মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। এরপর মেলবোর্নের একটি ফাস্ট ফুড চেইন শপে কাজ শুরু করেন। এরপর কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলেন ‘ডেপুটি’ নামে হিসাব রক্ষণাবেক্ষণকারী একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান। ঘুরে যায় তার ভাগ্যের চাকা। আজ তিনি সেই দেশটির শীর্ষ তরুণ ধনীদের একজন। ৩৮ বছর বয়সী ওই তরুণের নাম আশিক আহমেদ। তিনি বর্তমানে ‘ডেপুটি’র প্রধান নির্বাহী (সিও)।
বৃহস্পতিবার ব্যবসা ও অর্থবিষয়ক দৈনিক ‘অস্ট্রেলিয়ান ফিন্যান্সিয়াল রিভিউ’ দেশটির শীর্ষ তরুণ ধনীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। ১০৩ জনের এই তালিকায় আশিকের অবস্থান ২৫ নম্বরে। তার সম্পদের পরিমাণ ১৪৮ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ২৫০ কোটি টাকারও বেশি।
অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম এসবিএস নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আশিক তার সফটওয়্যার তৈরির পেছনের গল্পটি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ঘণ্টাভিত্তিক বেতনে কাজ করতাম। সে সময় আমি খেয়াল করেছি, যারা এভাবে কাজ করেন, হিসাব রাখার ক্ষেত্রে তাদের বেশ কিছু জটিলতায় পড়তে হয়। মালিকপক্ষের যারা কাজের হিসাব রাখেন, তাদেরও বেশ সমস্যার মুখে পড়তে হয়। আমরা ভাবতে থাকি, এ সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায়। তখন গণিত, বিজ্ঞান ও কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জের সমন্বয়ে সমস্যা সমাধানের একটি গাণিতিক উপায় আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। আমরা শেষ পর্যন্ত ডেপুটি নামের এই সফটওয়্যার তৈরি করতে সক্ষম হই।’
২০০৮ সালে সফটওয়্যারটি তৈরির পর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘ডেপুটি’ এমন একটি সফটওয়্যার, যা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের রোস্টার (কাজের সূচি) তৈরি এবং বেতন প্রদানের হিসাবের রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত সহজ করে দেয়। বর্তমানে এক লাখ ৮৪ হাজার প্রতিষ্ঠান ‘ডেপুটি’ সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। এদের মধ্যে নাসা ও কান্টাসের (অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বড় এয়ারলাইন্স) নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শীর্ষ তরুণ ধনীর তালিকায় স্থান পাওয়ার পর আশিক বেশ উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমার জন্য দারুণ একটি ব্যাপার। তবে শুধু অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে আমি কখনোই কাজ করিনি, করবও না; বরং শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল সমস্যার সমাধান করা।’