TechJano

এ আই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে নাগরিক সেবায় স্বচ্ছতা – জবাবদিহিতা আনতে : পলক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন স্বাস্থ্যসহ নাগরিক সেবাকে আরো স্বচ্ছ, দ্রুত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ( এআই) প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সমাজকে সুনিপুণভাবে বদলে দিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন দেশের সেবা, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ উন্নয়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য ইত্যোমধ্যেই একটি গাইডলাইন ও টাইমফ্রেম প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আজ চট্টগ্রাম সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত জুম প্লাটফর্মে “বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সয় বিষয়ক” দুই দিনের প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়েই এআই প্রয়োগের ঢেউ লেগেছে। বিভিন্ন শিল্প কারখানায় নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তির পাশাপাশি এআই ব্যবহার শুরু হয়েছে। অতিসম্প্রতি ইন্টারনেট অব থিংকস এর সঙ্গে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স, বিগ ডেটা, ব্লক চেইন শব্দগুলো জোরালো ভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। এই টার্মগুলো ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি বিপ্লবে অনেক আগেই এআই নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর প্রভাব আমাদের দেশেও আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করেছে। বিশেষ কয়েকটি খাত, যেমন- সেবা, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ খাতে এআই এর ফলপ্রসু প্রায়োগিক দিক চিহ্নিত করা হয়েছে। সর্বোপরি ইতোম্যধ্যে রাইড শেয়ারিং, বাংলা চ্যাট বটের ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং, বিমান ও হোটেল বুকিং, রিয়েল টাইম ম্যাপিংসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বিদ্যমান প্রযুক্তিতে দেশের প্রযুক্তিপ্রাণ ৩৪ শতাংশ তরুণকে সফল ভাবে এআই প্রয়োগের জন্য তৈরির মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যত উন্নয়নে বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এআই এর যথাযথ প্রয়োগের জন্য আইসিটি বিভাগ ইতোমধ্যেই সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্র নির্ধারণের মাধ্যমে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

পলক বলেন টেকসই এআই ইকো সিস্টেম তৈরির উদ্যোগ নেয়া হযেছে। ৪র্থ শিল্পবিপ্লবে দারুণ প্রভাব ফেলবে এই এআই প্রযুক্তি। তবে অতি সম্প্রতি ইউরোপি ইউনিয়ন এআই প্রযুক্তির নীতিবিষয়ক গাইড লাইন প্রকাশ করেছে যেখানে এআই সিস্টেমের জবাবদিহিতা, বোধগম্যতা এবং পক্ষপাতশূন্য হওয়ার ওপর করা হয়েছে।

পলক আরো বলেন, জনগণকে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে এআই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার যাথার্থতা, গতিময়তা ও দক্ষতা বাড়ায়। অবশ্য এআই ব্যবহারের সফলতা নির্ভর করে ডেটার যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও ডিজিটাল অবকাঠামোর ওপর। এছাড়া নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ, স্কিল রিসোর্স, পর্যাপ্ত বিনিয়োগ, গবেষণা ও উন্নয়ন সুবিধা থাকা দরকার। এ কারণেই সরকার ইতোমধ্যেই ২৮টি হাইটেক পার্ক, ৬৪টি শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করেছে। চট্টগ্রাম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে দেশের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। আশা করছি, এই উদ্যোগ ভবিষ্যত প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের এআই এর মতো কাটিং এজ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দানের সুযোগ তৈরি করবে।

চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন। চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়ার মাল্টিমিডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের মালটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানগণ এবং দেশী-বিদেশী প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞগণ জুম অনলাইনে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। পরে প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

Exit mobile version