জাকারবার্গের ঘাড়ের ওপর বিপদ। নানা সমস্যা ফেসবুকে। কি করবেন তিনি? কি চাইছেন তিনি? জাকারবার্গ আপাতত সময় চাইছেন। তিনি বলছেন, সব ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু তার জন্য লাগবে যথেষ্ট সময়। কিন্তু সময় কি আছে তাঁর হাতে? ফেসবুক ব্যবহারকারীরা কি মুখ ফিরিয়ে নেবে এ সাইট থেকে? জাকারবার্গ অবশ্য এমন কোনো আশঙ্কার ছবি দেখছেন না। তিনি বলেছেন, ফেসবুক থেকে ব্যবহারকারী সরে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত পাননি। গ্রোথ রেট ইতিবাচক। তবে, তথ্য বেহাত হওয়া নিয়ে বেশ চাপেই আছেন। ফেসবুক থেকে তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ফেসবুকের অনেক নেতিবাচক দিক ও ত্রুটি সামনে আসতে শুরু করেছে। এসবের জবাবে ২ এপ্রিল নিউজ সাইট ভক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাকারবার্গ বলেছেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার যেসব বিষয় সামনে আসছে তা দূর করতে কয়েক বছর সময় লাগবে।
এদিকে, ফেসবুকের ব্যবসার মডেল বা পদ্ধতির সমালোচনার জবাব দেন জাকারবার্গ। গত সপ্তাহে ফেসবুকের ব্যবসা পদ্ধতির সমালোচনা করেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক।
জাকারবার্গ বলেছেন, ফেসবুকের অন্যতম একটি সমস্যা বলে যাকে মনে করা হচ্ছে তা ‘আদর্শগত’। মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনার জন্য ইতিবাচকভাবে কাজ করেছে ফেসবুক। তবে ফেসবুক ব্যবহারের নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে খুব বেশি সময় দেয়নি ফেসবুক বা এ নিয়ে খুব বেশি ভাবেনি। এখন মানুষ ফেসবুক টুলটি ব্যবহারের পর বেশ কিছু নেতিবাচক দিক সামনে আনছেন।
জাকারবার্গ বলেন, ‘আমরা এ সমস্যার সমাধান করব। তবে তা কয়েক বছর লাগবে। আমার ইচ্ছা হয়, সব সমস্যা যদি তিন মাস বা ছয় মাসে শেষ করে ফেলতে পারতাম তাহলে ভালো হতো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এ সমস্যা সমাধানে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হবে।’
এদিকে, টিম কুকের মন্তব্যে বেশ চটেছেন জাকারবার্গ। জাকারবার্গের সমালোচনায় টিম কুক বলেছেন, মানুষের দেওয়া তথ্য থেকে অর্থ উপার্জনের যে ব্যবসা পদ্ধতি নিয়ে ফেসবুক কাজ করছে তার জন্যই সমস্যায় পড়েছে ফেসবুক।
ভক্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিম কুকের মন্তব্যের পাল্টা সমালোচনা করেন মার্ক জাকারবার্গ। বলেন, ‘যে গ্রাহক অর্থ পরিশোধ করে না তাঁর প্রতি আমরা যত্নশীল হই না-আমার মনে হয় এমন যুক্তির সঙ্গে সত্যের কোনো মিল নেই। আপনি যদি এমন কোনো সেবা দিতে চান যা পৃথিবীর সবাইকে যুক্ত করে, তবে অনেক মানুষ পাবেন যাদের সে সেবার জন্য মূল্য পরিশোধের সামর্থ্য নেই। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন-সমর্থিত ব্যবসায়িক মডেল একমাত্র যুক্তিসম্মত মডেল, যা এ ধরনের ব্যবসা সমর্থন করতে পারে।’
২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে ফেসবুকের তথ্য নিয়ে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। কেমব্রিজ অ্যানালাইটিকা নামের একটি নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফেসবুক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। তথ্য বেহাত হওয়া ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগে জাকারবার্গের সমালোচনা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে জাকারবার্গকে পরীক্ষার মুখে পড়তে হচ্ছে।