ফ্রিজ ও কম্প্রেসরে ক্ষতিকারক এইচএফসি গ্যাস ফেজ আউট প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি। তাদের প্রত্যাশা বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধের ক্ষেত্রে এ প্রকল্প একটি মাইলফলক হিসেবে পরিগণিত হবে। বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইউএনডিপি এবং ওয়ালটন সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে।
রোববার (৫ মে ২০১৯) রাজধানীর ইআরডি কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে
স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার
আহমেদ এবং ইউএনডিপি’র ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস কয়োকা ইউকোসুকা।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইআরডির এডিশনাল সেক্রেটারি সুলতানা আফরোজ, পরিবেশ বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি শামসুর রহমান এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম, ইউএনডিপির কেমিক্যাল ও মন্ট্রিল প্রোটেকল বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক আশরাফুল আম্বিয়া, ইআরডির সিনিয়র অ্যাসিস্টান্ট সেক্রেটারি মোহসিনা আক্তার বানু, ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম, অপারেটিভ ডিরেক্টর তৌফিক-উল-কাদের প্রমুখ।
এক বছর মেয়াদী ওই প্রকল্পের আওতায় ওয়ালটন কারখানা এবং সার্ভিস সেন্টারে ফ্রিজ এবং কম্প্রেসর থেকে পুরোপুরি এইচএফসি ফেজ আউট করে গ্রিন হাইড্রোকার্বন টেকনোলজির ব্যবহার নিয়ে কাজ চলছে। উক্ত প্রকল্পে এইচএফসি-১৩৪এ রেফ্রিজারেন্টের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব এইচসি-৬০০এ (আইসোবিউটেন) রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে বায়ুমন্ডলে বাৎসরিক প্রায় ২৩০ মেট্রিক টন এইচএফসি গ্যাসের নিঃসরণ রোধ হবে। এর মাধ্যমে বাৎসরিক প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ বন্ধ করা সম্ভব হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশ।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কিয়োকা ইয়োসুকা বলেন, বিশ্বে এইচএফসি কনর্ভাশন টেকনোলজি স্থাপনে ওয়ালটন এগিয়ে আছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধকল্পে এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার, ইউএনডিপি এবং বেসরকারি খাতে পার্টনারশিপের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিশ্বের প্রথম প্রযুক্তিগত পরিবর্তন প্রকল্প হাতে নেয়ায় বাংলাদেশ এবং ওয়ালটনকে অভিনন্দন জানাই। এ প্রকল্প শুধু ওজোন স্তর রক্ষায়ই অবদান রাখবে না, বরং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
মনোয়ার আহমেদ বলেন, ওয়ালটন অসাধারণ কাজ করছে। তারা কোয়ালিটি প্রোডাক্ট তৈরি করছে। পরিবেশ বিষয়ে তারা নিজের দায়িত্বে সুষ্ঠভাবে দারুণ কাজ করছে।
সুলতানা আফরোজ বলেন, মন্ট্রিল প্রোটোকল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ প্রশংসিত। এ বিষয়ে ওয়ালটনের কাজে আমরা গর্বিত।
এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ওয়ালটন কারখানায় আমরা শতভাগ কমপ্লায়েন্স রক্ষা করি। পরিবেশ সুরক্ষায় আমরা অতি যত্নশীল। যে কারণে গত বছর আমরা জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছি।
গ্লোবাল পার্টনার হিসেবে আমরা বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডগুলোর সাথে কাজ করছি। আমরা এখন শতভাগ ইনভার্টার টেকনোলজি ব্যবহার করছি।
তিনি এ প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য পরিবেশ বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ইআরডিসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানান।