TechJano

চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের আইটি হাব হিসেবে গড়ে তোলার এখনই সময়

দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও ই-জেনারেশন’র যৌথ উদ্যোগে ‘চট্টগ্রামকে তথ্যপ্রযুক্তির গন্তব্যস্থল এবং বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানীর প্রদর্শন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক ২০ ফেব্রæয়ারি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন অংশীদারদের এই গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম এবং সঞ্চালনা করেন ই-জেনারেশন গ্রæপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান। ই-জেনারেশন’র নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুল ইসলাম বৈঠকে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. সাইফুর রহমান মজুমদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই’র প্রফেসর শাহাদাত হোসেন, চিটাগাং চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, বিকেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, ওয়েল গ্রæপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম কমু, সোসাইটি অব আইটি প্রফেশনালস’র সভাপতি আবদুল্লাহ ফরিদ, এসএপি ইন্ডিয়ার সিনিয়র সলিউশন আর্কিটেক্ট সৌভিক দাশ, কেএসআরএম’র আইটির প্রধান হাসান মুরাদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ’র এসসিও মোঃ ওয়াকার খান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’র আইটি হেড ইকবাল হাসান, বিডি ভেঞ্চার’র চেয়ারম্যান এহসানুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত হোসেন, চালডালডটকম’র সিইও ওয়াসিম আলিম, বাগডুম’র সিইও মিরাজুল হক, বিআইপিসি’র চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, হ্যান্ডিমামা’র সিইও শাহ পরান, জেমসক্লিপ’র প্রতিনিধি আহনাফ মহসিন ও হ্যামার স্ট্রেন্থ ফিটনেস’র চেয়ারম্যান সৈয়দ জালাল আহমেদ রুম্মান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী, মোঃ জহুরুল আলম ও মোঃ আবদুল মান্নান সোহেলসহ বিভিন্ন সেক্টরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্যে চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন-বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু চট্টগ্রাম আইটি খাতেরও হাব হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। চট্টগ্রামে অবস্থিত বন্দর, কাস্টম, ইপিজেড, শিপিং, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং, সিএন্ডএফ ইত্যাদি কর্মকান্ডে আইটির ব্যবহার ব্যবসায়ীদের সময় ও ব্যয় সাশ্রয় করছে। শিল্পাঞ্চলের মত আইটি ভিলেজ স্থাপনের মাধ্যমে এ অঞ্চলে এ খাতের বিশাল উন্নয়ন করা যাবে। সরকারের পরিকল্পনার সাথে প্রাইভেট খাতের সমš^য়ের মাধ্যমে এক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন এ খাতে প্রশিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলে আউটসোর্সিং এ ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, ¯^ল্প পুঁজিতে ¯^নির্ভরভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশের ¯^প্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই আইটি-কে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত করতে হবে ও ব্যাপক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। চেম্বার সভাপতি শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি আইটি খাতেও চট্টগ্রাম অদূর ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দিবে বলে প্রত্যাশা করেন।

ই-জেনারেশন গ্রæপের চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন-১৯৮৩ সালে ভারতের বেঙ্গালোরো ইনফোসিস, উইপ্রো তাদের প্রধান কার্যালয় স্থানান্তর করে, এরপর অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানীরাও স্থানটি এখন ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশী কোম্পানীরা তুলনামূলক কম বেতনে অধিক জনবলকে চাকরি দেয়ার সুযোগ পায়। আর এভাবেই গোটা আইটি আউটসোর্সিং মডেল তৈরি হয়েছে। যথাযথ কৌশল ও উদ্যোগের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে দেশের তথ্যপ্রযুক্তির গন্তব্যস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এখনই সময়। বাংলাদেশের পুরাতন এবং বৃহৎ কর্পোরেশনগুলোর প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে রয়েছে। ইউনিলিভার, রেকিট এবং আরও অনেক কোম্পানী এই শহর থেকে ব্যবসা পরিচালনা করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনসহ শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বমানের প্রফেশনাল তৈরি করার পরেও চট্টগ্রামকে সম্ভাবনাময় বাজারের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির পরবর্তী গন্তব্যস্থল হিসেবে তৈরি না করার কোনো কারণ নেই।

ই-জেনারেশন গ্রæপের নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুল ইসলাম বলেন-আমাদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। সকল ব্যবসায় এবং এই খাতের উন্নয়নে বর্ধনশীল তথ্যপ্রযুক্তিতে সম্পৃক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। এই অঞ্চলে সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে ইকোসিস্টেম তৈরি করে স্টার্টআপগুলো এগিয়ে যেতে পারে এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানীগুলো সহায়তার মাধ্যমে তাদের দ্রুত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান বলেন-চট্টগ্রামকে সত্যিকার অর্থে আইটি হাব হিসেবে গড়ে তুলতে হলে এ খাতে পাবলিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং প্রশাসনিক ও কমার্শিয়াল রাজধানী পৃথকীকরণ করার জন্য ব্যবসায়ী সমাজকে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানানোর অনুরোধ জানান। গোলটেবিল বৈঠকে সরকারি ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নীতিনির্ধারক, শীর্ষ প্রযুক্তি খাতের নেতৃবৃন্দ, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামকে তথ্যপ্রযুক্তির পরবর্তী গন্তব্যস্থল হিসেবে তৈরি করতে প্রয়োজনীয় কৌশল, করণীয় ও ব্র্যান্ডিং নিয়ে আলোচনা করা হয়।

Exit mobile version