TechJano

‘কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ীরা ডিজিটাল বাংলাদেশের চাকা সচল রাখতে কাজ করছে ’

ডিজিটাল বাংলাদেশের চাকা সচল রাখতে প্রযুক্তি হার্ডওয়্যার পণ্যের সরবরাহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত প্রায় বন্ধের উপক্রম। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার খাত আপাতত প্রায় বন্ধ। ডিজিটাল বাংলাদেশ সক্রিয় রাখতে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও স্বাস্থ্য অধিদফতর ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে কিছু তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বা মার্কেট চালু হয়েছে।

দেশের বড় দুই কম্পিউটার মার্কেট রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিসিএস কম্পিউটার সিটি ও এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান কম্পিউটার সিটি সেন্টার চালুর ক্ষেত্রে বেশ কিছু স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুটি মার্কেটের প্রবেশ মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, থার্মাল স্ক্যানার থাকছে। অন্যদিকে মার্কেটে ঢুকতে ক্রেতাদেরও মানতে হবে কিছু নিয়ম। ক্রেতাদের মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া একসঙ্গে বেশি ক্রেতা মার্কেটে প্রবেশ করতে পারবেন না।

দেশে প্রযুক্তি পণ্য ও প্রযুক্তি পণ্যের কাচামালের ঘাটতি আছে কি না চানতে চাইলে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর টেকজুমকে বলেন, দেশে প্রযুক্তি পণ্য ও প্রযুক্তি পণ্যের কাচামালের ঘাটতি নাই। সব ধরনের কাচামাল দেশে রয়েছে।

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) তাদের সদস্যদের জন্য একটি হেল্প লাইনের ব্যবস্থা করেছি যার মাধ্যমে সদস্যদের মধ্যে যদি কেউ বেতন দিতে না পারে বা তাদের কর্মচারীদের যদি খাদ্যের সমষ্যা হয় তারা যোগাযোগ করতে পারবে । এছাড়াও সহজ শর্তে সরকারি ও ব্যাংক থেকে লোন পেতে পারে তার জন্য চেষ্টা করছি । বিসিএস প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার্থে জোড়দার ভূমিকা রাখতে বদ্ধ পরিকর। আমরা নিয়মিতভাবে সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সম্মানিত পরিচালকবৃন্দ তাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে এই সেক্টরের সোনালী দিন ফিরিয়ে আনতে উদয়অস্ত মেধা এবং শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে মাননীয় সভাপতিসহ পুরো কার্যনির্বাহী কমিটি একাধিকবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন।

আইসিটি খাতে প্রায় ১০ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বলে। শুধু আইসিটি হার্ডওয়্যার থেকে বছরে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ সংগঠনটির সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর।

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) যুগ্ম সম্পাদক মুজাহিদ আল-বেরুনি সুজন টেকজুমকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাত জরুরি সেবা দিতে সরকারি নির্দেশনা মেনে আমরা মার্কেট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তথ্যপ্রযুক্তিও এখন জরুরি পণ্য। টেলকো, ইন্টারনেট ও সরকারিসেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেবা দিতেও প্রয়োজন হচ্ছে প্রযুক্তি পণ্য। তিনি বিসিএস’র পক্ষ থেকে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করে মার্কেটে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনি (ক্রেতা) নিরাপদ থাকুন, আমাদেরও নিরাপদ থাকতে সহায়তা করুন।

তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি ) বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা সীমিত পরিসরে মার্কেট দুটি চালু করতে পেরে ও প্রযুক্তি পণ্য আনা নেওয়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি ) বিভাগকে অন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।

মুজাহিদ আল-বেরুনি সুজন বলেন, আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনের বিসিএস কম্পিউটার মার্কেটে সীমিত সংখ্যক ক্রেতা প্রবেশ করতে পারবেন। মার্কেটের সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকবে। দেশে আরও যেসব কম্পিউটার মার্কেট, দোকান আছে সেসবও খুলতে পারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। যাদের জরুরিভিত্তিতে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে তারাও মার্কেট, দোকান খুলতে পারে।

তিনি আরো বলেন, আমরা ‘পাশে আছি বাংলাদেশ’ নামের এক উদ্যগ নিয়েছি যার মাধ্যমে ১০ হাজার পরিবারকে ১৫ দিনের খাবার দিতে চাই । আমরা ইতিমধ্যে ৩ হাজার পরিবারকে উপহার সমগ্রি দিয়েছি শিগ্রি আরো ৩ হাজার পরিবারের মধ্যে এই উপহার পৌছে দিবো।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারীতে অবরুদ্ধ বিশ্বে যোগাযোগ, লেনদেন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, খাদ্য, শিক্ষা, গণমাধ্যমসহ সব খাতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তথ্য প্রযুক্তি খাতের। দেশের এই খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সচল ও সেবা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) ।

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) করোনা পরিস্থিতিতে সদস্যদের ব্যবসায়িক অবস্থার অবনতি নিরসনে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। সদস্যদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে” অনুদানের পাশাপাশি সহজ শর্তে “পাঁচ বছর মেয়াদী দুই শতাংশ সুদে জামানতবিহীন” ঋণ চেয়েছে সংগঠনটি। এই খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সচল ও সেবা বজায় রাখতে রাখতে তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে ১৯৩০ কোটি টাকা অনুদান চেয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)।

Exit mobile version