রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনাওগাঁও হোটেলের তিতাস রুমে সামনে লম্বা লাইন।সবার হাতেই সিভি। নাম নিবন্ধন করে এক এক করে তিতাস রুমে প্রবেশ করছে। এক চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করতেই চমকে যেতে হয়। ৭টি টেবিলে চাকরি প্রত্যাশী তরুণদের ইন্টারভিউ দেওয়া নেওয়া হচ্ছে। প্রতেক্যটি টেবিলে তিনজন করে তরুণ প্রত্যাশী ইন্টারভিউ দিচ্ছে। তেমনি একজন খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সদ্য পাশ করা শেখ মাসুদ রানা। এখন থাকছেন কলাবাগানে। একটি আইটি কোম্পানীতে চাকরি করে নিজের খরচ যোগাচ্ছে। চাকরির পাশাপাশি মাসুদ রানা নিজেকে তৈরি করছেন চাকরির বাজারের জন্য। নিজের তাগাদা থেকেই জেনেছেন বিপিও সম্মেলন সম্পর্কে। জেনেছেন দুইদিনের সম্মেলন থেকে অন্তত ৮০০ লোক নেবে এই খাতে। তাই ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিজেকে ঝাছাই করতে এসেছে। ‘আইসিটি পড়াশোনার কারণে প্রযুক্তি সেক্টরেই চাকরি করতে চাই। তাই বিপিও সামিটে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরির বর্তমান বাজার সম্পর্কে ধারণা নিতে এসেছি। একই সঙ্গে ‘অন জব স্পট ইন্টারভিউ’ দিতে এসেছি।
রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনাওগাঁও হোটেলের অনুষ্ঠিত ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৯’ এর শেষ দিনে তিতাস রুমে আয়োজন করা হয় ‘অন জব স্পট ইন্টারভিউ’। এতে হাজারের বেশি চাকরি প্রত্যাশী তরুণ তরুণী অংশগ্রহণ করে।
চাকরি প্রত্যাশী তরুণদের ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন এসএসএস সার্ভিস এসএসএস সার্ভিস সলিউশন প্রা. লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক (ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) ফেরদৌস ইফতেখার। অভিনব এ আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা যোগ্য প্রার্থীদের খুঁজে বের করার অন জব স্পট ইন্টারভিউয়ের আয়োজন করেছি। তরুণরাও এখানে ইন্টারভিউ দিয়ে নিজেদের মধ্যে জড়তা ভেঙ্গে দিতে পারছে। বেশ ভালো সারা পাচ্ছেন জানিয়ে ফেরদৌস ইফতেখার জানান, প্রযুক্তির এই সেক্টর নিয়ে তরুণ–তরুণীদের মধ্যে বেশ আগ্রহ রয়েছে।কথা হয় ঢাকা কলেজের পড়ুয়া মুসা কবিরাজের সঙ্গে। তিনি বেশ কয়েক সেট সিভি প্রিন্ট করে এনেছেন বিপিও প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেবার জন্য। মুসা বলেন, আমার এখন একটা চাকরি চাই। শুধু টিউশনি করে টিকে থাকা খুব কষ্টদায়ক। আশা করছি এবার আমি বিপিও খাতে চাকরি পাবো।
মার্স সলিউশন লিমিটেডর ট্রেইনার শম্পা রহমান জানান, আড়াই ঘন্টায় প্রায় এক শত জনের মতো ইন্টারভিউ নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিপিও সেক্টরে কাজ করার ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে তরুণীদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো।
এছাড়া সামিটের দ্বিতীয় দিন ২২ এপ্রিল সোমবার সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বলরুমে অনুষ্ঠিত হয় ‘ফ্রিলান্সার টু এন্টারপ্রেনর’ শিরোনামে দিনের প্রথম আয়োজন। একই সময় সুরমা হলে অনুষ্ঠিত হয় ‘ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সাভিসেস বিপিও: ইমাজিং রিস্ক ম্যানেজম্যান্ট অ্যান্ড সিকোরিটি ট্রেন্ডস’ শিরোনামে সেমিনার। বেলকনি হলে সকাল ১১টার ‘হেলথ্ কেয়ার আউটসোসিং’ শিরোনামে সেমিনার। দুপুর ২টার সময় অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় পর্বের আয়োজন। সুরমা হলে অনুষ্ঠিত ‘রোরাল বিপিও: দ্যা নিউ হরিজন অফ এম্পোলিমেন্ট ফর ইয়ং ভিলেজাস অফ বাংলাদেশ’ সেমিনারটি চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ২টার সময় মেঘনা হলে শুরু হয় ‘অপোরচুনিটিস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জাস অফ উমেন ওয়াকিং ইন বিপিও’ শিরোনামের সেমিনার। চতুর্থ বিপিও সামিট ২০১৯ এর সর্বশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় বেলকনি হলে। দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ‘আউটসোসিং টেলিকমিউনিকেশন সাভিসেস’ সেমিনার। এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে বলরুমে শুরু হবে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত বিপিও সামিটের সমাপণী অনুষ্ঠান।
বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৯ এ ৬০ জন স্থানীয় স্পীকার, ২০ জন আন্তর্জাতিক স্পীকার অংশগ্রহন করবে। এবারের বিপিও সামিটে ১২টি সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনের মূল্য আয়োজনের আগে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টিবেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে’র আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর আয়োজনে এই সামিট অনুষ্ঠিত হয়।