TechJano

কম্পিউটার হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? কি করা উচিত

মানুষের শরীরের সুস্থতার সাথে আশপাশ পরিবেশের বেশ ভালো সম্পর্ক। গরমকালে এক ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়, বর্ষাকালে বা শীতে আরেক রকম। বিভিন্ন ঋতুতে ক্ষতিকর প্রভাবকগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকলেই নানা রকম রোগব্যাধি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। শরীরকে রক্ষা করার জন্য যেমন বিভিন্ন পন্থা অনুসরণ করতে হয়,তোমাদের অবসরের প্রিয় সঙ্গী কম্পিউটারের প্রতিও সে রকম যত্বশীল হতে হবে। সে জন্য অবশ্য খুব পরিশ্রম কিছু করতে হবে না,শুধু কতগুলো নিয়ম মেনে চললেই হবে।

১. পেটের এক-তৃতীয়াংশ খালি রাখা
কম্পিউটারের আবার পেট কোনটা? হার্ডডিস্ক। অবশ্য হার্ডডিস্ক বা মেমরিকে মাথার মগজের সাথে বেশি তুলনা করা হয়, তবে এখন হার্ডডিস্কই কম্পিউটারের পেট। গেমস আর মুভি দিয়ে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ভর্তি করে রাখার কোনই মানে হয় না। প্রয়োজনের ফাইলগুলো রেখে বাকিগুলো ডিলিট করে দেয়াই ভালো। বিশেষ করে সি ড্রাইভ যতটা ফাঁকা রাখা যায় ততই মঙ্গল। কারণ কম্পিউটার চালু অবস্থায় সি-ড্রাইভে অনেক ফাইল তৈরি হতে থাকে। এ জন্য কাজ চালানোর জন্য কমপক্ষে ৫ গিগাবাইট ফাঁকা জায়গা রাখা প্রয়োজন।

২. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ
নিজেকে পরিষ্কার রাখার জন্য যেমন প্রতিদিন গোসল প্রয়োজন, তেমনি কম্পিউটারও পরিষ্কার রাখার জন্য কিছু কাজ প্রতিদিন, কিছু কাজ সপ্তাহে একদিন, কিছু মাসে একদিন, কিছু তিন-চার মাসে একদিন করে করতে হয়। প্রতিদিন কম্পিউটার ব্যবহার শেষে ধুলাবালি থেকে রক্ষার জন্য ঢেকে রাখতে হবে, পাওয়ার- কেবল খুলে রাখতে হবে, ঠিকমতো শাটডাউন করতে হবে ইত্যাদি। আবার সপ্তাহান্তে কোনো শুকনো কাপড় দিয়ে কম্পিউটার টেবিল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদির ওপরের ধুলাবালিগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একবার স্ক্যানডিস্ক, ডিফ্রেগম্যান্ট প্রোগ্রাম চালু করা উচিত। প্রতি মাসে একবার সিপিউর ভেতরের অংশ সাবধানে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। সংযোগ পিনে ময়লা জমে যেতে পারে, সেটা পরিষ্কার করা। তবে হ্যাঁ, যে অভিজ্ঞ তাকে দিয়েই এ কাজ করানো উচিত, নয়তো পিন ভেঙে যেতে পারে।

৩. ভাবিয়া করিও কাজ,করিয়া ভাবিও না
কম্পিউটারের সুস্থতায় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়- কিছু করার আগে ভেবে নাও, জেনে নাও সিদ্ধান্ত সঠিক হচ্ছে কি না। উদাহরণ? পেনড্রাইভ ব্যবহারের সময় ভাইরাস চেক না করে ওপেন না করাই উত্তম। ভালো কোন অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে চেক করিয়ে তারপর ব্যবহার শুরু করা উচিত। অর্থাৎ, কম্পিউটারে ভালো অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল করে নেয়া এবং নিয়মিত আপডেট করে নিতে হবে। তোমরা যারা ইতোমধ্যেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করেছো এবং কেউ কেউ হয়তো ফেসবুকেও অ্যাকাউন্ট খুলে নিয়েছো, তাদের সতর্ক হওয়া উচিত অনেক বেশি। অপরিচিত ওয়েব অ্যাড্রেস সংক্রান্ত লিঙ্ক ওপেন করা, ফেসবুকে নোংরা কোন ছবি বা ভিডিওতে ক্লিক করা যাবে না। কারণ তোমার অগোচরেই তোমার ক্ষতি করে ফেলবে এই সকল ভাইরাস।

৪. চাই বিশ্রাম এবং ধৈর্য
কম্পিউটার ভালো রাখার অন্যতম শর্ত যথার্থ বিশ্রাম প্রদান। অর্থাৎ একটানা কম্পিউটার চালু না রেখে ব্যবহার শেষে বন্ধ করে দেয়া। এর ফলে অপচয়ও হয় না, কম্পিউটারের যন্ত্রাংশও টেকসই হয়। গেমস বা গ্রাফিকস সফটওয়ার চালানোর সময় অন্য অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলো না চালানোই উত্তম। কারণ এতে চাপ বেশি পড়ে। আর হ্যাঁ, কম্পিউটার থেকে সফটওয়্যার বা গেমস সরাসরি ডিলিট না করে আনইন্সটল করতে হবে। সরাসরি ডিলিট করলে কিছু ফাইল থেকেই যায়।

৫. সময় কিন্তু আমানত
এটা কম্পিউটার সুস্থ রাখার টিপস, কিন্তু প্রয়োগ করতে হবে ব্যবহারকারীর ওপর। সময়ের খেয়াল রাখতে হবে- কম্পিউটার-ইন্টারনেটে আসক্ত না হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমরা কম্পিউটার ব্যবহার করবো, কম্পিউটার যেন আমাদের ব্যবহার না করে সেদিকে তীক্ষ্ন নজর রাখতে হবে। অপ্রয়োজনে কম্পিউটার চালানো, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা কিংবা সময়ের হিসাব ছাড়াই গেম খেলা এই সকল অভ্যাস বাদ দিতে পারলে কম্পিউটারের সুস্থ থাকা অনেক সহজ হবে।
সুস্থ রেখো তোমার কম্পিউটার,
শুভ কামনা সবাইকে।

লেখক: আজিজুল হাকিম, তথ্যপ্রযুক্তি লেখক
মোবাইল : 01968481739
মেইল:azizulhakim2021@yahoo.com

Exit mobile version