টেলিকম

গ্রামীণফোন সামাজিক সমস্যা সমাধানে দেশীয় স্টার্টআপদের সহাযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে

By Baadshah

July 09, 2020

কভিড-১৯ এর পরিবর্তিত নিউ নরমাল পরিবেশে উদ্ভাবনের মাধ্যমে স্থানীয় সামাজিক সমস্যার সমাধান হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। বৃহৎ আকারে সামাজিক সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে স্থানীয় স্টার্টআপদের সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যবাহত রাখবে গ্রামীণফোন।   নভেম্বরে ২০১৯ সালে শুরু হওয়া কর্মসূচি শেষে অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামের ষষ্ঠ ব্যাচের স্টার্টআপগুলোর জন্য প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল ডেমো ডে’র আয়োজন করেছে গ্রামীণফোন । গত ৭ জুলাই ভার্চুয়াল এ ডেমো ডে অনুষ্ঠিত হয়।

ডেমো ডে’তে শতাধিক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশেষজ্ঞ, অ্যাকাডেমিক এবং গ্রামীণফোন ও সিডস্টারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে নিজেদের ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করে গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামের আটটি স্টার্টআপ। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “এই কঠিন সময়ে এটি সত্যিই একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। আমি বিশ্বাস করি কভিড-১৯ এ অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে, ব্যবসায়িক কেীশল পরিবর্তন করতে হবে  এবং সেখানে ডিজিটাইজেশান হবে মূল চালিকা শক্তি। আমি আজকের সকল উদ্যোক্তাকে ধন্যবাদ জানাই। এরাই ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।   আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠান  সিড স্টারকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী চিন্তাধারাকে সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়া সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।  ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত সহায়ক। ’

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘প্রতিভাবান তরুণদের অংশগ্রহণ ও উপস্থিতি অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রামটিকে আমাদের জন্য অত্যন্ত উৎসাহমূলক। আমাদের চারপাশের সামাজিক সমস্যা দ্রুততার সাথে  কিভাবে উদ্ভাবন দিয়ে সমাধান করা যায়– তা বের করতে উদ্ভাবক ও পরির্তনশীল সৃষ্টিশীলতা আমাদের সহায়তা  করছে।  ডিজিটালাইজেশানে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উম্মোচনে অবদান রাখতে সমাধান বের করা, নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আমি প্রযুক্তিবান্ধব সকল উদ্ভাবকদের ধন্যবাদ দিতে চাই। এদেরকে উৎসাহ দিতে আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে এই কঠিন সময় মোকাবিলায় যখন আমাদের উদ্ভাবন দরকার  এবং একই সাথে  দেশের প্রত্যেকটি পর্যায় থেকে সবার অবদান এবং সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ন। আমি বিশ্বাস করি ভবিষৎ হবে প্রযুক্তিনির্ভর এবং এসকল উদ্ভাবনের উপর নির্ভর করেই আমরা কভিড-১৯ এর সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবো। আমি এই প্রযুক্তি যাত্রা বির্নিমানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়, আইসিটি মন্ত্রনালয় এবং সিড স্টার তাদের অবদান ও নিদের্শনার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

গ্রামীণফোনের চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম বলেন, ‘আমরা এক অভূতপূর্ব সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বৈশ্বিক মহামারির কারণে বিগত কয়েক মাস থেকে বাংলাদেশের র্স্টাস্টআপ ইকোসিস্টেম এক প্রতিকূল সময় পার করছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ আটটি স্টার্টআপের প্রবৃদ্ধি ও তাদের সফল পারফরমেন্সের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা আশা করছি, স্টার্টআপগুলোর জন্য এ ধরনের সহযোগিতা ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে এবং সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ বৈশ্বিক মহামারি স্টার্টগুলোর জন্য আমাদের শেখার এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তি নিয়ে আসতে সৃষ্টিশীল হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে, যা পরবর্তীতে স্টার্টআপগুলোকে সহায়তা করবে। এ বৈশ্বিক মহামারি সবার প্রতিদিনকার জীবনযাত্রাকে আরও বেশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে সম্পৃক্ত করেছে। এ বিষয়টিই স্টার্টআপগুলোকে বিকশিত হতে আরও বেশি সাহায্য করবে।’

এ কর্মসূচি চলাকালীন নিজেদের ব্যবসায়িক ধারণার উন্নয়নে স্টার্টআপগুলো স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক খাত বিশেষজ্ঞ ও পেশাদারদের কাছ থেকে নানা পরামর্শ পেয়েছে। এছাড়াও, এ কর্মসূচিতে স্টার্টআপগুলোর ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে তাদের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগে সহায়তা করেছে। এ কর্মসূচিতে প্রতিটি দলকে আনুমানিক ৬৫ লাখ টাকা সমমূল্যের সহায়তা প্রদান করা হয়। সিডস্টারের সাথে অংশীদারিত্বে গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটরের ষষ্ঠ ব্যাচের কার্যক্রম শুরু হয় গত বছরের নভেম্বরে। প্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপগুলোর ক্ষমতায়ন, বিকাশ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়াই গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটরের মূল লক্ষ্য।

গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর প্রোগ্রাম ব্যাচ ৬ এর আটটি স্টার্টআপের পরিচিতি:

লেট’স ফার্নিশ

অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ছাড়াই বাংলাদেশিদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে দেশের প্রথম ফার্নিচার রেন্টাল প্ল্যাটফর্ম লেট’স ফার্নিশ। এ প্ল্যাটফর্মে ফার্নিচার ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করেই ফার্নিচারের ভাড়া দিতে হবে এবং নতুন ট্রেন্ড অনুযায়ী গ্রাহকরা ফার্নিচার পরিবর্তন করতে পারবেন। লেট’স ফার্নিশ ব্যক্তিত্ব, আভিজাত্য এবং স্থায়ীত্বের ওপর ভিত্তি করে স্বতন্ত্রভাবে ফার্নিচার ডিজাইন ও তৈরি করবে।

আমার স্টক  

আমার স্টক হচ্ছে স্টক মার্কেট এবং ডাটা ওয়েবসাইট; যা আর্থিক বিশ্লেষণ, গবেষণা এবং ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজেশনে সহায়তা করবে।

শপওয়ে

যেসব রিটেইলার সাধারণত অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনা করেন না, তাদের জন্য ডিজিটাল মার্কেট হিসেবে কাজ করবে শপওয়ে। বাংলাদেশের রিটেইল অবকাঠামো ঠিক করতে ডাটা-চালিত ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক তৈরিতে কাজ করছে শপওয়ে।

ঢাকা কাস্ট

৪০ শতাংশ সাশ্রয়ে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তাদের বাসায় সকল পণ্য ও সেবা পৌঁছে দিবে ঢাকা কাস্ট। বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন সঙ্কটকালীন সময়ে সকল ধরণের রোগীদের জন্য অনলাইন লাইভ কনসালটেন্সি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে ঢাকা কাস্ট।

অটোট্র্যাক

অটো পার্টস এবং এ সংক্রান্ত সেবাদানের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম অটোট্র্যাক। অনলাইনে সহজে ও ঝামেলাহীনভাবে  মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ খুঁজে পেতে ও কেনার জন্য এটি কার্যকর একটি প্ল্যাটফর্ম।

এক্সপ্লয়েট

দেশের মধ্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ওয়ান-স্টপ ডিজিটাল সমাধান হিসেবে কাজ করবে এক্সপ্লয়েট। এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন ট্যুরিজম এজেন্সির দেয়া আকর্ষণীয় নানা অফার এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা পছন্দ করতে পারবেন, অফারের মধ্যে তুলনা করতে পারবেন এবং নিজেদের পছন্দের মতো ট্যুর প্যাকেজ তৈরি করতে পারবেন। এ প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশি খাবার, ভ্রমণস্থান এবং সংস্কৃতির প্রচারে কাজ করে।

ল্যান্ডনক

ব্যবসায়ের প্রতিযোগিতামূলক এ সময়ে মাঝারি থেকে বৃহৎ প্রতিষ্ঠান যেমন: এমএনও, এমএসএস, এফএমসিজি, ফার্মাসিউটিক্যালস, এনজিও, ব্যাংক, ডিস্ট্রিবিউটর এবং ডেলিভারি খাতের প্রতিষ্ঠানকে এ প্ল্যাটফর্ম তাদের মাঠকর্মী, টেকনিশিয়ান, মার্কেটিং রিপ্রেজেন্টিটিভ, বিক্রয়কর্মী সহ মাঠ পর্যায়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ও ট্র্যাকিং- এ সহায়তা করবে। এক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা মাঠকর্মীদের কাজের সকল তথ্য পাবেন এবং তাদের কাজ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

দর্জি-ই

পোশাক খাতে এন্ড-টু-এন্ড সেবাদাতা প্ল্যাটফর্ম দর্জি-ই।