মনে আছে হাই-টেক পার্কে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বস্তা বস্তা সিভি সংগ্রহ করা হয়েছিল? কিন্তু কোথায় গেল সেই সিভি? কতজন চাকরি পেয়েছে? যাঁদের চাকরি দেবার কথা সেসব প্রতিষ্ঠানে ওই সিভিদাতাদের কয়জন চাকরি পেয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা যায় না। চাকরিদাতারাও প্রকৃত তথ্য দেন না। কেউ কেউ বলেন, কয়েকজন চাকরি পেয়েছে। কিন্তু আসলে কেউ পেয়েছে কিনা তা যাচাই করবে কে?
প্রায় এক বছর হতে চলল সিভি জমা নেওয়ার। গত বছরের অক্টোবরে চাকরি মেলার নামে চাকরি প্রত্যাশীদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার চালায়। একদিনের জন্য আয়োজিত এ মেলায় চাকরির আশায় হাজার হাজার তরুণ-তরুণী ভিড় করেন। বলা হয়, ইনস্টান্ট চাকরির সুযোগের কথা।
মেলায় দেখা যায়, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে এক স্থানে স্তূপ করে রাখছেন। এ কারণে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করেন। যশোরসহ আশপাশের জেলা থেকে আসা বিপুল সংখ্যক চাকরিপ্রত্যাশী। ঠিকমতো সিভি জমা দিতে পারেননি।
সেদিন, সকাল ৯টায় মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আটটার কিছু আগে থেকে তরুণ-তরুণীরা টেকনোলজি পার্কে ঢুকতে শুরু করেন। সকাল ৯টার মধ্যে জনারণ্যে পরিণত হয় পার্ক চত্বর। ভবনের অভ্যন্তরে আয়োজিত মেলায় ঢুকতে গিয়ে ফটকের সামনে জনজট তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামলাতে হালকা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। টেকনোলজি পার্কের কর্মকর্তারা ওই সময় জানান, মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বাছাই করে নেবে সিভির মধ্য থেকে। পার্কে বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী নিয়োগ দেওয়ার কথা।
যশোরে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রথম চাকরি মেলা ছিল এটি। মেলায় কর্মী নিয়োগে অংশ নেয়, অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড, দোহাটেক নিউ মিডিয়া, অগমেডিক্স বাংলাদেশ লিমিটেড, এমসিসি, অন এয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, কাজী আইটি সেন্টার, ফিফোটেক, ই-জেনারেশন লিমিটেড, বাক্য, ডিজিকন টেকনোলজিস, ওয়ালটন কম্পিউটার্স, ব্রিলিয়ান্ট আইডিয়াস লিমিটেড, যশোর আইটি, প্রিনিয়র ল্যাব, এনআরবি জবস, ওয়াটার স্পীড, উৎসব টেকনোলজিস লিমিটেড, সাজ টেলিকম, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেড, স্টেলার ডিজিটাল লিমিটেড, অ্যাম্বার আইটি লিমিটেডসহ আরও কিছু কোম্পানি।
ওই সিভি কোথায় গেল তা নিয়ে গত বছর টেকশহর ডটকম ও প্রিয় ডটকমে দুটি লেখা প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, ১০ বস্তার বেশি সিভি পাওয়া গেছে। একটি কোম্পানিকে দিয়ে এইসব সিভির একটি ডাটাবেজ করা হচ্ছে। এরপর যোগ্যতা ও চাহিদা অনুয়ায়ী এখান হতে কোম্পানিগুলো তাদের কর্মী নিয়োগ দেবে। কারও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। প্রত্যেকটি সিভি দেখা হবে। যশোরের এই সফটওয়্যার পার্কে শুরুতে প্রায় ৩ হাজার লোকের চাকরি হবে।
কিন্তু সেই সিভি আর অধিকাংশরে চাকরির স্বপ্ন শুধু প্রতিশ্রুতিই আটকে আছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরি দেওয়ার কথা অনেকগুলোই নানা সুবিধা নিচ্ছে, কিন্তু কয়জনকে চাকরি দিয়েছে তা প্রকৃতভাবে খোঁজ নেওয়া দরকার।