনা লেখালে কীভাবে যেন ওরা বুঝে ফেলে। ভালো রচনা লেখার জন্য ছোটবেলা থেকে বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য পড়া উচিত। এতে লেখালেখির অভ্যাস হবে, আবার মনও ভালো থাকবে।
ভালো জিপিএ আর গবেষণার বিকল্প নেই। কোনো শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে গবেষণা করতে পারেন। গবেষণা নিবন্ধ কোনো জার্নালে ছাপা হলে কিংবা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গবেষণা উপস্থাপনের অভিজ্ঞতা থাকলে খুবই ভালো। এমআইটির সুবিধা হলো, ভর্তিসংক্রান্ত যেকোনো জিজ্ঞাসা থাকলে ওদের ই-মেইল করা যায়। ই-মেইলের উত্তর দেওয়ার জন্য আলাদা একটা দল আছে। তাই যেকোনো প্রশ্ন থাকলে ওদের ই-মেইল (admissions@mit.edu) করতে পারেন।
বৃত্তি বা আর্থিক সহযোগিতা…
এমআইটিকে বলা হয় ‘নিড ব্লাইন্ড স্কুল’। যোগ্যতা ও চাহিদা বিবেচনা করে যার যতটুকু দরকার ওরা ততটুকুই আর্থিক সহযোগিতা (ফাইন্যান্সিয়াল এইড) দেবে। বৃত্তির ব্যবস্থা তো আছেই।তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভালো ফল খুব কাজে দেয়। বিশেষ করে গণিত ও ফিজিকস অলিম্পিয়াড। যাঁদের লক্ষ্য বড় তাদের একটু ছোটবেলা থেকেই গণিত, ইংরেজি দিতে মনোযোগ দিতে হবে।
ভর্তি
ভর্তির জন্য আবেদন করার সময় ৫টা প্রশ্নের উত্তরে ৫টা রচনা লিখতে হয়। প্রতিটা প্রশ্নের উত্তরই আমি একটু ভিন্নভাবে দেওয়ার চেষ্টা করতে হয়। প্রশ্ন হতে পারে, আপনার জীবনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা কী? এক্ষেত্রেে যাঁরা দেশের বাইরের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, তাঁদের পরামর্শ কাজে লাগতে পারে। এ ছাড়া প্রচুর পড়াশোনা করা লাগে। প্রয়োজন হয় সফট স্কিলেরও।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো।