ওয়াটারএইড বাংলাদেশ ও সিটি গ্রুপের মধ্যে সম্প্রতি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সমঝোতা স্মারকের আওতায়, চা-বাগান এলাকায় নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন অবস্থার উন্নয়নে সিটি গ্রুপ গৃহিত সমন্বিত ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দেবে ওয়াটারএইড। স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী চা শ্রমিকদের ওয়াশ অবস্থার উন্নয়নে উদ্ভাবনী কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে এসডিজি-৬ এর ‘কাউকে পিছিয়ে না রাখা’র লক্ষ্য অর্জনে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ ও সিটি গ্রুপ একসাথে কাজ করবে। এক্ষেত্রে একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক ও টেকসই ওয়াশ উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে ওপর আলোকপাত করা হবে। এ জন্য দু‘পক্ষ একত্রে সমন্বিত ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কর্মসূচী গ্রহণ করবে। এ সমঝোতা স্মারকের অধীনে, ওয়াটারএইড চা-বাগানের সার্বিক ওয়াশ পরিস্থিতির উন্নয়নে পানীয় জল সরবরাহ ও স্যানিটেশনের টেকসই ডিজাইন তৈরিতে সহায়তা প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে। পাশাপাশি চা-বাগানে ওয়াশ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বাগান মালিকের প্রতিনিধি, বাগানে কর্মরত কারিগরি ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ বা তার সহযোগী সংস্থা এবং চা শ্রমিকদের প্রতিনিধি সমন্বয়ে ‘চা-বাগান ওয়াশ পরিচালনা কমিটি’গঠন ও তাদের সক্রিয় করতে প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবে। এছাড়াও চা-শ্রমিক প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে এবং কমিটির সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়নে ওয়াশ সংক্রান্ত ম্যানুয়াল এবং নির্দেশিকাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব ফজলুর রহমান। সিটি গ্রুপের পক্ষে টি-এস্টেট অপারেশন-এর মহাব্যবস্থাপক সাহ্জাদ সারওয়ার ও ওয়াটারএইড বাংলাদেশ-এর পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এ সময় সিটি গ্রুপের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির চিফ অ্যাডভাইজার পবন চৌধুরী এবং ওয়াটারএইডের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির কর্মসূচী পরিচালক হোসেন ইশরাত আদিব, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইমামুর রহমান, পলিসি অ্যাডভাইজার মো. সফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেসি স্পেশালিস্ট রঞ্জন ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি রাজধানীর গুলশান-২ এ অবস্থিত সিটি গ্রুপের অফিসে অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারি খাতের বিশাল ভূমিকা রয়েছে; কারণ, মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির সাথে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিকাশের প্রত্যক্ষ ও ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। সিটি গ্রুপের সাথে যৌথভাবে আমরা যে কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছি তা প্রান্তিক চা শ্রমিকসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধিসহ সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তার বিষয়টি নিশ্চয়ই সম্ভাবনার নতুন মাত্রা তৈরি করবে।” সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফজলুর রহমান বলেন, “আমরা যদি শ্রমিকদের উন্নত স্বাস্থ্য ও জীবন ধারণের বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে পারি, তবে তারা আরো দক্ষ হবে এবং তাদের কর্মদক্ষতাও বেড়ে যাবে। সিটি গ্রুপ ও ওয়াটারএইডের এ যৌথ প্রয়াস চা উত্তোলনকারী শ্রমিকদের নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে তাদের প্রাপ্য অধিকার ও চাহিদা পূরণ করবে।”