গ্রিজমান যে ম্যাচে গোল করে ফ্রান্স সে ম্যাচে কোনোদিন হারে না। এমবাপ্পের চমক দেওয়া গোল, পল পগবার বাম পায়ের শট গোলকিপার সুবাশিচের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না। বেচারা মদরিচ, রাকিতিচ, পেরিসিচ, মানজুকচিরা দেখলেন।
তবে লড়েছে ক্রোয়েশিয়া বাঘের মতোই। গোলকিপারের হাত থেকে বল কেড়ে নিয়ে গোল দেওয়া কিংবা দারুণ আক্রমণ সব ছিল। কিন্তু মাঝখানে ক্রোয়েশিয়া গোল খেয়ে ঘাবড়ে না গেলে হয়তো অন্যরকম হতো। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার চমক এখানেই শেষ হল। রানার আপ হল তারা। আর ফ্রান্স তারুণ্যর কাঁধে চেয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮ চ্যাম্পিয়ন।
মজার বিষয় দুটি দলই আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে এসেছিল। আজ মাঠে ছিল আর্জেন্টাইন রেফারি।
বিশ্বকাপের ফাইনালটাও হল ফাইনালের মতো। কেউ কাউকে ছাড় দেওয়ার মতো নয়। উত্তেজনাকর ফাইনালে শুরুতে ফ্রান্স এগিয়ে গেলে পরবর্তীতে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু ৩৮ মিনিটে গ্রিজম্যানের করা পেনাল্টি গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের প্রথমার্ধে ৩ গোল দেখলো সবাই।
দ্বিতীয়ার্ধে এসেও ফ্রান্সের গোল অভিমুখে একের পর এক আক্রমণ অব্যাহত রাখে ক্রোয়েশিয়া; কিন্তু ধারার বিপরীতে গোল দিয়ে বসে আবারও ফ্রান্স। ৫৯ মিনিটে অসাধারণ এক শটে গোল করেন পল পগবা। ৬ মিনিট পর, খেলার ৬৫ মিনিটে কাইলিয়ান এমবাপে দারুণ এক শটে গোল করলে ৪-১ গোলে এগিয়ে যায় ফরাসিরা।
পরে ফ্রান্সের গোল কিপার লরিসের ভুলে গোল পায় ক্রোয়েশিয়া। খেলায় ফেরার মরিয়া চেষ্টা করে। কিন্তু বিধি বাম!
চমকের বিশ্বকাপে ফাইনালের মঞ্চেও আরো একবার চমক দেখলো সবাই। ফাইনালের মঞ্চে ১৮ মিনিটেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ডি বক্সের বাইরে গ্রিজম্যানকে ফাউল করেন ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার। ফ্রি কিক পায় পায় ফ্রান্স। গ্রিজম্যানের নেওয়া সেই ফ্রি কিকে মানজুকিচের মাথা ছুঁয়ে বল জালে জড়ালে আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসে প্রথমবারের মত আত্মঘাতী গোল করলেন মানজুকিচ।
পিছিয়ে পড়ে দমে যায়নি ক্রোয়েশিয়া। ২১ মিনিটে ভিদার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৮ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে পেরেসিচকে ফাউল করে ফ্রি কিক পায় মদ্রিচ। মদ্রিচের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে ভিদার ক্রসে বা-পায়ের দুর্দান্ত শটে গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান ইভান পেরেসিচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন এই ইন্টার মিলান তারকা।
গোল খেয়েও কি বসে থাকার পাত্র ফ্রান্স? ফেবারিটের তকমা লাগানো ফ্রান্স ৩৫ মিনিটে কর্নার থেকে আক্রমণ করলে ইভান পেরেসিচের হাতে বল লাগলেও রেফারি এড়িয়ে যান। কিন্তু ভিএআরের মাধ্যমে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।
ফাইনালের মঞ্চেও ভিএআর নির্ধারক হয়ে দাড়ালো। স্পট কিক থেকে টুর্নামেন্টে নিজের ৪র্থ গোলটি করে ফ্রান্সকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান। বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসে পেরেসিচ দ্বিতীয় ফুটবলার যিনি ম্যাচে গোল করলেন এবং প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি উপহার দিলেন।