যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হলো ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’। মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে এই কনসার্টের আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের অধীন হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এতে সংগীত পরিবেশন করে বিশ্ববিখ্যাত জার্মান ব্যান্ড দল ‘স্করপিয়নস’ এবং বাংলাদেশের ‘চিরকুট’। কনসার্টের সহযোগী ছিলো বাংলাদেশি ইলেকট্রনি· ও টেক জায়ান্ট ওয়ালটন।
৬ মে স্থানীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী ৭ মে শনিবার সকালে) ‘লেট দ্য মিউজিক স্পিক’ প্রতিপাদ্যে কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে একাত্তরের ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ স্মরণে ম্যাডিসন স্কোয়ারের একই স্থানে ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’ আয়োজন করা হয়। কনসার্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থ গরীব দেশগুলোর শিশুদের সাইবার নিরাপত্তায় সহায়তা তহবিল গঠনে ব্যয় হবে। কনসার্টে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, এডভোকেট নূরুল ইসলাম, নাহিদ খান ও অপরাজিতা হক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী কাদেরী কিবরিয়া, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং ওয়ালটনের সিনিয়র এ·িকিউটিভ ডিরেক্টর আনিসুর রহমান মল্লিক প্রমুখ। কনসার্ট চলাকালে ১৪ হাজার আসন ক্ষমতার অডিটরিয়ামটি ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ। দর্শক-শ্রোতারা ‘স্করপিয়নস’ এবং ‘চিরকুট’ ব্যান্ডের জাদুকরী সুরের মুর্ছনায় মোহিত হন। জয় বাংলা ¯েøাগানে ম্যাডিসন স্কোয়ার যেন আবার ফিরে গিয়েছিলো একাত্তরের সেই ঐতিহাসিক কনসার্টে। কনসার্টে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ যোগ দেন। এ উপলক্ষ্যে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ওয়ালটনসহ অন্যান্য পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের লোগোযুক্ত সুদৃশ্য বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুনে সাজানো হয়। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে বাংলাদেশের মহান ¯^াধীনতা সংগ্রামের প্রতি বিশ্ববাসীর সমর্থন অর্জন ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যার চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে অনুষ্ঠিত হয় ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’। পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত সেতার শিল্পী পন্ডিত রবিশঙ্কর এবং তার বন্ধু জর্জ হ্যারিসনের উদ্যোগে আয়োজিত কনসার্টে উপস্থিত ছিলো ৪০ হাজার দর্শক-শ্রোতা। কনসার্টে অংশ নেয়া বিশ্ববিখ্যাত সংগীত শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন জর্জ হ্যারিসন, বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটন, পন্ডিত রবিশঙ্কর, বিলি প্রিস্টান, লিয়ন রাসেল, ব্যাড ফিঙ্গার এবং রিঙ্গো রকস্টার। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিশ্বজনমত গড়ে তোলায় ‘দ্যা কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। সেই কনসার্ট হতে প্রাপ্ত অর্থ ইউনিসেফের মাধ্যমে বাংলাদেশের শরণার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। ৫০ বছর পর সেই একই স্থানে বাংলাদেশের অর্জন ও সাফল্য তুলে ধরতে ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্ট’ অনুষ্ঠিত হলো। এ প্রসঙ্গে ওয়ালটনের সিনিয়র এ·িকিউটিভ ডিরেক্টর আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আছে। ¯^াধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ঐতিহাসিক একই ভেন্যুতে ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ আয়োজনের জন্য আইসিটি বিভাগকে অশেষ ধন্যবাদ। এমন একটি আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পেরে ওয়ালটন পরিবার গর্বিত। এ কনসার্টের মাধ্যমে বিশ্ববাসী নতুন এক বাংলাদেশকে জানলো। এর মাধ্যমে ইলেকট্রনি· ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্পে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি সবার সামনে তুলে ধরতে পেরে ওয়ালটন গ্রæপ অত্যন্ত আনন্দিত।