গ্রামীণফোনের কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের প্রস্তাবিত সংগঠন ‘গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’ এর (জিপিইইউ) ব্যানারে এসব দাবি উত্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো উত্থাপন করেন জিপিইইউর সাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. শাফিকুর রহমান মাসুদ। তাদের দাবিগুলো হল, জিপিপিসি বেতন বৃদ্ধির যে প্রস্তাবনা দিয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা। গ্রামীণফোন পিপল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক জাহিদকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে তার মানহানির ক্ষতিপূরণ দেওয়া। কমপ্লায়েন্স হেড তোফায়েল আউয়ালকে চাকরি থেকে অপসারণ করা। কর্মীদের সকল ধরনের প্রজেক্ট বন্ধ করে চাকরির নিশ্চয়তা বিধান করা। কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। কর্মীদের যেসব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেসব চালু করা। ভাতা না দিয়ে কর্মীদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ না করানো ও তাদের নিয়মিত ছুটি ভোগের ব্যবস্থা করা। সংবাদ সম্মেলনে জিপিইইউ লিখিত আকারে অভিযোগও উপস্থাপন করে। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত কয়েক বছর ধরে গ্রামীণফোন শুধু জনশক্তি কমায়নি, বরং এর পাশাপাশি কর্মীদের সুযোগ-সুবিধাও একতরফাভাবে বন্ধ করেছে। গত পাঁচ বছরে মোট ৫৪ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও প্রতিষ্ঠানটি এর সামান্যই তার কর্মীদের পেছনে ব্যয় করেছে। লিখিত বক্তব্যে আরও অভিযোগ করা হয়, ২০১৫ সালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ১০০ ভাগ বাড়ানো হয়। তা ছাড়া অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি করা হয়। এর প্রভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যসহ আবাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত সবক্ষেত্রেই খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামীণফোনের সাম্প্রতিক বছরের আয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ও অন্যান্য খরচের কথা বিবেচনা করে গ্রামীণফোনের কর্মীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত গ্রামীণফোন পিপল কাউন্সিল (জিপিপিসি) এর নেতৃবৃন্দ একটি যৌক্তিক হারে বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন। কিন্তু কর্মী সংকট না থাকা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বেতন দেওয়ার খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে জিপিপিসির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং একতরফাভাবে সামান্য বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়। একতরফাভাবে সামান্য বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার পর কর্মীরা যাতে কোন আন্দোলন করতে না পারে, সে জন্য বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার আগেই দেশের প্রচলিত আইন, আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ষড়যন্ত্র মূলকভাবে জিপিপিসির বর্তমান সেক্রেটারি বি এম জাহিদুর রহমানকে গত ১৬ এপ্রিল চাকরিচ্যুত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জিপিইইউর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক, বাংলালিংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম সোহাগ, আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন ইউএনআই বিএলসির সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল, জিপিইইউর সাংগঠনিক সম্পাদক মাতুজ আল কাদরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।