চলছে দাবদাহ। পড়েছে অস্বাভাবিক গরম। এরই প্রেক্ষিতে সারা দেশে উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে ফ্যান, এয়ার কুলারের মতো শীতল যন্ত্রের চাহিদা ও বিক্রি। আর এসব পণ্যের ক্রেতা আকর্ষণ ও বিক্রিতে শীর্ষে রয়েছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। স্থানীয় বাজারে এ বছর রেকর্ড পরিমান ফ্যান বিক্রি হয়েছে তাদের। গত বছর ওয়ালটনের যে পরিমান ফ্যান বিক্রি হয়েছিল, চলতি বছরের মে মাসের মধ্যেই তার প্রায় দ্বিগুণ ফ্যান বিক্রি হয়েছে। শুধু ফ্যানই নয়; দেশীয় ব্র্যান্ডটির এয়ার কুলারের বিক্রিও বেশ ভালো।
সূত্রমতে, ২০১৮ সালে সারা দেশে ২ লাখ ৭৩ হাজার ফ্যান বিক্রি হয়েছিল ওয়ালটনের। এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাসে তাদের টার্গেট- ৩ লাখ ১০ হাজার ইউনিটের মতো ফ্যান বিক্রি করা। বিপরীতে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ফ্যান।
অর্থ্যাৎ বছরের প্রথম পাঁচ মাসের লক্ষ্যমাত্রা ও গত বছরের মোট বিক্রির তুলনায় দেড়গুণ বেশি ফ্যান বিক্রি হয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটির।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম জানান, নিজস্ব কারখানায় জার্মানি, জাপান, তাইওয়ানসহ উন্নত বিশ্বের অত্যাধুনিক মেশিনারিজ ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে বিভিন্ন ধরণের ফ্যান তৈরি করছে ওয়ালটন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে এসব ফ্যানের মান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে কঠোরভাবে। মান নিয়ন্ত্রণে অনুসরণ করা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রোটেকনিক্যাল কমিশন (আইইসি)-এর স্ট্যান্ডার্ড। ফলে, স্থানীয় বাজারে অতি দ্রুত গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে এসেছে ওয়ালটন ফ্যান। এরইমধ্যে দেশের গন্ডী পেরিয়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ফ্যান এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হচ্ছে।
ওয়ালটন এয়ার কুলারের প্রোডাক্ট ম্যানেজার মো: জানেসার আলী জানান, এবার গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ এয়ার কুলার বিক্রির টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাজারে ছেড়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের নতুন মডেল। এর মধ্যে রয়েছে সুপার সেনসিটিভ টাচ কন্ট্রোল প্যানেল, রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম, ওয়াটার সর্টেজ অ্যালার্ম ও আয়োনাইজার প্রযুক্তির এয়ার কুলার। এসব এয়ার কুলারের দাম পড়বে ৫ হাজার ৫’শ টাকা থেকে ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। ইতোমধ্যে, গরমের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সারাদেশে এয়ার কুলারের বিক্রিও উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ছে।
ওয়ালটন ফ্যানের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ওমর খালিদ বলেন, ওয়ালটনের সিলিং, রিচার্জেবল, টেবিল, ওয়াল, প্যাডেস্টাল ও এগজাস্ট ফ্যান বিক্রি হচ্ছে আশাতীত। তুলনামূলক ঠান্ডা বাতাস, টেকসই, সাশ্রয়ী মূল্য, বেচিত্র্যময় ডিজাইন ও কালারের ফ্যান বাজারে ছাড়ায় এই গরমে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ওয়ালটন ফ্যান।
এবছর হ্যোয়াইট, অফ হ্যোয়াইট, পিঙ্ক ও ইনডিগো কালারের আকর্ষণীয় ডিজাইনের ১৫ মডেলের সিলিং ফ্যান বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। এসব ফ্যানের দাম পড়ছে ২ হাজার ৫৪০ টাকা থেকে ২ হাজার ৯৪০ টাকা। বাজারে ৩ হাজার ৬৯০ টাকা থেকে ৪ হাজার ২’শ টাকার মধ্যে ওয়ালটনের ৯ মডেলের রিচার্জেবল টেবিল ফ্যান পাচ্ছেন ক্রেতারা। আবার ডার্ক ব্লু, ব্লু, স্কাই ব্লু, ক্রীম হ্যোয়াইট ও হ্যোয়াইট কালারের মোট ৮ মডেলের ওয়াল ফ্যান বাজারে ছাড়া হয়েছে।
এগুলোর দাম পড়ছে ২ হাজার ২৯০ টাকা থেকে ২ হাজার ৭৫০ টাকা পর্যন্ত। ডার্ক ব্লু, স্কাই ব্লু ও ক্রীম হ্যোয়াইট কালারের ৬ মডেলের টেবিল ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে ২ হাজার ৯০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮’শ টাকায়। এদিকে ৫ হাজার ২’শ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ট্রাইপডযুক্ত ২ মডেলের প্যাডেস্টাল ফ্যান। এছাড়া, ২ হাজার ৭’শ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে অসংখ্য আকর্ষণীয় কালারের ১২ মডেলের প্যাডেস্টাল ফ্যান এনেছে ওয়ালটন। আবার গরম বাতাস দূর করে রুমকে ঠান্ডা রাখতে ওয়ালটনের ২ মডেলের এগজাস্ট ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে ৭’শ ও ৮’শ টাকায়।
উল্লেখ্য, দেশের প্রতিটি ঘরে উচ্চ প্রযুক্তি পণ্য পৌঁছে দিতে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের সহজ কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন।
এছাড়াও, দেশব্যাপী দ্রুত ও নিঁখুত বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ওয়ালটনের রয়েছে আইএসও স্ট্যান্ডার্ড সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যার আওতায় সারা দেশে ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে বিক্রয়োত্তর সেবা দিচ্ছে ওয়ালটন। আর এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ৩ হাজার প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান।