জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস ২০১৯-এর বিজয়ীদের সংবর্ধনা প্রদান করলো বেসিস। রাজধানীর লেক শো’র হোটেলের লা ভিটা হলে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড।
প্রসঙ্গত, চ্যা¤িপয়ন পদক তালিকায় এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স (অ্যাপিকটা) অ্যাওয়ার্ডস -২০১৯ এ চীন, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, ম্যাকাও, ব্রæনাই-কে পেছনে ফেলে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস ২০১৯-এ স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তিনটি ক্যাটাগরিতে চ্যা¤িপয়ন এবং পাঁচটি মেরিট পুরস্কার সহ মোট আটটি পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের প্রকল্পগুলো। এশিয়ার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের অস্কার হিসেবে খ্যাত অ্যাপিকটা’র এবারের আসরে চতুর্থ বারের মতো বেসিসের সার্বিক তত্ত¡াবধানে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ।
গত ২২ নভেম্বর ২০১৯ রাতে ভিয়েতনামের হা লং বে শহরের ডায়মন্ড প্যালেসে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এবার টেকনোলজি (আইওটি) ক্যাটাগরিতে বন্ডস্ট্যাইন এর পিজি ট্র্যাকার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল (জেনারেল) ক্যাটাগরিতে সূর্যমুখী প্রাণিসেবা এবং কনজ্যুমার (মার্কেটপ্লেস অ্যান্ড রিটেইল) ক্যাটাগরিতে এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর একশপ চ্যা¤িপয়ন হয়েছে।
অন্যদিকে কনজ্যুমার (মার্কেটপ্লেস) ক্যাটাগরিতে সিগমাইন্ড এর ইন্টেলিজেন্ট ক¤িপউটার ভিশন টেকনোলজি ফর ভিডিও এনালিটিক্স, ইনক্লুশন অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিসেস ক্যাটাগরিতে সিএমইডি ডিজিটাল প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস মডেল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং এন্ড সাপ্লাই চেইন ক্যাটাগরিতে প্রাইডসিস আইটি লিমিটেড এবং পাবলিক সেক্টর ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার (৩৩৩) এবং দূতাবাস “মেরিট” অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। মেরিট অ্যাওয়ার্ড অর্জনকারীদের দেওয়া হয় অ্যাপিকটার বিশেষ সনদপত্র। অ্যাপিকটার প্রেসিডেন্ট স্ট্যান সিং, ভিয়েতনাম সফটওয়্যার অ্যান্ড আইটি সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশনের (ভিনাসা) সহ সভাপতি লু থান লং এবং ভিনাসা-র মহাসচিব মিস নিগুয়ে থি থু জাং বিজয়ীদের মাঝে পদক ও সনদপত্র তুলে দেন।
বেসিস আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে অ্যাপিকটায় বাংলাদেশের ইকোনমিক কো-অর্ডিনেটর রাশেদ কামাল বলেন, এ বছর আমরা সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের অন্যতম পদক্ষেপ দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা। এ বছর অ্যাপিকটায় এ কাজটি আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডস থেকে মনোনীত ৩২টি প্রকল্প এবার ভিয়েতনামে আয়োজিত অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডে ভালো করেছে। আমরা নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছি। বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডসে আগামী ৫ বছরের জন্য আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড আর্থিক সহযোগী হিসেবে থাকতে পেরে আমি গর্ব বোধ করছি।
অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস ২০১৯ এ বাংলাদেশ দলের প্রধান এবং বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, প্রথমবার আমরা একটি মেরিট, পরের দুইবার একটি করে চ্যা¤িপয়ন এবং কিছু মেরিট পজিশনে জিতেছিলাম। এবার সব রেকর্ড ভেঙে তিনটি চ্যা¤িপয়ন এবং পাঁচটি মেরিট সম্মাননা অর্জন করেছি। এটা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, প্রতিনিয়ত আমরা ভাল করছি। আগামীবার এর থেকেও ভালো ফলাফল করার আশা করছি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রযাত্রায় বেসিস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডসে কিছুদিন আগেই ৬৯টি পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে। সেখান থেকে ৩২টি প্রকল্প বিশ্বের ৩২৭টিরও বেশি প্রকল্পের সাথে লড়াই করে দেশের জন্য ৮টি পুরষ্কার জয় করে এনেছে। অ্যাপিকটায় পুরষ্কার প্রাপ্তির পরপরই আমি ভিডিওকলে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছি। আজ আবারো জানাচ্ছি প্রাণঢালা অভিনন্দন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য অনুপ্রেরণা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবারের অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডসে বাংলাদেশের ভালো ফলাফল।
অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের, বাংলাদেশে অ্যাপিকটার এক্সিকিউটিভ কমিটি, অ্যাপিকটায় বাংলাদেশি বিচারক, ইকোনমিক কো-অর্ডিনেটরকে ফুলেল সংবর্ধনা প্রদান করেন প্রধান অতিথি। সবশেষে ধন্যবাদ বক্তব্য জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ইতি টানেন বেসিস পরিচালক জনাব দিদারুল আলম।