গ্রাফিক ডিজাইন জানেন ? না জানলে শিখে নিন গ্রাফিক ডিজাইন। এ খাতে ভালো কাজে ব্যাপক আয়। গ্রাফিক ডিজাইন ভিজ্যুয়াল যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান–ব্যক্তির যোগাযোগ ও বিপণনের জন্য গ্রাফিক ডিজাইনের ব্যবহার প্রয়োজন। বিভিন্ন গণমাধ্যম, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কাজের সুযোগ থাকে। তবে যদি কেউ কোনো প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ না করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে চান, তাঁদের জন্য বিভিন্ন অনলাইন বাজারে (মার্কেটপ্লেস) ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সৃজনশীলতা থাকলে শখের বশে শুধু করা ডিজিটাল আঁকাআঁকির কাজটি হয়ে উঠতে পারে আপনার আয়ের উৎস।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের শুরুর দিকে বেশ সতর্ক থাকতে হয়। কারণ, তখন একাই গ্রাহককে সামলাতে হয়। তা ছাড়া সব গ্রাহক বা ক্লায়েন্ট, কিংবা সব প্রজেক্ট ভালো না–ও হতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে তাঁদের কাজ করার অভিজ্ঞতা ও পরার্মশ শুনে নেওয়া যেতে পারে।
কী কী দক্ষতা প্রয়োজন
ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর ও ইনডিজাইনের কাজ জানলে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়। টাইপোগ্রাফি সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক। এইচটিএমএল সম্পর্কে সাধারণ ধারণা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
কী কী ধরনের কাজ পাওয়া যায়
সাধারণত ডিজাইনের কাজগুলোর মধ্যে থাকে লোগো ডিজাইন, ব্র্যান্ড গাইড তৈরি, বিজনেস কার্ড তৈরি, ওয়েব ডিজাইন, থিম ডিজাইন, ব্যানার অ্যাড তৈরি, পোস্টকার্ড-ফ্লাইয়ার তৈরি, পোস্টার ডিজাইন, ইনফোগ্রাফিকস তৈরি, ব্রশিউর ডিজাইন, টি-শার্ট ও মগ ডিজাইন, পণ্যের প্যাকেজিং, পণ্যের লেবেল ডিজাইন, বই ও ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ ডিজাইন ইত্যাদি। তা ছাড়া গেমস ও কার্টুনের চরিত্র আঁকাসহ আরও অনেক ধরনের কাজ পাওয়া যায়।
কোথায় কাজ পাওয়া যায়
অনলাইনে কাজ করার জন্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ফাইভার, ৯৯ডিজাইন, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার, পিপল পার আওয়ার ইত্যাদি। কাজ শুরুর আগে প্রতিটি মার্কেটপ্লেসে নিবন্ধন করে পোর্টফোলিও তৈরি করে নিতে হবে। নিবন্ধন করার সময় মার্কেটপ্লেসের শর্তগুলো ভালোভাবে পড়ে নেওয়া উচিত। নিজের পোর্টফোলিও সব সময় আপডেটেড রাখতে হবে।
পারিশ্রমিকের পরিমাণ
কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে মার্কেটপ্লেসগুলোতে পারিশ্রমিকের পরিমাণ কমবেশি হয়ে থাকে। যে কাজগুলো কম সময়ে ও কম পরিশ্রমে করা যায়, সেই ধরনের কাজের জন্য সাধারণত ৫ থেকে ৫০ ডলার পর্যন্ত পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। মাঝারি ধরনের কাজের জন্য ৫০ থেকে ১৫০ ডলার পর্যন্ত পাওয়া যায়। আর বড় প্রজেক্টের জন্য ১৫০ থেকে ৫০০ ডলার বা তার বেশিও পাওয়া সম্ভব।
গ্রাহকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা
ফ্রিল্যান্সিংয়ে গ্রাহকের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। কারণ, ক্লায়েন্টদের কাছ থেকেই পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। ভালো কাজের মাধ্যমে নতুন ক্লায়েন্ট তৈরি ও পুরোনো ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে আরও নতুন কাজ পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যেকোনো প্রজেক্ট পেলেই তা করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। যে প্রজেক্ট ক্যারিয়ারে গতি আনবে, এমন কাজই করা উচিত। তবে কোনো কারণে ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজের ব্যাপারে একমত হতে না পারলে ভদ্রভাবে ক্লায়েন্টকে না করতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে প্রফেশনাল ও বিশ্বস্ত হতে হবে।
সময় ও প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা
ফ্রিল্যান্সিং করলে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ক্লায়েন্টকে তাঁদের কাজ বুঝিয়ে দিতে হবে। আর একই সময়ে একাধিক প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করলে সময়ের ব্যাপারে আরও সতর্ক থাকতে হয়। কাজের পরিমাণ বেশি হলে অন্যদের সাহায্য নিয়ে হলেও যথাসময়ে কাজ জমা দেওয়া উচিত। সময়ের কার্যকর ব্যবহার ও প্রজেক্টের সুব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
ভুল থেকে শিখতে হবে। নিজের কাজকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যা আপনার মার্কেটিংয়ের কাজ করবে। সমালোচনাকে গ্রহণ করে আরও ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং একটি দায়িত্বও বটে। ভবিষ্যতে ভালো করতে চাইলে যত্নসহকারে, প্রফেশনালভাবে এবং দায়িত্ব নিয়েই কাজটি করা উচিত।